২৪ এপ্রিল ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট- ১’এর মহাকাশ উৎক্ষেপণ

বাংলাদেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট- ১’এর মহাকাশে উৎক্ষেপণ করা হবে আগামি ২৪ এপ্রিল। স্যাটেলাইট নির্মাণে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান ফ্রান্সের থ্যালেস অ্যালেনিয়া স্পেস এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

গত মঙ্গলবার এক টু্ইট বার্তায় এ কথা জানিয়েছে স্যাটেলাইট ও প্রযুক্তিবিষয়ক সংবাদমাধ্যম আমেরিকা স্পেস। স্যাটেলাইট নির্মাণে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান ফ্রান্সের থ্যালেস অ্যালেনিয়া স্পেস টুইট বার্তায় বলছে, ২৮ মার্চ কানের থ্যালেস অ্যালেনিয়া স্পেস প্ল্যান্ট ত্যাগ করবে স্যাটেলাইটটি। পরে স্যাটেলাইট বহনকারী কার্গো বিমান অ্যানতোনোভ নাইস বিমানবন্দর থেকে ২৯ মার্চ ফ্রান্সের স্থানীয় সময় সকাল ৬টা থেকে ৮ টার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে উড্ডয়ন করবে। ওই দিন বোস্টনে যাত্রাবিরতির পর কার্গোবিমানটি ফ্লোরিডার কেপ কার্নিভালে পৌঁছাবে পরদিন।

কেপ কার্নিভালে স্পেসএক্সের লঞ্চ ফ্যাসিলিটিতে লঞ্চ ভেহিকল ফ্যালকন ৯-র ইন্ট্রিগ্রেশনসহ প্রয়োজনীয় পরীক্ষা -নিরীক্ষার পর এটি মহাকাশের উদ্দেশ্যে উৎক্ষেপণ করা হবে।

টুইটে আমেরিকা স্পেস বলেছে, উৎপাদন ও লঞ্চার মেনিফেস্ট বিলম্বের কারণে আগামী ২৪ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট- ১ উৎক্ষেপণের সম্ভাব্য তারিখের ব্যাপারে নিশ্চিত করেছে স্পেসএক্স।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা স্পেসএক্সের ‘ফ্যালকন-৯’ রকেটে করে স্যাটেলাইটটি মহাকাশে পাঠানো হবে। এর মাধ্যমে বিশ্বের ৫৭তম স্যাটেলাইট সদস্য দেশের তালিকায় নাম লেখাতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

এরমধ্যে রাশিয়ার উপগ্রহ কোম্পানি ইন্টারস্পুটনিকের কাছ থেকে কক্ষপথ কেনা হয়েছে। মহাকাশের ১১৯ দশমিক ১ পূর্ব দ্রাঘিমায় প্রায় ২১৯ কোটি টাকায় ১৫ বছরের জন্য এই কক্ষপথ কেনা হয়েছে।

জানা গেছে, স্যাটেলাইট পাঠানোর কাজটি বিদেশে হবে। তবে এটি নিয়ন্ত্রণ করা হবে বাংলাদেশ থেকেই। আর এজন্য গাজীপুরের জয়দেবপুর ও রাঙ্গামাটির বেতবুনিয়ায় দুটি গ্রাউন্ড স্টেশন নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এটি নিয়ন্ত্রণে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে গ্রাউন্ড কন্ট্রোল স্টেশনের যন্ত্রপাতিও আমদানি করেছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।

বিটিআরসি চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ জানান, আবহাওয়া ও পারিপার্শ্বিক কিছু কারণে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের নির্দিষ্ট তারিখ আগে থেকে বলা সম্ভব হয় না। এপ্রিলের শেষের দিকে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করা হবে।

উল্লেখ, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাট-১ প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট খরচ হচ্ছে দুই হাজার ৯০২ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে দেওয়া হচ্ছে এক হাজার ৫৪৪ কোটি টাকা। আর ঋণ হিসেবে এইচএসবিসি ব্যাংক বাকি এক হাজার ৩৫৮ কোটি টাকা দিচ্ছে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মোট ৪০টি ট্রান্সপন্ডার থাকবে। এর মধ্যে ২০টি ট্রান্সপন্ডার বাংলাদেশ ব্যবহার করবে। বাকি ২০টি বিদেশি কোনো প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রির জন্য রাখা হবে। এই কৃত্রিম উপগ্রহ স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল, ইন্টারনেট সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান, ভি-স্যাট ও বেতারসহ ৪০ ধরনের সেবা দেবে।

এস/