রাজশাহীর জঙ্গি আস্তানা থেকে বোমা-অস্ত্র উদ্ধার

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার মাটিকাটা ইউনিয়নের হাবাসপুর মাছমারা বেনীপুর গ্রামের জঙ্গি আস্তানা থেকে বোমা, অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।

শুক্রবার ১২ মে সকালে আস্তানায় তল্লাশি চালিয়ে ১১টি বোমা, একটি পিস্তল ও দুটি ম্যাগাজিন পাওয়া যায় বলে জানান গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হিফজুর আলম মুন্সি। এর আগে সকাল ৯টার দিকে জঙ্গি আস্তানায় বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল প্রবেশ করে। ওই আস্তানায় প্রবেশের আগে মাইকিংয়ের মাধ্যমে আশপাশ থেকে উৎসুক জনতাকে সরিয়ে দেওয়া হয়। ওই বাড়ির এক বর্গ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে ১৪৪ ধারা জারি থাকায় সবাইকে নিজ নিজ বাড়িতে অবস্থান করতে অনুরোধ করা হয়েছে।

আজ সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে ওই বাড়ির দিক কয়েকটি গুলির শব্দ পাওয়া যায়। পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, সতর্কতা হিসেবে গুলি ছুড়তে ছুড়তে ভেতরে পুলিশ প্রবেশ করেছে বলেই গুলির শব্দ হয়েছে। পুলিশ সুপার মোয়াজ্জেম হোসেন ভূইয়া জানিয়েছেন, ওই বাড়ির ভেতরে বিস্ফোরক থাকলে তা নিষ্ক্রিয় করা হবে। তারপর বাইরে পড়ে থাকা ৫ জঙ্গির মরদেহ সরানো হবে।

গোদাগাড়ী থানার ওসি হিফজুল আলম মুন্সি জানান, পুলিশ সদর দপ্তরের এলআইসি (লফুল ইন্টারসেপশন সেন্টার) থেকে তথ্য পেয়ে গত বুধবার রাত ৩টার দিকে থানা পুলিশ সদস্যরা ওই বাড়ি ঘিরে ফেলেন। সেখানে ৬ জন জঙ্গি থাকতে পারে বলে তথ্য ছিল।

গতকাল বৃহস্পতিবার, ১১ মে সকালে ওই বাড়ি থেকে বের হয়ে আসার জন্য হ্যান্ড মাইকে জঙ্গিদের আহ্বান জানানো হয়। জবাবে বাড়ি থেকে দুই রাউন্ড গুলির শব্দ শোনা যায়। এরপর পুলিশ সেখানে অভিযানের প্রস্তুতি নেয়। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ওই বাড়িতে পানি ছিটানো শুরু করলে এক শিশুকে কোলে নিয়ে আরেক বালককে বেরিয়ে আসতে দেখা যায়।

কিছুক্ষণ পর ওই বাড়ি থেকে দুই নারীসহ কয়েকজন বেরিয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীদের ওপর ধারালো অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। তাদের হামলায় সাত পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের এক সদস্য আহত হন। পরে হাসপাতালে মারা যান ফায়ার সার্ভিসের ফায়ারম্যান আবদুল মতিন।

পুলিশ জানিয়েছে, ওই হামলার পরই বিস্ফোরণ ঘটিয়ে জঙ্গিরা আত্মঘাতী হয়।

বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে ব্রিফিংয়ে রাজশাহী রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআআজি মাসুদুর রহমান ভুইয়া জানান, বাড়ির ভেতর আর কেউ নেই বলে ধারণা করা হচ্ছে। নিহতরা জেএমবির সদস্য এবং সবাই আত্মঘাতী হয়েছে। আলোর স্বল্পতার কারণে ‘অপারেশন সান ডেভিল’ রাতে স্থগিত থাকছে। সকালে বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দল এলে আবারও অভিযান শুরু হবে।

পুলিশের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, নিহতরা হলো- ওই বাড়ির মালিক সাজ্জাদ হোসেন, তার স্ত্রী বেলী, তাদের ছেলে আলামিন, মেয়ে কারিমা এবং চাঁপাইনবাবগঞ্জের দেবীপুর গ্রামের আশরাফুল।