রাউধার লাশ উত্তোলন

পুনঃময়নাতদন্ত করতে রাজশাহী ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের ছাত্রী মালদ্বীপের মডেল রাউধা আথিফের লাশ কবর থেকে তোলা হয়েছে।

সোমবার ২৪ এপ্রিল সকাল সাড়ে ৯টার দিকে রাজশাহী মহানগরীর হেতেমখাঁ কবরস্থান থেকে রাউধার লাশ তোলা হয়।

এর আগে সকাল ৯টার দিকে পুলিশ ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডির) কর্মকর্তারা কবরস্থানে যান। সিআইডি কর্মকর্তাদের মধ্যে অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার কাজী মোহাম্মদ শফি ইকবাল ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক আসমাউল হক উপস্থিত ছিলেন।

জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ডা. রক্তিম চৌধুরীর উপস্থিতিতে লাশ কবর থেকে তোলা হয়। পরে লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করার পর বেলা ১১টার দিকে লাশ রাজশাহী মেডিকেল কলেজের (রামেক) মর্গে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে লাশের দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত শেষে আজই দাফন করা হবে বলে জানিয়েছেন সিআইডির কর্মকর্তারা।

লাশ তোলার সময় কবরস্থানে রাউধার বাবা ডা. মোহাম্মদ আথিফও উপস্থিত ছিলেন।

সিআইডির অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার কাজী মোহাম্মদ শফি ইকবাল বলেন, যেহেতু রাওধার বাবা হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলাটি সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তাই পুনঃময়নাতদন্তের জন্য রাওধার লাশ উত্তোলন করা হয়েছে।লাশ উত্তোলনের পর সুরতহাল রিপোর্ট করেন সিআইডি। পরে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রক্তিম চৌধুরী বলেন, দাফনের ২৩ দিন পর রাওধার অর্ধগলিত লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। লাশের চোখ ও নাক নষ্ট হয়ে গেছে। তবে চামড়া পুরোটাই নষ্ট হয়ে যায়নি। গলায় কিছু চিহ্ন ল্য করা গেছে।

প্রসঙ্গত, গত ২৯ মার্চ রাজশাহীর নওদাপাড়ায় ইসলামি মেডিকেল কলেজের ছাত্রী হোস্টেল থেকে রাউধার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। রাউধা এ কলেজের এমবিবিএস দ্বিতীয় বর্ষের শিার্থী ছিলেন। নীলনয়না রাউধা ছিলেন মালদ্বীপের একজন উঠতি মডেল। মাত্র একুশ বছরের রাউধার ছিল আন্তর্জাতিক খ্যাতি।

রাউধার লাশ উদ্ধারের দিন কলেজ কর্তৃপ পুলিশকে জানিয়েছিল, তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। এ ঘটনায় ওই দিনই কলেজ কর্তৃপ বাদী হয়ে নগরীর শাহমখদুম থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করে। এরপর রামেকের মর্গেই রাউধার লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়। ময়নাতদন্তে তিন সদস্যর একটি মেডিকেল বোর্ডও গঠন করা হয়েছিল।

বোর্ডের তিন সদস্যর দু’জনই ছিলেন ইসলামী ব্যাংক মেডিকেল কলেজের শিক। ময়নাতদন্তের পরদিনই তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়, রাউধা আত্মহত্যা করেছেন। পরে মালদ্বীপের রাষ্ট্রদূত ও পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতে গত ১ এপ্রিল রাউধার লাশ দাফন করা হয়। কিন্তু পরিবারের প থেকে অভিযোগ তোলা হয়, রাউধাকে পরিকল্পিতভাবে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে।
হত্যা মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, রাউধাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। এ মামলায় রাউধার সহপাঠী সিরাত পারভীন মাহমুদকে (২১) একমাত্র আসামি করা হয়েছে। সিরাতের বাড়ি ভারতের কাশ্মিরে। সিরাতের বিরুদ্ধে মামলা হলেও এখন পর্যন্ত তাকে গ্রেফতার করা হয়নি। সিআইডি বলছে, হত্যার প্রমাণ না মিললে গ্রেফতার করা হবে না সিরাতকে। তবে এরই মধ্যে তার পাসপোর্ট অকার্যকর করে দেওয়া হয়েছে। নজরদারির ভেতরেও রাখা হয়েছে তাকে।

রাউধার মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা হত্যা মামলাটি তদন্ত করছিলেন শাহমখদুম থানার পরিদর্শক আনোয়ার আলী তুহীন। আর অপমৃত্যুর মামলাটি তদন্ত করছিলেন রাজশাহী মহানগর ডিবি পুলিশের পরিদর্শক রাশিদুল ইসলাম। রাউধার মৃত্যুর কারণ উৎঘাটনে তার ক থেকে জব্দ করা ল্যাপটপ ও মোবাইলের ফরেনসিক পরীার জন্য সেগুলো সিআইডির পরীাগারে পাঠিয়েছেন রাশিদুল ইসলাম।

আজকেরবাজার: আরআর/ ২৪ এপ্রিল ২০১৭