সারাদেশে মহান বিজয় দিবস উদযাপিত

আজ ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী ময়দানে) আত্মসমর্পণ করেছিল পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী। আজ বিজয়ের ৪৯তম বার্ষিকী। স্বাধীন বাংলার স্থপতি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে এ দেশে উদিত হয়েছিল নতুন এক সূর্য। দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন উপলক্ষে দেশব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে ৩১ বার তোপধবনির মাধ্যমে দিবসের সূচনা করা হয়। সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এ ছাড়া ও বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি উদযাপন করে। বিভিন্ন স্থান থেকে বাসস প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর।
হবিগঞ্জে :
দুর্জয় স্মৃতিসোধ্যে জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন ও বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। এর আগে সেখানে বিজয়ের শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এডভোকেট মো.আবু জাহির এমপি, হবিগঞ্জ-২ আসনের এমপি ও সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান এডভোকেট আব্দুল মজিদ খান, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ উল্ল্যা, জেলা আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আলমগীর চৌধুরী, হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মিজানুর রহমান মিজান প্রমুখ।
চুয়াডাঙ্গায় :
শহীদ হাসান চত্বরে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন।
এসময় জেলা প্রশাসক নজরুল ইসলাম সরকার, পুলিশ সুপার জাহিদুল ইসলাম, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড, জেলা পরিষদ ও রেডক্রিসেন্ট ইউনিটসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা- কর্মচারীরা পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুর ইসলাম জোয়ার্দ্দার ।
শরীয়তপুর:
শরীয়তপুর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে জেলাবাসীর পক্ষে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেন জেলা প্রশাসক মো: পারভেজ হাসান। পরে পর্যায়ক্রমে পুলিশ সুপার এস এম আশ্রাফুজ্জামান, বীর মুক্তিযোদ্ধাগন, বিভিন্ন রাজনৈতিদল ও সামাজিক সংগঠন, সাংবাদিক, শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের মানুষ এবং বিভিন্ন সরকারী বেসরকারী সংগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানানো হয় জাতির সূর্য সন্তানদের।
এর পর সকাল ৭:২০ টায় জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের নেতৃবৃন্দ ও জেলা প্রশাসনের প্রতিনিদিগন মহিষার গণকবর, আটিপাড়া ও মনোহর বাজার মধ্যপাড়া মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভ জিয়ারত ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেন।
সকাল সাড়ে ৮ টায় শরীয়তপুর সার্কিট হাউজে জেলা প্রশাসন কর্তৃক আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। শরীয়তপুরের বিভিন্ন হাসপাতাল, শিশু পরিবার, জেলখানা ও এতিম খানায় উন্নতমানের খাবার পরিবেশনসহ সকল মসজিদ, মন্দির ও অন্যান্য উপাসনালয়ে জাতির শান্তি ও অগ্রগতি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত এবং প্রার্থনা করা হয়।
নড়াইল :
জাতীয় জাতীয় পতাকা উত্তোলন শেষে স্মৃতি সৌধ, গণকবর, বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল ও বধ্য ভূমিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, গণকবর জিয়ারত ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।
এসব কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সোহরাব হোসেন বিশ্বাস, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবাস চন্দ্র বোস, সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন খান নিলু, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা সেলিম প্রমুখ ।
দিবসের অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা। অপরদিকে কালিয়া উপজেলা প্রশাসকের আয়োজনে শহীদ আব্দুস সালাম ডিগ্রী কলেজের মাঠে ও লোহাগড়া উপজেলার মোল্যার মাঠে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে মহান বিজয় দিবস পালিত হয়েছে যথাযোগ্য মর্যাদায়।
জয়পুরহাট:
করোনা প্রাদূর্ভাবের কারণে সংক্ষিপ্ত কর্মসূচীর আয়োজন করে জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসক মো: শরীফুল ইসলামের নেতৃত্বে জেলা প্রশাসন, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সালাম কবিরের নেতৃত্বে পুলিশ প্রশাসন, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদেও চেয়ারম্যান আরিফুর রহমানের নেতৃত্বে জেলা আওয়ামী লীগ, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, সরকারি বিভিন্ন বিভাগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিকলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, জাসদ, সিপিবি, জাপা, বাসদ, বিএনপি ও তাদের অঙ্গ সংগঠন সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে শহীদ ডা: আবুল কাশেম ময়দানে অবস্থিত স্মৃতিসৌধে শহীদদের স্মরনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এখানে আনুষ্ঠানিক ভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন জেলা প্রশাসক মো: শরীফুল ইসলাম। সকাল ১০ টায় ভার্চুয়ালি ’ জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মানে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ ও ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে জাতীয় সমৃদ্ধি অর্জন’ শীর্ষক আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
এ উপলক্ষে সরকারি-বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও আলোকসজ্জা করা হয়। এতিমখানা, শিশু পরিবার ও হাসপাতালে উন্নত খাবার পরিবেশন করা হয়। শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত, যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সুস্বাস্থ্য এবং জাতির শান্তি, সমৃদ্ধি ও অগ্রযাত্রা কামনা করে মসজিদ, মন্দির, গীর্জা, প্যাগোডা ও অন্যান্য উপাসনালয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করা হয়। শিশু একাডেমি আয়োজন করে শিশুদের জন্য ছবি আঁকা ও রচনা প্রতিযোগিতার আয়োজন করে।
সাতক্ষীরা: সাতক্ষীরা-খুলনা রোড মোড়ে বঙ্গবন্ধু ম্যুরালে ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসের প্রথম প্রহরে (রাত ১২টা ১ মিনিটে) পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে শহীদদের স্মরণ করা হয়।
সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সভাপতি অধ্যক্ষ আবু আহমেদ ও সাধারণ সম্পাদক মমতাজ আহমেদ বাপির নেতৃত্বে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, দৈনিক সাতনদীর সম্পাদক হাবিবুর রহমান, আরটিভির সাতক্ষীরা প্রতিনিধি রামকৃষ্ণ চক্রবর্তী, ডিবিসির এম জিললুর রহমান, আমিরুজ্জামান বাবু প্রমুখ।
অপরদিকে বঙ্গবন্ধু পেশাজীবী পরিষদের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন জেলার সভাপতি ইমাম হোসেন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান লাভলু, আমিনুর রহমান, সাংগাঠনিক সম্পাদক শেখ জামাল হোসেন বকুল, এড. সুনীল ঘোষ, নাজমা খাতুন, মনিরা পারভীন, ময়না খাতুন, স্বরসতী বন্দ্যোপাধ্যায়সহ নেতৃবৃন্দ।
এছাড়া জেলা সৈনিক লীগ ও জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। জেলা অপরাধ দমন বিভাগের (সিআইডি) পদস্থ কর্মকর্তারাও উপিস্থিত ছিলেন। এদিকে রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে পুষ্পস্তবক করেন সাতক্ষীরা সদর এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবি।