সরকার শিক্ষা খাতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে সার্বিক উন্নয়নে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতির পিতার শিক্ষা দর্শনের আলোকে সরকার শিক্ষা খাতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে এর সার্বিক উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
তিনি বলেন, ‘বিগত সাড়ে ১৪ বছরে আমাদের সরকারের গৃহীত বিভিন্ন সময়োপযোগী কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নের ফলে শিক্ষা খাতে প্রশংসনীয় সাফল্য অর্জিত হয়েছে। শিক্ষার হার ২০০৭ সালের ৪৬.৬৬ শতাংশ হতে বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে ৭৬.০৮ ভাগে উন্নীত হয়েছে। আমরা শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে ২০১০ শিক্ষাবর্ষ থেকে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করছি। বিনামূল্যে বই বিতরণের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের মেধাবৃত্তি, উপবৃত্তি প্রদান করা হচ্ছে। উচ্চশিক্ষার সুবিধা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে দেশে সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বহুলাংশে বাড়ানো হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামীকাল ‘আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস ২০২৩’ উপলক্ষ্যে এক বাণীতে আরো বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় বাংলাদেশেও ‘আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস ২০২৩’ পালন করা হচ্ছে জেনে তিনি আনন্দিত। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘পরিবর্তনশীল ও শান্তিপূর্ণ সমাজ গঠনে সাক্ষরতার প্রসার’ অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে বলেও  তিনি  মনে করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের সরকার শিক্ষার সুযোগ বঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে সাক্ষরজ্ঞান দান, জীবনব্যাপী শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টিকরণ এবং কারিগরি ও বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উক্ত জনগোষ্ঠীর জীবিকায়ন নিশ্চিত করতে ‘উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা আইন ২০১৪’ প্রণয়ন করেছে। ৮ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশু যারা আগে কখনও স্কুলে যায়নি বা স্কুল থেকে ঝরে পড়েছে এবং শিক্ষা থেকে বঞ্চিত ১৫ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সী নারী-পুরুষদের চাহিদা ভিত্তিক জীবন ও জীবিকায়ন-দক্ষতা অর্জন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নানাবিধ কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। ফলস্বরূপ একদিকে স্কুলে ছাত্র-ছাত্রী ভর্তির হার বৃদ্ধি পেয়েছে, শিক্ষাক্রম থেকে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পেয়েছে এবং প্রাথমিক পর্যায়ে শিক্ষা সমাপ্তির হারও বৃদ্ধি পাচ্ছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নির্ধারিত স্তর পর্যন্ত সকল ছাত্র-ছাত্রীকে অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক শিক্ষার অধিকার সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে সীমিত আর্থিক সামর্থ থাকা সত্ত্বেও তিনি ৩৬ হাজার ১৬৫টি স্কুল জাতীয়করণ করার মাধ্যমে শিক্ষাক্ষেত্রে যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। একইসঙ্গে, প্রথম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় নিরক্ষরতা দূরীকরণে কর্মকৌশল গ্রহণ করেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব দেশকে নিরক্ষরমুক্ত এবং বৃহৎ জনগোষ্ঠীকে জনসম্পদে রূপান্তরিত করতে চেয়েছিলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ভিত্তিক শিক্ষার গুরুত্ব বিবেচনা করে, বিশেষ করে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব মাথায় রেখে শিক্ষা ব্যবস্থাপনা এবং শিক্ষা কার্যক্রমে আইসিটি এবং ডিজিটাল প্রযুক্তির সুবিধা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। এছাড়াও সকল নিরক্ষরকে মৌলিক সাক্ষরতা জ্ঞান প্রদানের ক্ষেত্রে আইসিটি বেইজড জীবনব্যাপী শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন, সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় শতভাগ সাক্ষরতা অর্জন এবং শিক্ষার গুণগত মান ও অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষাব্যবস্থা নিশ্চিত করে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে জাতির পিতার স্বপ্নের উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ করা সম্ভব হবে। প্রধানমন্ত্রী ‘আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস ২০২৩’ উপলক্ষ্যে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন। (বাসস)