সমাজ যত আধুনিক হচ্ছে, মানসিক বিকারগ্রস্ততা বাড়ছে

সমাজ যত আধুনিক হচ্ছে, মানসিক বিকারগ্রস্তের সংখ্যা তত বাড়ছে বলে মন্তব্য করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। তিনি বলেন, আজ আমরা কী দেখছি? মায়ের হাতে মেয়ে খুন হচ্ছে, ছেলের হাতে বাবা। ছাত্রের হাতে শিক্ষক খুন হবার ঘটনাও ঘটছে। এ ধরনের কাজ কোনো সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষ করতে পারে না। মানসিক বিকারগ্রস্ততার ফলেই এ ধরনের ঘটনা বেড়েই চলেছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনের সেমিনার কক্ষের শুক্রবার দুপুরে ‘আগ্রাসন ও সহিংসতার মনস্তত্ব’ শীর্ষক বিশেষ সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

বাংলাদেশ ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি সোসাইটি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগ যৌথভাবে সেমিনারটির আয়োজন করে।

মোহাম্মদ নাসিম মানসিক সুস্থতার বিষয়ে তার আগ্রহ প্রকাশ করে বলেন, মানসিক অস্থিরতার জন্য মানসিক অসুস্থতাই দায়ী। তারুণ্যের বিভ্রান্তি, বিপথগামিতার জন্য দায়ী মাদকের ব্যবহার এবং এর একমাত্র সমাধান কাউন্সিলিং। অভিভাবকদের সন্তানকে বেশি সময় দিতে হবে। এ সময় জেলা পর্যায়ে মানসিক স্বাস্থ্যসেবা বৃদ্ধি এবং মনোবিজ্ঞানী নিয়োগের দাবির বিষয়ে মন্ত্রী আশ্বস্ত করেন।

সভাপতির বক্তব্যে ঢাবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বিভিন্ন সামাজিক অস্থিরতার উদাহরণ উল্লেখ করে আগ্রাসন ও সহিংসতার মনস্তাত্বিক পরিচর্যার গুরুত্ব তুলে ধরেন। এ বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে মনোবিজ্ঞানীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।

মোটরসাইকেলের জন্য পুত্রের হাতে অগ্নিদদ্ধ হন পিতা, এটি মানসিক আগ্রাসী ও অসহনশীলতার প্রতিফলন বলে উল্লেখ করে উপাচার্য বলেন, এগুলো এক ধরনের সামাজিক অস্থিরতা। শারীরিক অসুস্থতা মানসিক অসুস্থতার চেয়ে অনেক বড়। নতুন প্রজন্মের ছেলে মেয়েদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতার ওপর নির্ভর করছে সামাজিক সুস্থতা। এই সামাজিক সুস্থতার জন্য অভিভাবকদের পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকদের এগিয়ে আসতে হবে। এ ধরনের সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি রয়েছে বলেও উপাচার্য উল্লেখ করেন।

সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব নাছিমা বেগম। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সাইকিয়াট্রিস্টস এবং নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল ডিসএবিলিটি প্রটেকশন ট্রাস্ট-এর সভাপতি অধ্যাপক মো. গোলাম রব্বানী। অনুষ্ঠানের শুরুতে স্বাগত বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মো. কামরুজ্জামান মজুমদার।

সেমিনারের মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন অধ্যাপক ড. মুহাম্মাদ মাহমুদুর রহমান। মূল বক্তব্যের ওপর আলোচনা করেন বাংলাদেশ মনোবিজ্ঞান সমিতির সাধারন সম্পাদক অধ্যাপক ড. মো. শামসুদ্দীন ইলিয়াস। আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ক্লিনিক্যাল সাইকোলজি সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক মো. জহির উদ্দিন।
(লেখাটি দ্যা রিপোর্ট২৪.কম থেকে নেয়া হয়েছে)