২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ২৭৫ জন

দেশে করোনা শনাক্তের ১৭৩তম দিন পর্যন্ত ১৫ লাখ ৩৮৫ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৩ লাখ ৪ হাজার ৫৮৩ জনের দেহে এই ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ পর্যন্ত শনাক্তের হার ২০ দশমিক ৩০ শতাংশ।
আজ স্বাস্থ্য অধিদফতরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা স্বাক্ষরিত এই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতাল এবং বাসায় মিলিয়ে সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ২৭৫ জন। গতকালের চেয়ে আজ ১৭০ জন কম সুস্থ হয়েছেন। গতকাল সুস্থ হয়েছিলেন ৩ হাজার ৪২৭ জন।

আজ শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৬৩ দশমিক ৫২ শতাংশ। আগের দিন এই হার ছিল ৬২ দশমিক ৯৪ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ সুস্থতার হার শূন্য দশমিক ৫৮ শতাংশ বেশি।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৪ ঘন্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ৪৫ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকালের চেয়ে আজ ৯ জন কম মৃত্যুবরণ করেছেন। গতকাল ৫৪ জন মৃত্যুবরণ করেছিলেন। করোনা শনাক্তের বিবেচনায় আজ মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৫ শতাংশ। আগের দিনও মৃত্যুর হার ছিল ১ দশমিক ৩৫ শতাংশ।

গত ২৪ ঘন্টায় ১৫ হাজার ১২৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় ২ হাজার ৪৩৬ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। গতকালের চেয়ে আজ ৮৩ জন কম শনাক্ত হয়েছেন। গতকাল ১৫ হাজার ৭০ জনের নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছিলেন ২ হাজার ৫১৯ জন। গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ১১ শতাংশ। আগের দিন এ হার ছিল ১৬ দশমিক ৭২ শতাংশ। আগের দিনের চেয়ে আজ শনাক্তের হার শূন্য দশমিক ৬১ শতাংশ কম।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, ‘করোনাভাইরাস শনাক্ত করতে গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৫ হাজার ৫০১ জনের। আগের দিন নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল ১৪ হাজার ৮৩৫ জনের। গতকালের চেয়ে আজ ৬৬৬টি নমুনা বেশি সংগ্রহ করা হয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় দেশের ৯২টি পরীক্ষাগারে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৫ হাজার ১২৪ জনের। আগের দিন নমুনা পরীক্ষা হয়েছিল ১৫ হাজার ৭০ জনের। গত ২৪ ঘন্টায় আগের দিনের চেয়ে ৫৪টি বেশি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেছেন ৪২ জন, আর বাড়িতে ৩ জন। মৃত্যুবরণকারী ৪৫ জনের মধ্যে পুরুষ ৩৪ জন, নারী ১১ জন। এ পর্যন্ত পুরুষ মৃত্যুবরণ করেছেন ৩ হাজার ২৪২ জন; যা শতাংশের হিসাবে ৭৮ দশমিক ৫৬ শতাংশ এবং এ পর্যন্ত নারী মৃত্যুবরণ করেছেন ৮৮৫ জন; যা শতাংশের হিসাবে ২১ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিবেচনায় ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে ১ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ১ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৭ জন, ৫১ থেকে ৬০ ১১ জন এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের ২৫ জন রয়েছেন। এখন পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বয়স বিশ্লেষণে দেখা গেছে, শূন্য থেকে ১০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১৯ জন; যা শূন্য দশমিক ৪৬ শতংশ। ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৩৬ জন; যা শূন্য দশমিক ৮৭ শতাংশ। ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৯৬ জন; যা ২ দশমিক ৩৩ শতাংশ। ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ২৫৪ জন; যা ৬ দশমিক ১৫ শতাংশ। ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ৫৫৪ জন; যা ১৩ দশমিক ৪২ শতাংশ। ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে রয়েছেন ১ হাজার ১৪০ জন; যা ২৭ দশমিক ৬২ শতাংশ এবং ৬০ বছরের বেশি বয়সের রয়েছেন ২ হাজার ২৮ জন; যা ৪৯ দশমিক ১৪ শতাংশ।
২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ২২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১০ জন, রাজশাহী এবং সিলেট বিভাগে ১ জন করে, খুলনা বিভাগে ৫ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৬ জন রয়েছেন। এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণকারীদের বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে ঢাকা বিভাগে মারা গেছেন ১ হাজার ৯৯০ জন; যা ৪৮ দশমিক ২২ শতাংশ। চট্টগ্রাম বিভাগে ৯০৮ জন; যা ২২ শতাংশ। রাজশাহী বিভাগে ২৭৭ জন; যা ৬ দশমিক ৭১ শতাংশ। খুলনা বিভাগে ৩৪০ জন; যা ৮ দশমিক ২৪ শতাংশ। বরিশাল বিভাগে ১৫৯ জন; যা ৩ দশমিক ৮৫ শতাংশ। সিলেট বিভাগে ১৮৭ জন; যা ৪ দশমিক ৫৩ শতাংশ। রংপুর বিভাগে ১৭৭ জন; যা ৪ দশমিক ২৯ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৮৯ জন; যা ২ দশমিক ১৬ শতাংশ।
গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়েছেন ৩ হাজার ২৭৫ জন। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে রয়েছেন ১ হাজার ৬৩৩ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৪৮২ জন, রংপুর বিভাগে ১৪৬ জন, খুলনা বিভাগে ৩০৫ জন, বরিশাল বিভাগে ৯০ জন, রাজশাহী বিভাগে ১৮৭ জন, সিলেট বিভাগে ৩৭৭ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ৫৫ জন।
বিজ্ঞপ্তিতে স্বাস্থ্য অধিদফতর জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টিনে যুক্ত হয়েছেন ১ হাজার ৮১১ জন, কোয়ারেন্টিন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ২ হাজার ১১১ জন। এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টিনে গেছেন ৪ লাখ ৮৮ হাজার ৮২৩ জন, এখন পর্যন্ত ছাড়া পেয়েছেন ৪ লাখ ৩৬ হাজার ৪১৮জন। বর্তমানে কোয়ারেন্টিনে আছেন ৫২ হাজার ৪০৫ জন।
অপরদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে যুক্ত হয়েছেন ৬১০ জন, আইসোলেশন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৭৪৮ জন। এখন পর্যন্ত আইসোলেশনে গেছেন ৬৯ হাজার ২৯৬ জন এবং ছাড়া পেয়েছেন ৪৯ হাজার ১৪৭জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ২০ হাজার ১৪৯ জন।
ঢাকা মহানগরীতে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৬ হাজার ৬২৫টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তি রোগীর সংখ্যা ২ হাজার ১১৭ জন ও শয্যা খালি আছে ৪ হাজার ৫০৮টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩১০টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি রোগী আছে ২৯৮ জন ও শয্যা খালি আছে ১১২টি। চট্টগ্রাম মহানগরীতে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭৮২টি, ভর্তিকৃত রোগী ১৬৫ জন ও শয্যা খালি আছে ৬১২টি। আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৩৯টি, আইসিইউ শয্যায় ভর্তি আছে ২৬ জন ও শয্যা খালি আছে ১৩টি। সারাদেশে অন্যান্য হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ৭ হাজার ৪৩৬টি, সাধারণ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগী ১ হাজার ৪৮৭ জন ও শয্যা খালি আছে ৫ হাজার ৯৪৯টি এবং আইসিইউ শয্যা রয়েছে ২০১টি ও আইসিইউ শয্যায় ভর্তিকৃত রোগীর সংখ্যা ১০২ জন ও শয্যা খালি আছে ৯৯টি। সারাদেশে হাসপাতালে সাধারণ শয্যা সংখ্যা ১৪ হাজার ৮৪৩টি, রোগী ভর্তি আছে ৩ হাজার ৭৬৯ জন এবং শয্যা খালি আছে ১১ হাজার ৭৪টি। সারাদেশে আইসিইউ শয্যা সংখ্যা ৫৫০টি, রোগী ভর্তি আছে ৩২৬ জন এবং খালি আছে ২২৪টি। সারাদেশে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা ১২ হাজার ৫৮৩টি। সারাদেশে হাই ফ্লো নেজাল ক্যানেলা সংখ্যা ৪২৯টি এবং অক্সিজেন কনসেনট্রেটর ১৭৬টি।
০১৩১৩-৭৯১১৩০, ০১৩১৩-৭৯১১৩৮, ০১৩১৩৭৯১১৩৯ এবং ০১৩১৩৭৯১১৪০ এই নম্বরগুলো থেকে হাসপাতালের সকল তথ্য পাওয়া যাবে। কোন হাসপাতালে কতটি শয্যা খালি আছে। কত রোগী ভর্তি ও কতজন ছাড়া পেয়েছেন এবং আইসিইউ শয্যা খালি আছে কি না এই ফোন নম্বরগুলোতে ফোন করে জানা যাবে। এছাড়া www.dghs.gov.bd Gi CORONA কর্ণারে “করোনা বিষয়ক অভিযোগ প্রেরণ” লিঙ্ক অথবা http:/app.dghs.gov.bd/covid19-complain লিঙ্ক ব্যবহার করে করোনা বিষয়ক যেকোন অভিযোগ পাঠানো যাবে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গত ২৪ ঘন্টায় স্বাস্থ্য বাতায়ন ১৬২৬৩ হটলাইন নম্বরে ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৭ হাজার ৬১০টি, ৩৩৩ এই নম্বরে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৪২ হাজার ৫৩০টি এবং আইইডিসিআর’র হটলাইন ১০৬৫৫, এই নম্বরে ফোন এসেছে গত ২৪ ঘন্টায় ২৯৫টি। সব মিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ফোনকল গ্রহণ করা হয়েছে ৫০ হাজার ৪৩৫টি। এ পর্যন্ত হটলাইনে ফোনকল এসেছে ১ কোটি ৯৫ লাখ ২৩ হাজার ৭৮৪টি।
করোনাভাইরাস চিকিৎসা বিষয়ে এ পর্যন্ত ১৬ হাজার ৪৯৮ জন চিকিৎসক অনলাইনে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। এদের মধ্যে ৪ হাজার ২১৭ জন স্বাস্থ্য বাতায়ন ও আইইডিসিয়ার’র হটলাইনগুলোতে স্বেচ্ছাভিত্তিতে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘন্টা জনগণকে চিকিৎসাসেবা ও পরামর্শ দিচ্ছেন। এছাড়া ২৪ ঘন্টায় কোভিড বিষয়ক টেলিমেডিসিন সেবা গ্রহণ করেছেন ৪ হাজার ৩২৯ জন। এ পর্যন্ত শুধু কোভিড বিষয়ে স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণ করেছেন ২ লাখ ৫৫ হাজার ১৪৭ জন। প্রতিদিন ৩৫ জন চিকিৎসক ও ১০ জন স্বাস্থ্য তথ্যকর্মকর্তাসহ দুই শিফটে মোট ৯০ জন টেলিমেডিসিন সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, দেশের বিমানবন্দর, নৌ, সমুদ্রবন্দর ও স্থলবন্দর দিয়ে গত ২৪ ঘন্টায় ৩ হাজার ৩১৩ জনসহ সর্বমোট বাংলাদেশে আগত ৮ লাখ ৬১ হাজার ৯৬৩ জনকে স্কেনিং করা হয়েছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার পরিস্থিতি তুলে ধরে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানায়, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২৬ আগস্ট পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় করোনায় এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৩৭ লাখ ৩৯ হাজার ৬০৫ জন এবং এ পর্যন্ত মৃত্যুবরণ করেছেন ৭০ হাজার ৬০৩ জন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ২৬ আগস্ট পর্যন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী সারাবিশ্বে এ পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২ কোটি ৩৭ লাখ ৫২ হাজার ৯৬৫ এবং এ পর্যন্ত ৮ লাখ ১৫ হাজার ৩৮ জন মৃত্যুবরণ করেছেন।