রাজধানীতে ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন ফেয়ার শুরু

ভ্যাট নিবন্ধন সংখ্যা বাড়াতে আজ মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন ফেয়ার। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) আয়োজিত এ ফেয়ার চলবে আগামী ২৩ মে পর্যন্ত।

সপ্তাহব্যাপী ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন ফেয়ার আয়োজনের জন্য ইতোমধ্যে সব কমিশনারের কাছে এনবিআরের প্রথম সচিব (ভ্যাট) ও ভ্যাট অনলাইনের সহকারী প্রকল্প পরিচালক সৈয়দ মুশফিকুর রহমানের সই করা চিঠি পাঠানো হয়েছে।

ওই চিঠিতে ভ্যাট কমিশনারেট ও ভ্যাট অফিস ১৬ মে থেকে ২৩ মে পর্যন্ত নির্দিষ্ট তারিখে ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন ফেয়ার আয়োজনের কথা বলা হয়েছে। এতে সর্বোচ্চ সংখ্যক করদাতা ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানকে নিবন্ধনের আওতায় আনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

নির্দেশনায় ১৬ মে থেকে ১৮ মে ঢাকার চারটি কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট (পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর, দক্ষিণ) ও রংপুর ভ্যাট কমিশনারেটে মেলার আয়োজন করতে বলা হয়েছে। ১৮ মে থেকে ২০ মে পর্যন্ত রাজশাহী, যশোর, খুলনা এবং ২১ মে থেকে ২৩ মে পর্যন্ত চট্টগ্রাম, কুমিলা, সিলেট কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট এ মেলার আয়োজন করা হবে।

নির্দেশনা পাওয়ার পরই মেলার আয়োজন সফল করতে কাজ শুরু করে বিভিন্ন কমিশনারেট। ইতোমধ্যে মাইকিং, বিলবোর্ড, মার্কেট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে।

ভ্যাট নিবন্ধন মেলায় রেজিস্ট্রেশনের জন্য ই-টিআইএন নম্বর বা সনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র, ব্যাংক হিসাব নম্বর, লিমিটেড কোম্পানির ক্ষেত্রে ই-কর্পোরেশন নম্বর ও পরিচালক বা অংশীদার বা স্বত্ত্বাধিকারীর পদবী, শেয়ার এর কাগজপত্র নিতে হবে ব্যবসায়ীদের।

এছাড়া নিবন্ধনের সময় বার্ষিক টার্নওভারের পরিমাণ, নিজস্ব ই-মেইল ও মোবাইল নম্বর সরবরাহের ঠিকানা, কেন্দ্রীয় নিবন্ধন বা শাখা নিবন্ধন বিষয়ক সিদ্ধান্ত, উৎস কর্তনকারী কি না, সম্পূরক শুল্ক আরোপযোগ্য পণ্য উৎপাদন করে কি না, ব্যবসায় ও অর্থনৈতিক কার্যক্রমের প্রকৃতির তথ্য দিতে হবে। মেলায় ৯ ডিজিটের নিবন্ধন নম্বর দেওয়া হবে।

ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন ফেয়ার আয়োজন প্রসঙ্গে ভ্যাট কমিশনারেটের (ঢাকা পূর্ব) একজন কর্মকর্তা জানান, ব্যবসায়ীদের ভ্যাট নিবন্ধনে আগ্রহী করা ও সচেতনতায় বাড়াতে মাইকিং, লিফলেট বিতরণসহ নানাভাবে প্রচারণা চালানো হয়েছে। এছাড়া ব্যবসায়ী সংগঠনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। ব্যবসায়ীরা হেল্প ডেস্ক থেকে নিবন্ধন নেওয়া শুরু করেছেন। নিবন্ধন মেলায় ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাবে বলে আশা করছি।

নিবন্ধন সংখ্যা বাড়াতে নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে সারাদেশের ভ্যাট কমিশনারেট ও ভ্যাট অফিস। ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন ফেয়ার ছাড়াও ভ্যাট নিবন্ধনে ব্যবসায়ীদের আগ্রহ বাড়ানো ও সচেতন করতে বাসে অস্থায়ীভাবে ‘ভ্যাট অনলাইন মোবাইল হেল্প ডেস্ক’ চালু করেছে এনবিআর। গত ১০ মে এর উদ্বোধন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

প্রাথমিকভাবে ঢাকায় ৪টি বাসে এ ভ্রাম্যমাণ হেল্প ডেস্ক চালু করা হয়েছে। এছাড়া ঢাকায় আরো ৩টি এসি ও চট্টগ্রাম ২টি বাসে এ ভ্রাম্যমাণ হেল্প ডেস্ক চালু করা হবে। প্রতিদিন সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বিভিন্ন স্পটে অবস্থান করবে ভ্যাট অনলাইন মোবাইল হেল্প ডেস্কের বাস। ব্যবসায়ীদের ভ্যাট রেজিস্ট্রেশনে সহযোগিতা করতে বাসে থাকবেন ভ্যাট কর্মকর্তারা।

অন্যদিকে ব্যবসায়ী ও জনগণের কাছে নতুন ভ্যাটের বার্তা সহজভাবে পৌঁছে দিতে ভ্যাট কমিশনারেট ছাড়াও সব আয়কর ও কাস্টমস হাউজে ‘ভ্যাট হেল্প ডেস্ক’ খোলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে সারাদেশে ভ্যাট হেল্প খোলা ও এতে সেবা দেওয়া শুরু হয়েছে।

এছাড়া ১২টি সার্ভিস সেন্টার থেকে অনলাইনে ভ্যাট ব্যবসায়ীদের সহায়তা করা হয়েছে। অনলাইনে ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন নিবন্ধনে ব্যবসায়ীরা কলসেন্টারের সহযোগিতা পাচ্ছেন।

এনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান বলেন, আমরা সবাইকে নিয়ে নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন করতে চাই। এ আইনের সেবা সবার দোরগোড়ায় পৌঁছাতে মাঠ পর্যায়ে সব আয়কর, কাস্টমস হাউজ, ভ্যাট কমিশনারেট, ভ্যাট ও কাস্টমস প্রশিক্ষণ একাডেমিতে ভ্যাট হেল্প ডেস্ক স্থাপন করা হয়েছে। ব্যবসায়ীরা এতে সাড়া দিচ্ছেন। সচেতনতা বাড়াতে ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন ফেয়ারের আয়োজন করেছি।

ভ্যাট অনলাইন প্রকল্পের উপ-পরিচালক জাকির হোসেন বলেন, গতকাল সোমবার বিকেল পর্যন্ত ১১ হাজার ১০৪ জন ব্যবসায়ী করদাতা ভ্যাট নিবন্ধন করেছেন। এর মধ্যে ৮ হাজার ৯০০ জনই নতুন। প্রতিদিনই এ সংখ্যা বাড়ছে।

আজকের বাজার:এলকে/ এলকে/১৬ মে ২০১৭