রপ্তানি আয় ২০২১ সালে ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যাবে : বাণিজ্যমন্ত্রী

ঢাকা, ১৮ জানুয়ারি, ২০১৭ : বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, চলমান রপ্তানি বৃদ্ধির হার অব্যাহত থাকলে ২০২১ সালে রপ্তানি ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। তিনি বলেন, ‘১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার যখন দেশ পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেছিল তখন দেশের রপ্তানি ছিল ৩ দশমিক ০৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং দায়িত্ব ছেড়ে দেয়ার সময় ছিল ৬ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এবারে দায়িত্ব গ্রহণের সময় রপ্তানি আয় ছিল ১৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, গত অর্থ বছরে রপ্তানি আয় হয়েছে ৩৪ দশমিক ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।’

মন্ত্রী আজ বসুন্ধরা ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে চারদিনব্যাপী বাংলাদেশ গার্মেন্টস্ এক্সেসরিজ এন্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স এন্ড এক্সেপোর্টাস এসোসিয়েশন (বিজিএপিএমইএ) আয়োজিত ‘গার্মেন্টেক-২০১৭’-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করছিলেন।মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি খাত তৈরী পোশাক। এ খাত থেকে মোট রপ্তানির প্রায় ৮২ ভাগ আসে। অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে বাংলাদেশের তৈরী পোশাক রপ্তানি এ অবস্থানে এসেছে।

তিনি বলেন, সামনে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। গার্মেন্টস এক্সেসরিজ এন্ড প্যাকেজিং-এর প্রায় ৩০টি পণ্যের প্রয়োজন হয়। তৈরী পোশাক সেক্টরের জন্য এগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একসময় এগুলো আমদানি করতে হতো। দেশের শিল্পের চাহিদা মিটিয়ে এগুলো বিদেশে রপ্তানি করা হচ্ছে। বর্তমানে এসেক্টরে রপ্তানীর পরিমান প্রায় ৬ দশমিক ১২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, ২০২১ সালে রপ্তানির পরিমান দাঁড়াবে ১৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।

তোফায়েল আহমেদ বলেন, ২০০৫ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তৈরী পোশাক রপ্তানিতে কোটা প্রথা বাতিল করা হয়। সে সময় অনেকেই মনে করেছিলেন বাংলাদেশের তৈরী পোশাক শিল্প আর এগুতে পারবে না। এ শিল্পে শিশু শ্রম বন্ধের চ্যালেঞ্জ এসেছিল। সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে বাংলাদেশের তৈরী পোশাক শিল্প দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে।তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশ ডিউটি ও কোটা ফ্রি সুবিধা পায় না, ১৬ শতাংশ শুল্ক দিয়ে রপ্তানি করে। এখন একক দেশ হিসেবে বাংলাদেশের তৈরী পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। গত বছর সেখানে রপ্তানি হয়েছে ৬ দশমিক ২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের তৈরী পোশাক।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা মোতাবেক রপ্তানি পণ্যের সংখ্যা বৃদ্ধি এবং বাজার সম্প্রসারণে সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সরকার আইটি, ঔষধ, ফার্নিচার, জাহাজ নির্মাণ, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য এবং কৃষিজাত পণ্য রপ্তানিতে অধিক গুরুত্ব দিচ্ছে। বর্তমানে কৃষিপণ্য রপ্তানিতে ২০ শতাংশ, চামড়াজাত পণ্যে ১৫ শতাংশ, জাহাজ রপ্তানিতে ১০ শতাংশ, ফার্নিচার রপ্তানিতে ১৫ শতাংশ নগদ আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। ফলে রপ্তানি দ্রুত বাড়ছে। মন্ত্রী বলেন, পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা সফল ভাবে বাস্তবায়িত হলে দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৮ ভাগ হবে। চলতি বছর শেষে প্রবৃদ্ধি হবে ৭ দশমিক ৫ ভাগ। ২০০৬ সালে দেশে অতিদরিদ্র মানুষ ছিল ২৪ দশমিক ২ শতাংশ, ২০১৬ সালে তা কমে এসেছে ১২ দশমিক ৯ শতাংশে। ২০৩০ সালে তা ৩ শতাংশের নীচে নেমে আসবে।

অষ্টমবারের মতো আয়োজিত এ মেলায় ২৪টি দেশের ৪০০টি প্রতিষ্ঠানের প্রায় ৮শ’ স্টল রয়েছে। প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে সন্ধা ৭টা পর্যন্ত এ মেলা দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।বিজিএপিএমইএ-এর প্রেসিডেন্ট মো. আব্দুল কাদের খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক, এফবিসিসিআই-এর প্রথম সহ-সভাপতি মো. শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, বিজিএমই-এর প্রেসিডেন্ট মো. সিদ্দিকুর রহমান, বিইডিএস-এর সিনিয়র রিসার্স ফেলো ড. নাজনিন আহমেদ ও ভারতের এ.এস.কে ট্রেড এন্ড এক্সিবিশনস প্রা. লি.-এর পরিচালক নন্দ গোপাল কে।

সুত্র: বাসস