রোহিঙ্গা ইস্যুতে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিলেন সু চি

আজকের বাজার ডেস্ক
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার প্রশ্নে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছেন দেশটির রাষ্ট্রীয় পরামর্শক অং সান সু চি। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনা শুরু করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
সম্প্রতি জাতির উদ্দেশে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে সু চি এ ঘোষণা দেন। এ সময় তিনি জানান, রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় পরিপ্রেক্ষিত বিবেচনায় নিয়ে কাজ করবে।
সু চি বলেন, তার সরকার ‘বাংলাদেশে থাকা রোহিঙ্গাদের’ ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারে আলোচনা শুরু করেছে। তবে এ ব্যাপারে তিনি বিস্তারিত কিছু বলেননি। কিন্তু সরকারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, যারা ফিরবে, তাদের স্থায়ী প্রমাণ দিয়েই ফিরতে হবে। যদিও এ ধরনের প্রমাণপত্র খুব কম জনেরই আছে।কয়েক দশক ধরে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে নির্যাতনের শিকার হয়ে আসছে। গত ২৫ আগস্ট রাখাইনে নতুন করে রোহিঙ্গাদের ওপর হত্যাযজ্ঞ শুরু হলে এখন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। সীমান্ত পার হয়ে এখনো প্রতিদিন প্রায় দুই হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আসছে।
জাতিসংঘ এই হত্যাযজ্ঞকে ‘জাতিগত নিধন’ বলে আখ্যা দিয়েছে।
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশের কক্সবাজারের অস্থায়ী শিবিরে আশ্রয় নেওয়া লাখ লাখ রোহিঙ্গাকে কলেরার প্রাদুর্ভাব থেকে রক্ষা করতে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে। গত মঙ্গলবার শুরু হওয়া কর্মসূচির প্রথম দিনেই ৮৮ হাজার রোহিঙ্গাকে টিকা দেওয়া হয়। আগামী সাড়ে তিন সপ্তাহে সাড়ে ছয় লাখ রোহিঙ্গাকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
টিকাদানের দ্বিতীয় ধাপ আগামী নভেম্বরে শুরু হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যেখানে এক থেকে পাঁচ বছরের প্রায় আড়াই লাখ শিশুকে টিকা দেওয়া হবে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও), ইউনিসেফ এবং বেশ কয়েকটি এনজিওর সহযোগিতায় বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
মিয়ানমারের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা মনে করেন, রোহিঙ্গা মুসলিমরা বাংলাদেশ থেকে অবৈধভাবে মিয়ানমারে গিয়ে অবস্থান করছে। যদিও অনেক পরিবার জন্ম থেকেই মিয়ানমারের অবস্থান করছে। সু চি তাঁর বক্তব্যে দেশটির অন্যান্য নৃগোষ্ঠীর নাম উল্লেখ করলেও ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি তিনি উচ্চারণ করেননি।