৫৬০টি মসজিদ নির্মাণে অর্থ দিচ্ছে না সৌদি

সৌদি সরকারের সহযোগিতায় দেশের প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় মোট ৫৬০টি মডেল মসজিদ নির্মাণের একটি প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে একনেক। তবে সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ৫৬০টি মসজিদ নির্মাণে সৌদি আরব এক বিলিয়ন ডলার অনুদানের বিষয়টি সঠিক নয়।

যুক্তরাষ্ট্রের ফক্স নিউজের এক খবরে বলা হয়েছে,মসজিদ নির্মাণে বাংলাদেশকে ১০০ কোটি ডলার অনুদানের খবরটি ভিত্তিহীন। কারণ সৌদি সরকার এখনও এই ধরনের কোনো দ্বিপাক্ষিক চুক্তি করেনি। খবরে দাবি করা হয়, আগে ফক্স নিউজের এক খবরে বাংলাদেশের কিছু আলেমের বরাত দিয়ে বলেছে, এই মসজিদগুলো নির্মাণের কোনো যৌক্তিকতা নেই।

সৌদি অর্থায়নের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। তারা হয়তো এই প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে ওয়াহাবিজমকে প্রতিষ্ঠা করতে চায়। এই উদ্যোগে সংখ্যালঘুরা আরও অসহায় ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবে। ফক্স নিউজকে সৌদির সংস্কৃতি ও তথ্য মন্ত্রী ডক্টর আওয়াদ আল-ওয়াদ বলেন, সৌদি কখনওই বাংলাদেশকে মসজিদ নির্মাণে ১০০ কোটি ডলার দেওয়ার আশ্বাস দেয়নি। তেমন কিছু যদি হতো তা নিয়ে চুক্তি হতো, দুই দেশই আনুষ্ঠানিকভাবে এই কথা সংবাদ মাধ্যমকে জানাত।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামিক স্টাডিজ এর সভাপতি আবদুর রশিদের বরাত দিয়ে ফক্স নিউজ বলছে,বাংলাদেশ একটি ধর্ম নিরেপক্ষ দেশ। এখানে মানুষ শান্তিপ্রিয়। তারা অন্যের ধর্শকে শ্রদ্ধা করে। কিন্তু সৌদি আরবের ভাব ধারায় এখানে মসজিদ নির্মাণ করলে ও পরচিালনা করলে ওহাবিজম শক্তভাবে গেড়ে বসবে।

উল্লেখ, গত মাসে পরিকল্পনামন্ত্রী আ ফ ম মোস্তফা কামাল জানিয়েছিলেন, ২০১৭ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে ৫৬০টি মসজিদ নির্মাণের প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হবে। এতে সৌদি সরকার দেবে ৮ হাজার ১৬৯ কোটি টাকার বেশি। আর বাংলাদেশ সরকারের কোষাগার থেকে ব্যয় হবে ৮৯২ কোটি টাকা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে একনেকের বৈঠক প্রকল্পটি অনুমোদন করেছে বলেও ২৫ এপ্রিল পরিকল্পনামন্ত্রী সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে জানান।

সৌদি অনুদানের বিষয়ে মন্ত্রীর এই ঘোষণা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়।

জানা যায়, প্রকল্প পরিকল্পনা অনুসারে প্রতিটি মসজিদ হবে একই মডেলের। ৫ বা ৬তলা বিশিষ্ট এই মডেল মসজিদের জন্য জায়গা লাগবে প্রায় ৪০ শতক। প্রতিটি মসজিদ তৈরিতে প্রাথমিকভাবে সম্ভাব্য ব্যয় প্রায় সাড়ে ১৪ কোটি টাকা ধরা হয়েছে। এসব মসজিদ নির্মাণে ইতিমধ্যে ৮০ ভাগ জায়গা নির্বাচন করা হয়েছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করা হয়েছে।

দেশের সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুসারে, ২০১৬ সালের জুন মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সৌদি আরব সফর করেন। ওই সফরে প্রধানমন্ত্রী সৌদি বাদশাহর সঙ্গে আলোচনায় দেশব্যাপী মডেল মসজিদ নির্মাণের বিষয়টি তুলে ধরে সহযোগিতার প্রস্তাব করেন।

আজকের বাজার:এলকে/এলকে/১৩ মে,২০১৭