স্ত্রী নির্যাতনকারী পুলিশ কর্মকর্তা কারাগারে

স্ত্রীর করা নারী নির্যাতন মামলায় চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেফায়েত উল্লাহ চৌধুরীকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।

রোববার ৩০ এপ্রিল খুলনার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের বিচারক মো. নূরুল আমিন বিল্পব আসামির জামিন আবেদন নাকচ করে এই আদেশ দেন।

গত ১৮ জানুয়ারি ওই পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী নাসরিন আক্তার রুমা তার স্বামীর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতে মামলাটি দায়ের করেন। এই মামলায় হাজির না হওয়াই গত ৭ মার্চ আদালত রেফায়েত উল্লাহ চৌধুরী’র বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন। তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির পর তাকে কোজড করে চট্টগ্রাম পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। নাছরিন আক্তার রুমার পৈত্রিক বাড়ি খুলনার খালিশপুরে।

মামলার জামিন নিতে রেফায়েত উল্লাহ চৌধুরী রবিবার সকালে আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠিয়েছেন।
এর আগে আদালতের বারান্দায় তিনি সাংবাদিকদের জানান, তার স্ত্রী ইয়াবা এবং পর পুরুষে আসক্ত। এই কারণে স্ত্রীকে তিনি তালাক দিয়েছেন। তালাক দেওয়ায় প্তি হয়ে তার স্ত্রী এই মামলা দায়ের করেছে।
নাসরিন আক্তার তালাকের কপি পাননি এমন প্রশ্ন করলে রেফায়েত উল্লাহ চৌধুরী জানান, তালাক হয়ে গেছে। তার দাবি দাওয়া থাকলে তিনি সব মিটিয়ে দিবেন।

এ সময় তিনি সাংবাদিকদের কাছে তার কন্যা রাইসা বিনতে চৌধুরীর একটি লিখিত জবানবন্দি তুলে দেন। তিনি বলেন, ‘আমার কন্যা বাবার পে এবং মায়ের বিরুদ্ধে সাফাই দিতে আদালতে এসেছে।’ তবে এই সময় তার কন্যা কোনো কথা বলেনি। বরং রাইসাকে কাঁদতে দেখা গেছে।

পটিয়া থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রেফায়েত উল্লাহ সাংবাদিকদের আরও জানান, তার কোনো অবৈধ সম্পদ নেই। ফ্যাটসহ ব্যাংক জমা সবই তার জ্ঞাত আয়, বৈধ উপায়ে হয়েছে। তিনি তার স্ত্রীকে আর ফেরত নিবেন না সে কথাও জোর দিয়ে বলেন। তবে তার পরকীয়ার প্রসঙ্গে সাংবাকিরা প্রশ্ন করলে তিনি নীরব থাকেন।

দুপুরে আদালতে এই মামলার শুনানি শুরু হলে পুলিশ কর্মকর্তার পে কৌশলী অ্যাডভোকেট মসিউর রহমানসহ একডজন আইনজীবী জামিনের পে যুক্তি প্রদর্শন করেন। তার আইনজীবীরা দাবি করেন, পুলিশ কর্মকর্তা রেফায়েত উল্লাহ চৌধুরী তালাক দেওয়ার পর স্ত্রী প্তি হয়ে এই মামলা দায়ের করেছেন।

বাদীপরে আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. আবদুল লতিফ আসামিপরে জামিনের আবদনের বিরোধিতা করে পুলিশ কর্মকর্তার অবৈধ অর্থের প্রভাব বিস্তারের কথা জানান। তিনি আদালতকে জানান, অবৈধ অর্থের প্রভাব বিস্তার করে রেফায়েত উল্লাহ আইনকে পে নেওয়ার চেষ্টা করছেন।

বিচারক অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ নূরুল আমিন বিপ্লব উভয়পরে শুনানি শেষে জামিন নামঞ্জুর করে রেফায়েত উল্লাহকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। নাসরিন আক্তার রুমা ও তার আইনজীবী বিচারকের আদেশে সন্তোষ প্রকাশ করেন।

পুলিশ যে আইনের ঊর্ধ্বে নয়, এই আদেশে তার প্রতিফলন হয়েছে মন্তব্য করেন বাদী পরে আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. আবদুল লতিফ।

আজকের বাজার: আরআর/ ৩০ এপ্রিল ২০১৭