হাজারীবাগের সব ট্যানারি বন্ধে হাইকোর্টের নির্দেশ

হাজারীবাগের সকল ট্যানারি কারখানা অবিলম্বে বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এসব কারখানার বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালককে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে। নির্দেশ বাস্তবায়নে স্বরাষ্ট্র, শিল্প সচিব, পুলিশ মহাপরিদর্শককে সহযোগিতা করতে বলেছেন আদালত।

আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন বিষয়ে আগামী ৬ এপ্রিল পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালককে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এছাড়াও হাজারীবাগে কাঁচা চামড়া প্রবেশ বন্ধে সরকারের বিভিন্ন এজেন্সিগুলোর কাছ থেকে কেমন সহযোগিতা পাচ্ছে, সে বিষয়ে একই সময়ে শিল্প মন্ত্রণালয়কে আরেকটি প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। আগামী ১০ এপ্রিল এ বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ শুনানি হবে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) এক আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মো. সেলিমের হাই কোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে বেলার পক্ষে শুনানিতে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ফিদা এম কামাল, সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ও মিনহাজুল হক চৌধুরী। শিল্প মন্ত্রণালয়ের পক্ষে ছিলেন রইস উদ্দিন আহমেদ।

পরে রিজওয়ানা হাসান আদেশের বিষয়ে সাংবাদিকদের বলেন, সর্বশেষ ২০১০ সালের অক্টোবরে ট্যানারিগুলোকে স্থানান্তরে ছয় মাস সময় দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। সে অনুসারে ২০১১ সালে ৩০ এপ্রিলের পর হাজারিবাগে ট্যানারি চালানোর অনুমোদন নাই। এরপরও সরকার ট্যানারিগুলোকে একাধিকবার সময় দিয়েছে। গত ৩১ ডিসেম্বর সর্বশেষ সময় অতিবাহিত হওয়ার পর তা ৩১ মার্চ পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, সময় বাড়ানোর ক্ষেত্রে সরকার আদালতের অনুমতি নেয়নি। ফলে সরকারের সময় বৃদ্ধির সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে জানুয়ারিতে আবেদন করি। এ আবেদনের শুনানি নিয়ে আদালত হাজারীবাগের সকল ট্যানারি অবিলম্বে বন্ধ এবং কারখানাগুলোর বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার আদেশ দিয়েছেন।

অপরদিকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আইনজীবী রইস উদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, আমরা শিল্প মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রতিবেদন দিয়ে জানিয়েছি ৪৩টি ট্যানারি সাভারে স্থান্তর করা হয়েছে। বহু ট্যানারি এখনও স্থানান্তর করা হয়নি। এছাড়া গত ৩১ জানুযারি শিল্প মন্ত্রণালয় হাজারীবাগে কাঁচা চামড়া প্রবেশ বন্ধে বিভিন্ন অধিদফতরের কাছে সহযোগিতা চায়। সরকারের এসব অধিদফতর থেকে শিল্প মন্ত্রণালয় কতটুকু সহযোগিতা পাচ্ছে সে বিষয়ে একটি প্রতিবেদন আগামী ৬ এপ্রিল দিতে বলেছে আদালত।

এর আগে ট্যানারি স্থানান্তরে সরকারের বারবার সময় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে গত ৩ জানুয়ারি বেলার পক্ষে একটি আবেদন করা হয়। ওই আবেদনেই হাজারীবাগ থেকে স্থানান্তর না হওয়া ট্যানারি বন্ধ এবং কারখানাগুলোর বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার নির্দেশনা চাওয়া হয়।

 

সুত্র: দ্য রিপোর্ট