রোহিঙ্গা গণহত্যা: আইসিজে-তে প্রথম দফার প্রতিবেদন দাখিল করেছে মিয়ানমার

মিয়ানমারের রাখাইনের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠির ওপর গণহত্যা, এ সম্পর্কিত কোন ধরনের উস্কানী ও তাদের ওপর নির্যাতন বন্ধ করা এবং গণহত্যা ও নির্যাতনের কোন আলামত নষ্ট না করার যে আদেশ জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক বিচার আদালত বা আইসিজে মিয়ানমারকে দিয়েছিল, তারই পরিপ্রেক্ষিতে প্রথম দফার প্রতিবেদন আইসিজে-তে অতিসম্প্রতি দাখিল করেছে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ। আন্তর্জাতিক এবং মিয়ানমারের গণমাধ্যম ওই দেশটির কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে এ খবর নিশ্চিত করেছে। রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপরে গণহত্যা, নির্যাতন ও সিমাহীন অত্যাচারের জন্য মিয়ানমারকে দায়ী করে অভিযোগ এনে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া মিয়ানমারের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালত -আইসিজেতে গতবছর নভেম্বরে মামলা দায়ের করে।খবর ভয়েস অপ আমেরিকার।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত ডিসেম্বরে তিন দিনের শুনানী শেষে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত বা আইসিজে মিয়ানমারকে কয়েকটি নির্দেশনাসহ একটি আদেশ দেয়। আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে এ বছরের ২৩ জানুয়ারি থেকে ওই আদেশ কার্যকর হয়। আইসিজে’র নির্দেশনা এবং আদেশে মিয়ানমারকে রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা, শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনসহ এ সম্পর্কিত বিষয়াবলী বন্ধ করা, ওই দেশটির সেনাবাহিনীসহ কোন পক্ষ থেকে ষড়যন্ত্র ও উস্কানী না দেয়ার নিশ্চয়তা বিধান করতে বলা হয়। আদেশ গণহত্যা ও নির্যাতনের সাক্ষ্য-প্রমাণ ধ্বংস না করার জন্যও বলা হয়। কয়েকদফায় আদেশের অগ্রগতি বাস্তবায়ন প্রতিবেদন আকারে জমা দেয়ার জন্য মিয়ানমারের প্রতি আইসিজে আদেশ দেয়। এরই প্রেক্ষাপটে মিয়ানমার এ সপ্তাহেই আইসিজেতে প্রথম দফার প্রতিবেদন জমা দেয়।

ঢাকায় কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কোন মন্তব্য করেননি। তবে ঢাকায় বিশেষজ্ঞগণ বলছেন, প্রতিবেদন জমা দিয়েছে সত্যি, কিন্তু বাস্তবে মিয়ানমার কার্যকর কোন ব্যবস্থাই নেয়নি। এ সম্পর্কে রোহিঙ্গা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. সি আর আবরার তার বিশ্লেষণে মনে করেন, এটি মিয়ানমারের দিক থেকে পুনরায় একটি কূট-কৌশল।
বিশেষজ্ঞগণ বলছেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন তরান্বিত করতে আইসিজের মামলার পাশাপাশি বাংলাদেশকে অন্যান্য পথগুলোও জরুরিভিত্তিতে গ্রহণ করতে হবে।