সোনাহাট স্থলবন্দর সড়কের বেহাল দশা, ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা, রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীর সোনাহাট স্থলবন্দরগামী অ্যাপ্রোচ সড়কের বেহাল দশায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন কয়েক হাজার স্থানীয় মানুষ, বাংলাদেশ ও ভারতের পণ্য আমদানি ও রপ্তানিকারকরা।

স্থানীয় ব্যবসায়ীরা যারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত তারা জানান, সোনাহাট ব্রিজ থেকে  স্থলবন্দরগামী ৩.৪৩ কিলোমিটার অ্যাপ্রোচ সড়কটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ধীরগতি ও অনিয়মের কারণে টানা বৃষ্টিতে খানা-খন্দে ভরে গেছে।

দেশের ১৮তম স্থলবন্দর হিসেবে ২০১৬ সালে এটির যাত্রা শুরু। তবে চার বছর পার হলেও কর্তৃপক্ষ ব্যবসার জন্য উপযোগী ভালো রাস্তার সুযোগ সুবিধা তৈরি করতে পারেনি।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, স্থলবন্দরগামী এই সড়কে প্রতিদিন প্রায় ২০০ ভারতীয় গাড়ি বাংলাদেশে প্রবেশ করত, কিন্তু রাস্তার বেহাল অবস্থার কারণে বর্তমানে গাড়ি আসছে ২০ থেকে ৩০টি।

জানা গেছে, এডিবির অর্থায়নে সড়ক ও জনপথ বিভাগ গত বছরের ৫ ডিসেম্বর থেকে এ সড়ক নির্মাণ কাজ শুরু করে।

কুড়িগ্রাম থেকে স্থলবন্দর পর্যন্ত ৪৩ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের জন্য মোট ৪৪ কোটি ৬২ লাখ টাকা বরাদ্দ ছিল। সড়কটি বাস্তবায়ন করছে রোডস অ্যান্ড হাইওয়ের কুড়িগ্রামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মোজাহার এন্টার প্রাইজ প্রাথমিক লিমিটেড।

ওই এলাকার দোকানদার রজব আলী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, রাস্তার বেহাল দশার কারণে দোকানগুলোতে লোকজন আসতে পারছে না, ফলে বিক্রি কমে যাওয়ায় তারা লোকসানের মুখে পড়েছেন এবং মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিদিন ৪-৫ জন করে শ্রমিক আর একটা মেশিন দিয়ে যে গতিতে কাজ চলছে এভাবে চলতে থাকলে পুরো রাস্তার কাজ শেষ করতে বছর লেগে যাবে।’

ভারতীয় ট্রাক চালকরাও রাস্তাটির বেহাল অবস্থা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

আবুল হোসেন নামে এক ভারতীয় চালক বলেন, ‘পণ্যবোঝাই ট্রাক কাদা কিংবা খানা-খন্দে ফেঁসে গেলে গাড়ির অনেক যন্ত্রপাতি বিকল ও ভেঙে যায়, এগুলো মেরামত করতে দুই-চারদিন সময় লেগে যায়। ফলে আমরা বাংলাদেশে ট্রাক নিয়ে আসার আগ্রহ হারিয়ে ফেলছি।’

আমদানিকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক রাস্তা তৈরিতে ঠিকাদার ও কর্তৃপক্ষের অবহেলাকে দায়ী করেছেন।

তিনি বলেন, ‘ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ও কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে সড়কের এই অবস্থা। আমরা বারবার সংশ্লিষ্টদের অবগত করলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেননি। ব্যবসায়ীরা এলসি করলেও রাস্তার দূরবস্থার কারণে মালামাল আনতে পারছেন না। ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা, রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।’

কুড়িগ্রামের সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আলী নুরাইন বলেন, ‘শিগগিরই রাস্তাটির নির্মাণ কাজ শুরু হবে।’

এদিকে, অনেক চেষ্টা করেও সড়কটির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কারো সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।