লোভ সংবরণ করতে পারলাম না : ফখরুল

আমি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে থাকার সময় আমাকে নিয়ে যেভাবে মনগড়া নিউজ করা হয়েছে, তাতে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার লোভ সংবরণ করতে পারলাম না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ফখরুল এসব কথা বলেন।

বিএনপির মহাসচিব হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর একটি পত্রিকায় ‘কে চালাবে বিএনপি’ শীর্ষক সংবাদ প্রকাশিত হয়। এর সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, এসব মনগড়া নিউজ জাতিকে বিভ্রান্ত করে। বিএনপি একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল, যেখানে প্রতিটি নেতাকর্মী সব সময় ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমি খুব উদ্বিগ্ন হয়েছি, যখন আমি হাসপাতালে ভর্তি, তখন আমাকে নিয়ে তৈরি করা হয়েছে মনগড়া নিউজ। এসবের ফলে শুধু একটা দল বা ব্যক্তি নয়, গোটা জাতির ক্ষতি হয়। তাই আমি আহ্বান জানাব, যাতে এমন কোনো সংবাদ প্রচার না হয়, যাতে দেশের মানুষ বিভ্রান্ত হয়।

তিনি বলেন, সাংবাদিক ও সংবাদপত্র বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশ করবে, যাতে দেশ ও জাতি উপকৃত হতে পারে। কিন্তু কারো বিরুদ্ধে মনগড়া তথ্য প্রচার করে তার ভাবমূর্তি নষ্ট করা কখনো বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা হতে পারে না।

মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের দলের সবাই একসঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছি। আগের চেয়ে অনেক বেশি ঐক্যবদ্ধ আছি আর সেটি সরকারের পছন্দ হচ্ছে না।

তিনি বলেন, আমরা চাই সত্যিকারের একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে। কিন্তু বর্তমানে যা চলছে, তাতে গণতন্ত্রের লেশমাত্র নেই। সে জন্য লড়াই করছেন খালেদা জিয়া। আমরা দেশে সত্যিকারের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চাই।

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, দুদক সরকারের ইচ্ছাপূরণে কাজ করছে। সরকার যেভাবে চায়, তারা সেভাবে কাজ করছে। এখন আমাদের দলের আট নেতার চরিত্রহ নন করতে তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে। তারা নাকি ১২৫ কোটি টাকা অবৈধ লেনদেন করেছেন? আমি বলব, দুদকের এ অভিযোগ মিথ্যা-বানোয়াট-মনগড়া।

মির্জা ফখরুল আরো বলেন, কিন্তু সরকারের যারা দুর্নীতির অভিযোগে সাজাপ্রাপ্ত হয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে তাঁরা কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেননি। যারা রাষ্ট্রের অর্থ পাচার করছে, ব্যাংক লুট করছে, শেয়ারবাজার ধ্বংস করেছে, তাদের বিষয়ে দুদক কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি। এমনকি যারা সাজাপ্রাপ্ত হয়েছেন, তারা এখনো মন্ত্রী পদে বহাল আছেন। এদের বিরুদ্ধে দুদক কোনো ব্যবস্থা নেয় না।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমার তো মনে হয় আওয়ামী লীগ দেশ চালাচ্ছে না। অন্য কেউ দেশ চালাচ্ছে। কারণ একটি রাজনৈতিক দল দেশ চালালে কখনো বিরোধী দলের সঙ্গে এমন আচরণ করে না; ভোটের অধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেয় না।

মির্জা ফখরুল বলেন, ২০ দল আগেও ছিল, এখনো আছে। আমরা ঐক্যবদ্ধ ছিলাম, আছি; কিন্তু জোট নিয়ে যেসব সংবাদ প্রচার হয়, তা তারা কোনো বক্তব্য দেননি। আমরা দলীয় ও জোটগতভাবে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি ও খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে আন্দোলন করছি।
দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান আমান উল্লাহ আমান, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানিসহ দলীয় নেতাকর্মীরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

এস/