২০১৮ সালেই প্রাথমিক শিক্ষা অষ্টমে উন্নীত : গণশিক্ষামন্ত্রী

প্রাথমিক শিক্ষা অষ্টম শ্রেণিতে উন্নীতকরণের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এবং তা আগামী বছরের (২০১৮ সাল) মধ্যে সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান ফিজার। সচিবালয়ে মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) প্রাথমিক বৃত্তির ফল প্রকাশের সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রী এ কথা জানান।

শিক্ষানীতি অনুযায়ী ২০১৮ সাল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা অষ্টম শ্রেণিতে উন্নীত হবে কি না-জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘এখন (অষ্টমে উন্নীতের প্রক্রিয়া) থেকেই শুরু হয়েছে। বাস্তবায়নের শেষ ধাপটা হয়তো ২০১৮ সালের দিকে যাবে।’

২০১৮ সালের প্রথম থেকেই এটা বাস্তবায়ন হবে কি না-এ বিষয়ে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ওনারা (শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা) ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণির পাঠদান, স্বীকৃতি দেওয়া, রেজিস্ট্রেশন দেওয়ার বিষয়ে আমাদের চিঠি দিয়েছেন। এই চিঠি দেওয়ার পরও কিছু কাজ থাকে। রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী আমি চাইলেই কিছু একটা ওনাকে ছেড়ে দিতে পারব না, উনি চাইলেও পারবেন না। ক্যাবিনেট পর্যন্ত কিছু কিছু কাজ আছে, সেই কাজগুলো ওনারা করছেন।’

প্রাথমিকের বৃত্তি কত দিন চলবে জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘যত দিন সমাপনী চলবে তত দিন।’

পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী কত দিন চলবে-এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘যত দিন সরকার এ সিদ্ধান্ত বহাল রাখবে তত দিন।’

‘শিক্ষানীতি প্রণয়নে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী নেতৃ্ত্ব দিয়েছেন। শিক্ষানীতি প্রণয়নে তার অবদান অসামান্য। আমি মনে করি তিনি যখন জাতির সামনে অঙ্গীকার করেছেন যে ২০১৮ সালের মধ্যে এটিকে দৃষ্টিগাহ্য করা হবে। তিনি নিশ্চয়ই সেটি করবেন। ভরসা রাখছি।’

মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘এই কাজ (প্রাথমিক শিক্ষা অষ্টম পর্যন্ত) পেলে আমরা কি করব সে জন্য গ্রাউন্ডওয়ার্ক আমরা করছি। এনসিটিবিতে তখন আমাদের ভূমিকা কী হবে, এখন কী ভূমিকা আছে। সবকিছু ঢেলে সাজাতে আমাদের প্রস্তুতি নিচ্ছি। ছেড়ে দিলে যাতে আমরা চালাতে পারি সে জন্য তারাও আমাদের উপযুক্ততা পরীক্ষা করে নিশ্চয়ই ছাড়বেন।’

উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্তের কারণে কি প্রাথমিক অষ্টমে উন্নীতকরণ আটকে আছে-এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষানীতি-২০১০ সরকার গ্রহণ করেছে। বাস্তবায়ন করতে অনেক সময় লাগে। সেই সময়টাই আমার নিচ্ছি। এটাতে আমাদের কিছু কাজ আছে, যারা ছেড়ে দেবেন কিছু কাজ আছে।’

‘ছেড়ে দেওয়ার ব্যাপারটা তারা শুধু বলে দিয়েছেন, এখনও প্রক্রিয়া করছেন। আমরা এখনও পুরোপুরি পাইনি।’

প্রাথমিক শিক্ষা অষ্টম শ্রেণিতে উন্নীত করতে গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় কী প্রস্তুতি নিচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কারিক্যুলাম ডেভেলভড করা, প্রত্যেক স্কুলে অবকাঠামোগত, হাইস্কুলের সঙ্গে যেটা আছে ষষ্ঠ-অষ্টম সেটা পেয়ে গেলাম, অন্য স্কুলের সঙ্গে যেটা সংযুক্ত আছে সেটাকে কেমন করে আমি পাব, ওখানকার শিক্ষক একেবারেই বাদ পড়ে যাবে কি না বা ওই শিক্ষকরা আমার এখানে চলে আসবে কি না, শিক্ষকগুলোকে সরকারীকরণের প্রশ্ন আসে কি না। সেই কাজ করছি। স্কুল ম্যাপিংও চলছে।’

২০১৮ সালের মধ্যে সব কাজ সম্পন্ন করতে পারবেন কি না-এ বিষয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী বলেন, ‘মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী সব সময়ে এগিয়ে যায় না সবকিছু। প্রত্যাশা আমাদের অনেক বড়, সেই জায়গায় পৌঁছাতে গেলে অনেক সময় লাগবে। সাত বছর কারো কারো জন্য, ব্যক্তির জন্য অনেক বড়, রাষ্ট্রের জন্য এ বিষয়টি খুব বড় হয়ত নয়।’

তিনি বলেন, ‘চেষ্টাটা আছে, প্রতিদিন চেষ্টা করছি কীভাবে লক্ষ্যে পৌঁছে যাব।’

প্রাথমিকের পাঠ্যবইয়ের ভুল সংশোধনে এনটিসিবি মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠালেও কেন তা অনুমোদন দেওয়া হয়নি-এমন প্রশ্নে মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ভুলভ্রান্তি থেকে রেরিয়ে আসার জন্য কাজ চলছে।’

কবে নাগাদ সংশোধনী দেওয়া হবে-এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘সবকিছুতে কি দিন তারিখ দেওয়া যাবে। আমরা নিশ্চয়ই ভুলটা পড়াচ্ছি না। প্রত্যেক জায়গার এটার জন্য নির্দেশনা দেওয়া আছে, যেখানে যে জায়গায় আপনারা ভুলটা ধরেছেন সেটা নিশ্চয় দুই শ বা পাঁচ শ নয়, যেটুকু ভুল আছে সে বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সব বই তো পরিবর্তন করা এখনই দরকার নেই। যেটুকু সংশোধিতরূপে পড়ানো দরকার সেটা করা হচ্ছে।’