সাত গোলের নাটকীয় ম্যাচে শেষ পর্যন্ত পিএসজির জয়, নেইমারের লাল কার্ড

পিছিয়ে থেকেও শেষ পর্যন্ত লিগ ওয়ানে বর্দুর বিপক্ষে ৪-৩ গোলের নাটকীয় জয় তুলে নিয়েছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন প্যারিস সেইন্ট-জার্মেই। এই জয়ের মাধ্যমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডের কাছে পরাজয়ের পর আবারো জয়ের ধারায় ফিরলো প্যারিসের চ্যাম্পিয়নরা। উরুগুয়ের অভিজ্ঞ এ্যাটাকার এডিনসন কাভানি এই ম্যাচে পিএসজির হয়ে ক্যারিয়ারের ২০০তম গোল করেছেন। ম্যাচটিতে দুই গোল করেছেন ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার মারকুইনহোস। যদিও ম্যাচের একেবারে শেষ মুহূর্তে নেইমারের লাল কার্ড কিছুটা হলেও পিএসজির জয় উৎসবকে ফিকে করে দিয়েছে।

আগের সপ্তাহে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে শেষ ১৬’র প্রথম লেগের লড়াইয়ে বরুসিয়ার কাছে ২-১ গোলে পরাজিত হয়েছিল পিএসজি। ঐ ম্যাচের মতই কালও পিএসজির রক্ষনভাগের দূর্বলতা ছিল চোখে পড়ার মত। সেই সুযোগে পার্ক ডি প্রিন্সেসে ম্যাচের ১৮ মিনিটে দক্ষিণ কোরিয়ান হুয়াং উই-জো’র গোলে এগিয়ে গিয়েছিল বর্দু। কাভানি ও কিলিয়ান এমবাপ্পের মাঝে দুই অর্ধে মারকুইনহোসের দুই গোলে পিএসজি শেষ পর্যন্ত জয় নিয়েই মাঠ ছেড়েছে। যদিও ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার পাবলো ও রুবেন পারডোর গোলে বর্দু শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে গেছে।ইনজুরি টাইমে দ্বিতীয় হলুদ কার্ডের কারনে নেইমারের মাঠ ত্যাগের মধ্য দিয়ে সন্ধ্যাটি শেষ হয়েছে। বর্দুর ফেঞ্চ মিডফিল্ডার ইয়াসিনে আদলির সাথে বিরোধে লাল কার্ড দেখেন নেইমার। রক্ষনভাগের দূর্বলতার পাশাপাশি নেইমারের লাল কার্ড এখন কোচ থমাস টাচেলকে দু:শ্চিন্তায় ফেলেছে। যদিও তার দল মার্সেইর থেকে ১৩ পয়েন্ট এগিয়ে লিগ ওয়ান টেবিলের শীর্ষে রয়েছে। শনিবার নঁতের কাছে ৩-১ গোলে পরাজিত হয়ে পয়েন্ট হারিয়েছে মার্সেই।

নেইমারের লাল কার্ড প্রসঙ্গে টাচেল বলেছেন,‘সেও একজন মানুষ, ঐ মুহূর্তে সে রাগ নিয়ন্ত্রন করতে পারেনি। যে খেলোয়াড় তাকে ফাউল করেছিল তাকে হলুদ কার্ডও দেয়া হয়নি। সে কারনেই বিষয়টি নেইমার মেনে নিতে পারেনি। গত দুটি লিগ ম্যাচে আমরা সাত গোল দেখেছি এবং এটা মোটেই স্বাভাবিক নয়। আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে আনাটা সত্যিই কঠিন। কিন্তু স্বস্তির বিষয় হচ্ছে আমরা জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছি। এটাই আমাদের সামনে এগিয়ে নিয়ে যাবে।’ আগামী ১১ মার্চ ঘরের মাঠে ডর্টমুন্ডের বিপক্ষে ফিরতি পর্বে ম্যাচের আগে এই আত্মবিশ্বাসটাও জরুরী ছিল। মঙ্গলবার পরাজয়ের পর টাচেলকে নিয়ে সমালোচনাও কম হয়নি। বৃহস্পতিবার রাতে পুরো দলের কাভানি, এ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া ও মাউরো ইকার্দির জন্মদিনকে উদযাপনের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হবার বিষয়টি ভালভাবে নেননি টাচেল, পরবর্তীতে তিনি সেটা স্বীকার করেছেন।

গতকাল ঘরের মাঠে লিগ টেবিলের মাঝামাঝিতে অবস্থান করা বর্দুর বিপক্ষে ম্যাচের শুরুটা মোটেই ভাল হয়নি। ১৮ মিনিটে কর্ণার থেকে দলকে এগিয়ে দেন হুয়াং। লিগে এটি তার ষষ্ঠ গোল। ২৫ মিনিটে ডি মারিয়ার ক্রস থেকে কাভানির হেডে সমতা ফেরায় পিএসজি। এই গোলের মাধ্যমে পিএসজির হয়ে গোলের ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন এই উরুগুইয়ান তারকা। এরপর খুব কাছে থেকে তার শট পোস্টে লেগে ফেরত আসে। তবে প্রথমার্ধের স্টপেজ টাইমে ডি মারিয়ার ফ্রি-কিক থেকে পিএসজিকে এগিয়ে দেন মারকুইনহোস। তখনো বর্দুর সামনে সময় ছিল ম্যাচে সমতা ফেরানোর। আর সেই সুযোগ তারা পুরোপুরি কাজে লাগিয়েছে। মার্কো ভেরাত্তির ব্যাক পাস থেকে পাবলো ইনজুরি টাইমের ষষ্ঠ মিনিটে বর্দুকে সমতায় ফেরান।

৬৩ মিনিটে মারকুইনহোসের দ্বিতীয় গোলে আবারো এগিয়ে যায় পিএসজি। ছয় মিনিট পর কাভানির সহায়তায় এমবাপ্পে দলের পক্ষে চতুর্থ গোলটি করেন। এটি ছিল লিগে পিএসজির ১৬তম গোল। ৮৩ মিনিটে পারডো আরেকটি গোল করলে ব্যবধান কমায় বোর্দো। গত তিনটি ম্যাচে এই নিয়ে নবম গোল হজম করলো পিএসজি। এর আগে দিনের শুরুতে নিমেসকে ২-১ গোলে পরাজিত করে লিলিকে পিছনে ফেলে তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে রেনে। ম্যাচে দুই গোল করেছেন সেনেগালের ফরোয়ার্ড এম’বায়ে নিয়াং। তথ্য-বাসস

আজকের বাজার/আখনূর রহমান