রাজশাহীর সুবিধাবঞ্চিত নারীদের স্বনির্ভর করছে বুটিক হাউস

মহানগরীর সুবিধাবঞ্চিত ও দুস্থ নারীরা বুটিক হাউস প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে স্বাবলম্বী হয়ে সমাজে নানামুখী অবদান রাখছে।

তারা সরকারি প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহযোগিতায় প্রতিষ্ঠিত হয়ে তাদের বুটিক হাউস ও ব্যবসা সফলভাবে পরিচালনা করছেন।

অংগনা মহিলা সমিতির পরিচালক ইফ্ফাত আরা বলেন, ‘আমরা অংগনা বুটিক ও ফ্যাশন নামে এক ফ্যাশন হাউস শুরু করেছি। সেখানে প্রায় একশ’ নারী কর্মরত রয়েছেন।’

একইভাবে দাউদপুর মহিলা কল্যাণ সমিতির শেফালী বুটিক ও মোহনা মহিলা কল্যাণ সমিতির মোহনা বুটিকে প্রায় ১৭৫ জন নারী কর্মরত রয়েছেন।

দাশমারি দুস্থ নারী কল্যাণ সমিতির সভাপতি আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘আমরা প্রায় ৫০ জন নারীকে তাদের জীবিকার জন্য দক্ষতা উন্নয়নে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে গড়ে তুলেছি।’

প্রশিক্ষণ শেষে তারা তাদের নিজ নিজ এলাকায় ব্লক, বুটিক ও এমব্রয়ডারির কাজ করছেন এবং অনেকে তাদের দীর্ঘদিনের অর্থনৈতিক দুরাবস্থা থেকে মুক্তি লাভ করেছেন।

আনোয়ারা বেগম বাসসকে বলেন, প্রতিষ্ঠিত বুটিক হাউসগুলো জেলা মহিলা বিষয়ক কার্যালয়ের সহযোগিতায় পরিচালিত হচ্ছে।

অফিসটি সুবিধাবঞ্চিত ও অবহেলিত বিশেষ করে তালাকপ্রাপ্তা, বিধবা ও অনগ্রসর মহিলাদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করতে ‘জীবিকা নির্বাহের জন্য নারী দক্ষতাভিত্তিক প্রশিক্ষণ’ শিরোনামে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।

প্রকল্পের আওতায় বাছাইকৃত নারীদের সেলাই, ব্লক-বাটিক, এমব্রয়ডারি, সৌন্দর্য্য বিষয়ক, খাবার প্রক্রিয়াকরণ ও মোবাইল ফোন সার্ভিসিংসহ নানা বিষয়ে তিন মাসের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। প্রশিক্ষণ শেষে তাদের আর্থিক ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় সহযোগিতাও দেয়া হয়।

‘ধরমপুর বাজেকাজলার রাজিয়া সুলতানা (২৫) শপিং ব্যাগ তৈরি ও বিক্রি করে প্রতিদিন প্রায় ৪০০-৫০০ টাকা উপার্জন করছেন।’ স্থানীয় একজন নেতা একথা জানান।

হাতিমখা এলাকার রুস্তম আলীর স্ত্রী রহিমা (৩০) বাসসকে জানান, তিনি দর্জি কাজে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। বর্তামনে তিনি প্রতিদিন ৫০০-৬০০ টাকা উপার্জন করছেন এবং তার চার সদস্যের পরিবার নিয়ে স্বাচ্ছন্দে জীবনযাপন করছেন।

জেলা নারী বিষয়ক কর্মকর্তা শাহনাজ বেগম বলেন, প্রকল্পটির আওতায় দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় সামাজিকভাবে অনগ্রসর নারীদের সম্পৃক্ত করছে এবং উন্নয়নের অংশ হিসেবে সুবিধাভোগী
নারীরা আত্ম-নির্ভরশীল হয়ে উঠছে।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের স্থানীয় শাখার সভাপতি কল্পনা রায় বলেন, অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়নে সমাজের নারীদের দক্ষতা উন্নয়ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

দরিদ্র নারীদের উপার্জন বাড়াতে ও তাদের সুরক্ষায় কর্মক্ষেত্র তৈরির মাধ্যমে সহযোগিতার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।

সুত্র: বাসস