রাখাইনে শান্তিরক্ষী মোতায়েনের আহবান বি. চৌধুরীর

রাখাইন প্রদেশকে নিরপেক্ষ এলাকা ঘোষণা করে অবিলম্বে সেখানে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনের আহবান জানিয়েছেন বিকল্পধারা বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট ও সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক এ.কিউ.এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী।

১১ সেপ্টেম্বর সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বি চৌধুরী বলেন, মায়ানমারের রাখাইন প্রদেশে শিশু, নারী, বৃদ্ধা হত্যাসহ অসংখ্য নারীর ইজ্জত লুণ্ঠন এবং লাখ লাখ মানুষের বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে দেয়ার ঘটনা গত দুই সপ্তাহ ধরে চলছে। এই নির্যাতিত রোহিঙ্গা মুসলমানরা প্রাণভয়ে বাংলাদেশের দিকে ছুটে আসছে, তাদের সমস্যার সমাধান করা বাংলাদেশসহ বিশ্বের সব বিবেকবান দেশ ও মানুষের সামাজিক ও রাজনৈতিক দায়িত্ব। কিন্তু দুঃখের বিষয় বিশ্ববিবেক এখনো এই লাঞ্ছিত, দুর্গ্ত মানুষগুলোর পক্ষে যেভাবে জেগে ওঠার কথা সেভাবে জেগে উঠেনি।

সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বলেন, শান্তির জন্য নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত অং সাং সুচি মনে হয় তার বিবেককে ঘুম পাড়িয়ে রেখেছেন। না হলে তিনি কেমন করে বলেন, রোহিঙ্গারা নিজেরাই নিজেদের ঘরে আগুন দিয়েছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে সু চি বললেন, রোহিঙ্গারা সন্ত্রাসী এই জন্যই সামরিক বাহিনীকে সু চি সরকার রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছে। অথচ বাস্তবতা হচ্ছে, পৃথিবীর কোনো দেশেই, কোনো জায়গাতেই একজন রোহিঙ্গা মুসলিম সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়েছেন, এমন কোনো প্রমাণ কেউ দেখাতে পারবে না।

বিকল্পধারার প্রেসিডেন্ট বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি সন্ত্রাসী সেনাবাহিনীর হাত থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য নিশঙ্কচিত্তে প্রতিবেশী দেশ ভারতে আশ্রয় গ্রহণ করেছিলাম। ভারতও সারা পৃথিবীর সাহায্য গ্রহণ করেছে এবং পুরো নয় মাস আমাদের আশ্রয়, খাদ্য, ওষুধ দিয়েছে। অথচ আজকে আমরা হাজার হজার ধর্ষিতা মা-বোনসহ মায়ানমার বাহিনীর হাতে অমানবিকভাবে নির্যা্তিত ক্ষুধার্ত্, বস্ত্রহীন এবং রোগাক্রান্ত এই মানুষগুলোকে আশ্রয় দিতে কুণ্ঠাবোধ করছি। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ভারত যা পেরেছিল, আমরা তা কেন পারবো না।

বি. চৌধুরী অভিযোগ করে বলেন, জাতিসংঘ থেকে প্রতিবাদের ভাষা শোনা যাচ্ছে, সামান্য সাহায্যের আভাস দেয়া হচ্ছে। কিন্তু সমস্ত মুসলিম বিশ্বসহ সারা বিশ্বের কাছে রোহিঙ্গা মুসলমানরা অনেক বেশি সাহায্য-সহযোগিতা আশা করেছিল।

বি চৌধুরী বলেন, আমরা আশা করবো, সারা বিশ্ববিবেকের কাছে জাতিসংঘ রোহিঙ্গাদের রক্ষার জন্য দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। জাতিসংঘ দ্রুত নির্যাতিত মানুষগুলোর জান-মাল, ইজ্জত রক্ষার জন্য শান্তিরক্ষী বাহিনী প্রেরণ এবং রাখাইন প্রদেশকে নিরপেক্ষ এলাকা ঘোষণা করবে।

আজকের বাজার : এলকে/এলকে ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৭