২১ ফেব্রুয়ারির নিরাপত্তায় ৮ হাজার পুলিশ

২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ও এর আশপাশের এলাকায় ৪ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে ডিএমপি। দিবসটি উপলক্ষে পোশাকে ও সাদা পোশাকে ৮ হাজার পুলিশ সদস্য নিরাপত্তা রক্ষায় দায়িত্ব পালন করবেন। রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ শেষে রবিবার দুপুরে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া।

তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণসহ আশপাশের সকল এলাকা জুড়ে পর্যাপ্ত সংখ্যক অফিসার ও ফোর্সের সমন্বয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। শহীদ মিনার ও এর আশপাশের এলাকার প্রতিটি ইঞ্চি সিসি টিভি ক্যামেরা দ্বারা মনিটরিং করা হবে। পুলিশ কন্ট্রোল রুম থেকে সিসি টিভি ক্যামেরার এ ফুটেজগুলো মনিটরিং করা হবে। ২০ ফেব্রুয়ারি রাত ৮টার পর থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বহিরাগত কোনো গাড়ি প্রবেশ করতে পারবে না। প্রতিটি প্রবেশ গেইটে পর্যাপ্ত সংখ্যক আর্চওয়ে স্থাপন করা হয়েছে এবং আগত দর্শনার্থীদের হ্যান্ড মেটাল ডিটেক্টর দ্বারা দেহ তল্লাশি ও হ্যান্ড ব্যাগ চেকিং এর আওতায় আনা হবে। মহিলাদের দেহ তল্লাশির ক্ষেত্রে প্রতিটি গেইটে পর্যাপ্ত সংখ্যক নারী পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, দিনটি উপলক্ষে মৎস্য ভবন থেকে নিউমার্কেট এবং দোয়েল চত্বর থেকে পলাশী মোড় পর্যন্ত এলাকা সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় থাকবে। শহীদ মিনারের মূল বেদীকেন্দ্রীক, শহীদ মিনারকেন্দ্রীক, দোয়েল চত্বর, শাহবাগ মোড়, পলাশীর মোড় ও নীলক্ষেত মোড়কেন্দ্রীক ৪ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। থাকবে ৪টি ওয়াচ টাওয়ার। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পৃথক পৃথক প্রবেশ ও বর্হিগমন গেটের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। সর্বসাধারণের জন্য প্রবেশ পলাশী মোড় হয়ে জগন্নাথ হলের সামনে হয়ে শহীদ মিনারের উত্তর গেট দিয়ে প্রবেশ করবে এবং পূর্ব গেট দিয়ে বের হয়ে রোমানা ক্রসিং হয়ে দোয়েল চত্বর দিয়ে বর্হিগমন করবে। দোয়েল চত্বর, জিমনেসিয়াম ও রোমানা ক্রসিং দিয়ে উল্টো পথে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।

২১ ফেব্রুয়ারি উদযাপনকে কেন্দ্র করে কোন হুমকি আছে কিনা? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, না, সুনির্দিষ্ট কোনো হুমকি নেই। আছাদুজ্জামান মিয়া বলেন, গত বছর দোয়েল চত্বরে কোন একটি দলের কর্মীসদস্যরা অযাচিতভাবে প্রবেশের চেষ্টা চালায় ও দায়িত্বরত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের লাঞ্ছিত করে নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিল। শুধু তাই নয় কেউ কেউ জুতা পায়ে শহীদ মিনারে মূল বেদীর উপরেও উঠে পড়েছিল। যা নিন্দিত হয়েছিল সর্বমহলে এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও বিস্মিত হয়েছিলাম। তাই যে কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা রোধে আমরা বদ্ধপরিকর। নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলার স্বার্থে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করার জন্য সকলকে আহবান জানাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, শাহবাগ থেকে নীলক্ষেত, পুরাতন হাইকোর্ট থেকে দোয়েল চত্বর, চাঁনখারপুল থেকে দোয়েল চত্বর, রোমানা ক্রসিং থেকে ঢাকা মেডিকেল গেট, শিববাড়ী থেকে টিএসসি, পলাশী, জগন্নাথ হল পর্যন্ত হকার উচ্ছেদের জন্য হকার উচ্ছেদ টিম মোতায়েন থাকবে। মহান একুশে ফেব্রুয়ারির ভাবগাম্ভীর্যের সাথে উদযাপনের লক্ষ্যে শহীদ মিনারের আশপাশে সকল ধরনের ব্যানার, ফ্যাস্টুন, প্ল্যাকার্ড বহন নিরুৎসাহিত ও নিষিদ্ধ করতে সংশ্লিষ্টদের পত্র দিয়ে অনুরোধ করা হয়েছে।

সুত্র: দ্য রিপোর্ট