‘হাওর রক্ষায় মহাপরিকল্পনা’

জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ৪০ ফুট বাঁধ কেন, হিমালয়ের মতো বাঁধ দিলেও হাওরকে রক্ষা করা যাবে না বলে মনে করেন পরিকল্পনামন্ত্রী আ.হ.ম. মুস্তফা কামাল।তিনি বলেন,চিন্তা করতে হবে হাওরকে কীভাবে বশীভূত করা যায়। তাই দেশের হাওর অঞ্চলের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য মহাপরিকল্পনা নেয়া হবে বলেও জানান মন্ত্রী।

বৃহস্পতিবার,২৭এপ্রিল পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের এনইসি সম্মেলন কক্ষে ‘টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়নে উপাত্ত ঘাটতি বিশ্লেষণ: বাংলাদেশ প্রেক্ষিত’ বিষয়ক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি মন্তব্য করেন।

পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ ও ইউএনডিপির সাপোর্ট টু সাসটেইনেবল অ্যান্ড ইনক্লুসিভ প্লানিং প্রকল্প যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

আ.হ.ম. মুস্তফা কামাল বলেন, কীভাবে হাওরকে বশীভুত করা যায়- তা নিয়ে ভাবতে হবে। একটি মহাপরিকল্পনা তৈরি করতে হবে। বিশ্বে যারা জলবায়ু নিয়ে কাজ করেন- আমরা তাদের নিয়ে বসবো।

তিনি বলেন, এক সময় জলবায়ু পরিবর্তন আলোচনায় না আসলেও এখন প্রধান বিষয় হয়ে গেছে। হাওরবাসীদের যে অবস্থা হয়েছে- এমন ঘটনা বিশ্বের অন্যান্য দেশেও ঘটছে। তবে অ্যাক্ট অব গড মোকাবেলার জন্য কোনো ডাটা আমাদের কাছে নেই। কাজের মাধ্যমে আমরা ডাটা তৈরি করি। হাওরবাসীদের কীভাবে উন্নয়নের আওতায় আনা যায়- তা নিয়ে কাজ চলছে। সবার জন্য সমান প্রবৃদ্ধি চাই আমরা।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, হাওর অঞ্চলের মানুষ এক ফসলের ওপর নির্ভর করে। নারী-পুরুষ কঠোর পরিশ্রম করে। কীভাবে ওই অঞ্চলের মানুষের পেশায় বৈচিত্রকরণ করা যায়- সেটা নিয়ে কাজ করার প্রয়োজনীয়তা আছে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ বলেন, হাওর এলাকার মানুষদের নিয়ে সমন্বিত পরিকল্পনার অভাবে তাদের ভাগ্য উন্নয়ন হচ্ছে না। সুফল পেতে একটি কার্যকর সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে। একইসঙ্গে আন্তঃমন্ত্রণালয়গুলোর মাঝে সমন্বয় প্রয়োজন। হাওর এলাকা প্রাকৃতিক সম্পদের বড় উৎস। এটাকে কাজে লাগাতে হবে।

টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমাদের উপাত্তের ঘাটতি আছে- বলে আমরা মনে করি না। অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের তুলনায় অনেক ভালো ডাটা আমাদের কাছে রয়েছে।

ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. হামিদুল হক বলেন, হাওর এলাকার মানুষেরা তাদের প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবহার করে সাবলম্বী হতে চায়। তবে সরকারের কিছু নীতিমালার কারণে সেটা সম্ভব হয় না। মাছ ধরার ভরা মৌসুমে হাওর ইজারা দেওয়া হয়। তাতে মাছ ধরা থেকে বঞ্চিত হয় স্থানীয়রা।

পরিকল্পনা কমিশনের সিনিয়র সচিব ড. শামসুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন আইবিএ অধ্যাপক সৈয়দ মুনির খসরু, বিআইবিএমের মহাপরিচালক তৌফিক আহমেদ চৌধুরী প্রমুখ।

প্রসঙ্গত, চলতি মাসের প্রথম দিকে আকস্মিক ঢলে সুনামগঞ্জ, সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোনার হাওর তলিয়ে গেছে। এতে বোরো ধানের ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি মারা গেছে বিপুল পরিমাণ মাছ ও হাঁস।

আজকের বাজার:এলকে/এলকে/২৭এপ্রিল,২০১৭