শ্রীলঙ্কাকে ৯০ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ

সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কাকে ৯০ রানে হারিয়েছে বাংলাদেশ। ফলে তিন ম্যাচের এ সিরিজ জয় দিয়ে শুরু করলো মাশরাফি বিন মর্তুজার দল। শনিবার (২৫ মার্চ) ডাম্বুলার মাঠে বাংলাদেশের দেওয়া ৩২৪ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে ২৩৪ রানে অলআউট হয়েছে স্বাগতিকরা।

ইনিংসের শুরুতেই উইকেট হারিয়েছে শ্রীলঙ্কা। ইনিংসের তৃতীয় বলেই লঙ্কান ওপেনার দানুশকা গুনাথিলাকাকে আউট করেছেন বাংলাদেশের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। এই ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার আগেই ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে ফের ধাক্কা খেয়েছে স্বাগতিকরা। এবার বাংলাদেশকে সাফল্য এনে দিয়েছেন স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ। কুশাল মেন্ডিসকে শুভাগত হোমের ক্যাচ বানিয়েছেন তিনি।

এরপর একাদশতম ওভারে বাংলাদেশকে ফের উৎসবের উপলক্ষ্য এনে দিয়েছেন পেসার তাসকিন আহমেদ। লঙ্কান ওপেনার উপল থারাঙ্গাকে মাশরাফির ক্যাচ বানিয়েছেন তিনি। মাত্র ৩১ রানের মধ্য ৩ উইকেট তুলে নিয়ে শ্রীলঙ্কানদের ব্যাকফুটে ঠেলে দেয় বাংলাদেশের বোলাররা। এরপর গুনারত্নকে সাকিব ও চান্দিামালকে মিরাজ আউট করলে কোণাঠাসা হয়ে পড়ে লঙ্কানরা। তাদের দুরবস্থা আরো বাড়িয়ে দেন বাংলাদেশের কাটার মাস্টার মুস্তাফিজুর রহমান। মিলিন্দা শ্রীবর্ধনাকে বদলি ফিল্ডার শুভাগত হোমের তালুবন্দি করেন তিনি। এরপর পাথিরানা ও লাকমলকে ফেরান মাশরাফি ও মুস্তাফিজ। এ মুহূর্তে তাই ম্যাচ জয়ের স্বপ্নে ভাসছে বাংলাদেশ।

এ ম্যাচে আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ৮ম সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন তামিম ইকবাল। অন্যদিকে, ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ৩৩তম হাফসেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন সাকিব আল হাসান। এই দু’জনের ব্যাটে ভর করে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে বড় সংগ্রহ দাঁড় করিয়েছে বাংলাদেশ। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ সংগ্রহ করেছে ৩২৪ রান। আউট হওয়ার আগে তামিম একাই করেছেন ১২৭ রান।

এ ছাড়া সাকিব আল হাসানের ব্যাট থেকে এসেছে ৭২ (৭১ বলে) রান। সাব্বির রহমানও এদিন হাফসেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন। তিনি ৫৬ বলে করেছেন ৫৪ রান।

বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার মধ্যকার তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের প্রথমটি মাঠে গড়িয়েছে শনিবার (২৫ মার্চ)। রাঙ্গিরি ডাম্বুলা আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় শনিবার বেলা ৩টায় শুরু হয়েছে ম্যাচটি। টস হেরে আগে ব্যাটিং করছে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের ওপেনিং জুটিতে নামেন তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার। তাদের জুটি থেকে ২৯ রান আসে দলে। তবে এরপরই সৌম্য সুরাঙ্গা লাকমালের বলটি উইকেটরক্ষক দিনেশ চান্দিমালের হাতে দিয়ে সাজঘরে ফিরেন। আউট হওয়ার আগে তার সংগ্রহ ১৩ বলে ২টি চারের মারে ১০ রান।

সৌম্যর বিদায়ের পর দলের হাল ধরেন তামিম ও সাব্বির। তাদের জুটিতে ভর করেই দল শতরান পার করেছে বাংলাদেশ। এরই মাঝে সাব্বির হাফসেঞ্চুরি করেছেন। তবে ফিফটি করেই প্যাভিলিয়নের পথ ধরেছেন তিনি। ৫৬ বলে ১০টি চারের মারে ৫৪ রান করেন তিনি।

উইকেটে তামিমের সঙ্গে মুশফিকুর রহিম যোগ দেন। তবে তিনি মাত্র ১ রান সংগ্রহ করেই ফিরেছেন সাজঘরে। লক্ষণ সান্দাকানের বলটি সরাসরি উঠিয়ে দিলে তা সান্দাকানই তালুবন্দি করেন। মুশফিক আউট হলে ক্রিজে আসেন সাকিব। সাকিব ও তামিমের জুটিতে বেশ দ্রুতই রান তুলতে শুরু করে বাংলাদেশ। ৪৫.৫ ওভারে সাকিব যখন আউট হন তখন বাংলাদেশের সংগ্রহ ৪ উইকেট হারিয়ে ২৬৪ রান। সাকিব ৭১ বলে ৪টি বাউন্ডারি ও এক ছক্কায় ৭২ রান করেন। তিনি আউট হওয়ার পর ক্রিজে আসেন মোসাদ্দেক হোসেন।

ইনিংসের ৪৭.৫ ওভারে আউট হন তামিম। এর আগে ১৪২ বল খেলে ১৫টি বাউন্ডারি ও এক ছক্কায় ১২৭ রান সংগ্রহ করেন তিনি। ওয়ানডে ম্যাচে এটি তার অষ্টম সেঞ্চুরি। টেস্টেও বাংলাদেশের এই তারকা ব্যাটসম্যানের সেঞ্চুরির সংখ্যা ৮টি। তামিম আউট হওয়ার পর ক্রিজে আসে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৫ উইকেটে বাংলাদেশের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৩২৪ রান। মোসাদ্দেক ৯ বলে ২৪ রান করে অপরাজিত থাকেন। মাহমুদউল্লাহ অপরাজিত ছিলেন ৭ বলে ১৩ রান করে।

শ্রীলঙ্কার পক্ষে এদিন সফল বোলারটি ছিলেন পেসার সুরাঙ্গা লাকমল। ৮ ওভারে ৪৫ রান খরচায় ২ উইকেট নিয়েছেন তিনি।

বাংলাদেশের ওয়ানডে স্কোয়াড : মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, মেহেদী হাসান মিরাজ, তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, সাকিব আল-হাসান, মুশফিকুর রহিম, সাব্বির রহমান, তাসকিন আহমেদ ও মুস্তাফিজুর রহমান।

শ্রীলঙ্কার ১৫ সদস্যের ওয়ানডে স্কোয়াড : ধানুস্কা গুনাথিলাকা, আসেলা গুনারত্নে, দিনেশ চান্দিমাল, উপল থারাঙ্গা, কুশাল মেন্ডিস, মিলিন্দা সিরিওয়ার্দানে, সচিথ পাথিরানা, থিসেরা পেরেরা, সুরাঙ্গা লাকমাল, লক্ষণ সান্দাকান, লাহিরু কুমারা।