সক্ষমতা নিয়ে চাপের মুখে চট্টগ্রাম বন্দর

সক্ষমতা নিয়ে চাপের মুখে আছে চট্টগ্রাম বন্দর। চলতি বছরের গত জানুয়ারি থেকে জুলাই পযন্ত চট্টগ্রাম বন্দরে ১৪ লাখের বেশি রফতানি পণ্যভতি কন্টেইনার হ্যান্ডল করা হয়েছে। তার মধ্যে অফডকসমূহ বা প্রাইভেট আইসিডিসমূহ হ্যান্ডল করেছে ৯ লাখ ৭৫ হাজার রফতানি কন্টেইনার। বতমানে চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি রফতানির প্রবৃদ্ধি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০ থেকে ১২ শতাংশ। ফলে বন্দর যে চাপের মুখে পড়েছে, তা থেকে বের হয়ে আসতে আরো অন্তত ৫টি নতুন প্রাইভেট আইসিডি প্রয়োজন। তবে বে-টার্মিনাল দ্রুত বাস্তবায়িত হলে, চাপ হয়তো কিছুটা কমতে পারে। কিন্তু তাও বাস্তবায়িত হতে সময় লাগবে ৫/৭ বছর। পাশাপাশি জলপথে নাব্যতা ব্যাপক হ্রাস পাওয়ায় পানগাঁও সরকারি আইসিডি এবং আশেপাশের দু’টি প্রাইভেট আইসিডি কোনো ভূমিকাই রাখতে পারছে না। চট্টগ্রাম বন্দর সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সূত্র মতে, চট্টগ্রাম বন্দরের পরিসেবাগত সক্ষমতা দ্রুত হ্রাস, ইয়ার্ডে কন্টেইনারের স্থান সংকুলানের সংকট এবং কন্টেইনার জট মোকাবেলায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে নতুন প্রাইভেট আইসিডি স্থাপন জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ চট্টগ্রাম বন্দর এখন সক্ষমতা নিয়ে বেশ চাপের মুখে আছে। এ পরিস্থিতিতে চট্টগ্রামে অপারেশনে থাকা সবমোট ১৮টির মধ্যে ১৬টি প্রাইভেট আইসিডির উপর বতমানে ৩৭টি পণ্যের অফডকিং ন্যস্ত হয়েছে। উদ্ভুত পরিস্থিতি বিবেচনায় চট্টগ্রামে আরো ৩ বছর আগেই ৫টি প্রাইভেট আইসিডি চালু করা জরুরি ছিল।

সূত্র বলছে, চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি পণ্য ভতি কন্টেইনারের ২২ শতাংশ চট্টগ্রামে স্থাপিত প্রাইভেট আইসিডিসমূহ হ্যান্ডেল করছে। বাকি ৮৮ শতাংশ হচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর ইয়াডে। গত জুলাই মাসেই প্রাইভেট আইসিডিসমূহ বন্দর থেকে ২৯ হাজার আমদানি পণ্যভতি পণ্য অফডকে নিয়ে গেছে। প্রাইভেট আইসিডিগুলোতে অফডকিংয়ের পাশাপাশি সেখানে কাস্টমস আনুষ্ঠানিকতা সম্পাদন, রফতানি পণ্য ভতি কন্টেইনার প্রস্তুত করে সেগুলো চট্টগ্রাম বন্দরের হুক পয়েন্ট পযন্ত পৌঁছে দিচ্ছে। বতমানে চট্টগ্রাম বন্দর তার কন্টেইনার ধারণক্ষমতা সর্বোচ্চ ৩৬ হাজার টিইইউস পযন্ত বাড়িয়েছে। তারপরও বন্দরে এখনো রয়েছে ৩৭ হাজার টিইইউস কন্টেইনার। এ অবস্থায় নতুন প্রাইভেট আইসিডি খুবই জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সূত্র আরো জানায়, প্রাইভেট আইসিডি খাতে বতমানে বিনিয়োগের পরিমাণ সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু প্রাইভেট আইসিডিগুলো, তাদের বিনিয়োগ অনুসারে সন্তোষজনক আয় করতে পারছে না। তার উপর বতমানে চালু দু’টি আইসিডি যথাক্রমে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মেনসেন প্রাইভেট লিমিটেড এবং হাজী সাবের লিমিটেড নানা জটিলতায় ব্যবসা করতে পারছে না। হাজী সাবের আইসিডিটি কালুরঘাটে সড়ক প্রতিবন্ধকতা এবং মেনসেন বন্দর থেকে অতিরিক্ত দূরত্বজনিত সমস্যার শিকার।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরোয়াডাস এসোসিয়েশনের পরিচালক (বন্দর ও কাস্টমস বিষয়ক) খায়রুল আলম সুজন জানান, চট্টগ্রাম বন্দরের সক্ষমতা বলতে গেলে, এখন উত্তীণ হয়ে গেছে। তাই অফডকিংয়ের চাপ বাড়ছে। বতমানে ৩৭ ধরনের কন্টেইনার ভতি আমদানি পণ্য প্রাইভেট আইসিডিতে অফডক করতে হয়। কাজেই নতুন আইসিডি যেমন দরকার, তেমনি শটটাইম উদ্যোগ নিয়ে বন্দর কতৃপক্ষকে পুরনো ইকুইপমেন্টের জায়গায় নতুন আধুনিক ইকুইপমেন্ট বসাতে হবে। পাশাপাশি কন্টেইনার রাখার জায়গা বাড়াতে হবে।

আজকের বাজার: আরআর/ ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৭