৩৬ কোটি ২১ লাখ পাঠ্যপুস্তক বিনামূল্যে বিতরণ করা হবে

প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের মাঝে সরকার আগামী বছর ৩৬ কোটি ২১ লাখ ৮২ হাজার ২৪৫টি পাঠ্যপুস্তক বিনামূল্যে বিতরণ করবে।

জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) এখন এ সকল বই প্রস্তুত ও বিতরণের কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। ইতোমধ্যে তারা ২০ কোটির অধিক বই স্কুল পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছে দিয়েছে।

এনসিটিবি চেয়ারম্যান অধ্যাপক নারায়ন চন্দ্র সাহা জানান, প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক, মাধ্যমিক, এসএসসি ভোকেশনাল, ইবতেদায়ী, দাখিল ও দাখিল ভোকেশনাল এবং ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী ও দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ৪ কোটি ২৬ লাখ ৩৫ হাজার ৯২৯ জন শিক্ষার্থীর মাঝে এ বই বিতরণ করা হবে।
তিনি জানান, ১ জানুয়ারি নতুন (২০১৭) শিক্ষাবর্ষের প্রথম দিন বই উৎসবের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের হাতে এসব বই তুলে দেয়া হবে।

২০ কোটিরও অধিক অর্থাৎ মোট বইয়ের প্রায় ৬০ ভাগ বই ইতোমধ্যে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছে দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, অবশিষ্ট ১৬ কোটি বই আগামী ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে দেশের সংশ্লিষ্ট জেলা-উপজেলা এমনকি থানা পর্যায়ের প্রত্যন্ত অঞ্চলে পৌঁছে দেয়া হবে।
চেয়ারম্যান বলেন, সৃজনশীল পদ্ধতির জটিলতা নিরসনে সরকার শিক্ষকদের সহায়তার জন্য প্রথমবারের মতো শিক্ষা সহায়িকা গাইড তৈরি করেছে। শিক্ষকরা বইটি অনুসরণ করলে সৃজনশীল পদ্ধতি পড়াতে ও প্রশ্নপত্র তৈরিতে তারা বেশ উপকৃত হবেন।
তিনি বলেন, প্রাথমিক স্তরের শিক্ষকদের জন্য ‘শিক্ষক নির্দেশিকা’ শিরোনামে ৬০ লাখ ১ হাজার ২৪টি এবং মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষকদের জন্য ‘শিক্ষক ও শিক্ষাক্রম গাইড’ শিরোনামে ৪৬ লাখ ৬৬ হাজার ৬৬৪টি বই প্রস্তুত করা হয়েছে।
বর্তমান সরকারের বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণের কথা উল্লেখ করে চেয়ারম্যান বলেন, সরকারের যুগান্তকারী এ সিদ্ধান্তের ফলে এখন প্রতিবছরই শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার হার কমছে এবং প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্তরের প্রায় সব ক্লাসেই শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে।

তিনি বলেন, শিক্ষকগণ যদি শিক্ষা সহায়িকা গাইড ফলো করেন, তাহলে শিক্ষার্থীদের জন্য সৃজনশীল পদ্ধতি বুঝতে আর অসুবিধা হবে না। এতে শিক্ষার্থীদের কাছে ক্লাসগুলো হয়ে উঠবে আরো আনন্দদায়ক। তখন ক্লাসে উপস্থিতি আরো বাড়বে বলেও তিনি আশা করেন।

এনসিটিবি চেয়ারম্যান বলেন, এবার প্রাক-প্রাথমিক স্তরের ৩২ লাখ ৬২ হাজার ৮৬৪ জন শিক্ষার্থীর জন্য ১ কোটি ৫ লাখ ৫ হাজার ৮৬২টি, প্রাথমিক (বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন) স্তরের ২ কোটি ১৭ লাখ ২১ হাজার ১২৯ জন শিক্ষার্থীর জন্য ১০ কোটি ৫২ লাখ ৩৬ হাজার ৭৯৭টি, মাধ্যমিক (বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন) স্তরের ১ কোটি ২০ লাখ ৫৮ হাজার ২৬৮ জন শিক্ষার্থীর জন্য ১৭ কোটি ৬৮ লাখ ৩০ হাজার ৩৬৮টি, ইবতেদায়ী ও দাখিল স্তরের ৫৩ লাখ ৫৭ হাজার ২১ জন শিক্ষার্থীর জন্য ৫ কোটি ৭১ লাখ ৯৭ হাজার ৮৫৫টি, কারিগরি ট্রেড স্তরের ২ লাখ ১০ হাজার ৭৭৫ জন শিক্ষার্থীর জন্য ৯ লাখ ২১ হাজার ১১০টি, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর ২৪ হাজার ৬৪১ জন শিক্ষার্থীর জন্য ৫১ হাজার ৭৮২টি এবং দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ১ হাজার ২৩১ জন শিক্ষার্থীর জন্য ৯ হাজার ৭০৩টি ব্রেইল বই মূদ্রণ ও বাধাই করা হয়েছে।

তিনি জানান, ধারাবাহিকভাবে সকল বই নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে সব বই স্কুল পর্যায়ে পৌঁছে দেয়া হবে।

সুত্র: বাসস