হেফাজতের সঙ্গে কমপ্রোমাইজ করিনি : কাদের

হেফাজতের সঙ্গে আওয়ামী লীগ কোনো কমপ্রোমাইজ করেনি বলে মন্তব্য করেছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেছেন, ‘আমরা (আওয়ামী লীগ) তো হেফাজতের সঙ্গে কোনো কমপ্রোমাইজ করিনি। হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে আওয়ামী লীগের অ্যালায়েন্স (জোট) হয়ে যায়নি। তাদের চিন্তাধারার সঙ্গে মিলমিশ হয়ে গেছে, এ রকমও নয়। আর হেফাজত ও কওমি মাদ্রাসা দুটো এক জিনিস নয়। সরকার বাস্তবতা বিবেচনা করে কওমি মাদ্রাসার সনদে স্বীকৃতি দিয়েছে।’

বৃহস্পতিবার (১৩ এপিল) বেলা ১১টার দিকে আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জাবাবে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় বিভিন্ন সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সংবাদ সম্মেলনের পাল্টা জবাব দিতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে আওয়ামী লীগ।

কাদের বলেন, ‘একটা বৃহৎ জনগোষ্ঠী কওমি মাদ্রাসায় পড়াশোনা করে, তাদেরও একটা শিক্ষা স্বীকৃতি দেওয়া উচিত। এটা বাস্তবসম্মত। এটার মানে এই না যে কোনো সাম্প্রদায়িক শক্তির সাথে আপস করা। কোনো সাম্প্রদায়িক শক্তির সাথে আপসের কথা হাস্যকর।’

বিএনপির দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করে, এটা আসলে যারা ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করে তাদের অভিযোগ।’

হেফাজতে ইসলামের সনদে স্বীকৃতি দেওয়া ও হাইকোর্টের সামনের ভাস্কর্য সরানোর দাবিতে তাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর একমত পোষণ করায় আলোচনা হচ্ছে, সরকার হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে সমঝোতা করছে কি না—এমন প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, ‘বাস্তবতা বিবেচনা করে রাজনীতি করা হচ্ছে। দেশে রাজনৈতিক ও সামাজিক যে বাস্তবতা রয়েছে এবং জাতির যে অনুভূতি রয়েছে, তাতে আমরা যারা রাজনীতি করি, তাদের সেই বাস্তবতা নিয়ে এগোতে হবে। বাস্তবতা মেনে যারা সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, তারাই প্রগতিশীল রাজনীতি করেন। আমরা সেটা মেনে নিয়ে রাজনীতি করছি।’

ভারতের সঙ্গে সামরিক সমঝোতা স্মারক সই প্রসঙ্গে কাদের বলেন, ‘ভারতসহ ১৩টি দেশের সঙ্গে এ ধরনের সামরিক সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। কোনো কোনো দেশের সঙ্গে চুক্তির প্রক্রিয়া চলছে। এটা শুধু ভারতের সঙ্গে হচ্ছে না।’

ভারতের সঙ্গে সামরিক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর নিয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সমালোচনার জবাবে কাদের বলেন, ‘চীনের সঙ্গেও খালেদা জিয়া সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছিলেন। তখন তো তা নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। সংসদে বা সংসদের বাইরে কোনো রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তি সে সময় সমালোচনা করেননি। ভারতের সঙ্গে একই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করায় কেন এই সমালোচনা? ভারত তো আমাদের বন্ধুপ্রতিম দেশ। মুক্তিযুদ্ধের সময় সহযোগিতা করেছে। মুক্তিযুদ্ধের সরাসরি বিরোধিতা করেছে-এমন দেশের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই করার সময় তো সমালোচনা হয়নি।’

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন-আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ, প্রচার সম্পাদক হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিম, আহমদ হোসেন ও এ কে এম এনামুল হক শামীম, উপদপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া প্রমুখ।