সুযোগ বুঝে সোনা হাতিয়ে নিলেন শ্রেষ্ঠ ওসি!

সুযোগ বুঝে সোনা হাতিয়ে নিলেন শ্রেষ্ঠ ওসি। সম্প্রতি এমন অভিযোগ উঠেছে রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) বোয়ালিয়া থানার ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মণের বিরুদ্ধে। চারটি সোনার বার আটকের পর দুটিই গায়েব করে দিয়েছেন তিনি ও তার সামারি টিমের প্রধান এসআই মতিন। সোনা গায়েব নিয়ে গত তিন দিন ধরে পুলিশের ভেতরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগে জানা যায়, গত ১ অক্টোবর কাতার প্রবাসী শ্রমিক আজিজুল ও ফারুক দুটি করে সোনার বার নিয়ে দেশের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জ ফিরছিলেন। গত ১ অক্টোবর এই দুই শ্রমিককে বর্ণালীর মোড় এলাকায় বাস থেকে নামিয়ে নেন এসআই মতিন। দুটি সোনার বারসহ ২ অক্টোবর সন্ধ্যায় বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় গ্রেফতার করে আজিজুল ও ফারুককে আদালতে চালান করা হয়।

পরিবারের অভিযোগ, ওসি নিবারণ ও এসআই মতিন যোগসাজশে দুটি সোনার বার গায়েব করেছেন। মামলায় না দেয়া দুটি সোনার বার ফেরতের জন্য তাদের কাছ থেকে পাঁচ লাখ টাকাও নিয়েছেন মতিন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা আর ফেরত দেননি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দুই শ্রমিকের বাড়ি ও এসআই মতিনের গ্রামের বাড়ি একই জায়গায় এবং তারা পরস্পরের প্রতিবেশী। দুই প্রতিবেশী প্রবাসী শ্রমিকের দেশে ফেরার আগাম খবর পেয়েই তাদের বাস থেকে নামিয়ে নেন মতিন। সোনা ও বিদেশ থেকে আনা মূল্যবান সামগ্রী কেড়ে নিতেই মতিন পরিকল্পিতভাবে তাদের আটক করেন। চারটি সোনার বার পেয়ে দুটি গায়েব করে দেন।

এদিকে গ্রেফতার আজিজুলের স্ত্রী শরিফা খাতুন বলেছেন, তিনি ও তার পরিবার ন্যায়বিচারের আশায় পুলিশ কমিশনার বরাবর অভিযোগ করতে চাইলে ৩ অক্টোবর এসআই মতিন তাকে ফোনে হুমকি দিয়ে বলেছেন, অভিযোগ করলে রিমান্ডে এনে তোর স্বামীকে একবারেই খালাস করে দিব। স্বামীকে বাঁচাতে চাইলে মুখ বন্ধ রাখবি।

অভিযোগকারী, পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, প্রায় আড়াই বছর কাতারের দোহায় শ্রমিক হিসেবে কাজ শেষে গত ১ অক্টোবর ইউএস বাংলার বিএস-৩৩৪ নম্বর ফ্লাইটে সকাল ৮টায় শাহজালাল বিমানবন্দরে নামেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার রাজারামপুর গ্রামের আজিজুল ইসলাম ও ফারুক হোসেন। ওই দিনই তারা চাঁপাইনবাবগঞ্জগামী একটি বাসে চেপে বাড়ি ফিরছিলেন।

এ ঘটনায় এসআই মতিন বাদী হয়ে মামলা করেছেন। মামলায় তিনি দাবি করেছেন, আজিজুল ও ফারুকের দেহ তল্লাশি করে দুটি সোনার বার পাওয়া যায়। যার মূল্য প্রায় ১৫ লাখ টাকা। শুল্ক ফাঁকি দিয়ে সোনা আনায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

সোনার দুটি বার গায়েবের বিষয়ে এসআই আবদুল মতিন বলেন, আসামিরা বিদেশ থেকে সোনা চোরাচালান করে এনেছে। এ অভিযোগে তাদের গ্রেফতার করে মামলা করা হয়েছে। দুটি সোনার বার ফেরতের জন্য ৫ লাখ টাকা নেয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি। অন্য অভিযোগগুলোর কোনো ভিত্তি নেই। বোয়ালিয়া মডেল থানার ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মণ বলেন, দুইজনের কাছে দুটি সোনার বার পাওয়া যায়। দুটি দিয়েই মামলা দেয়া হয়েছে। তথ্য-ডেইলি বাংলাদেশ

আজকের বাজার/আখনূর রহমান