৬৭% মুনাফা প্রবৃদ্ধি আইডিএলসির

চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জানুয়ারি’১৭-মার্চ’১৭) আইডিএলসি ফাইন্যান্স লিমিটেড আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৬৭ শতাংশ বেশি মুনাফা করেছে। মুনাফার এই উচ্চ প্রবৃদ্ধিতে প্রধান ভূমিকা রেখেছে পুঁজিবাজার।

আলোচিত প্রান্তিকে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ থেকে মুনাফা এবং সহযোগী প্রতিষ্ঠান আইডিএলসি সিকিউরিটিজের কমিশন আয়-দুটোই ব্যাপকভাবে বেড়েছে। গত বছরের প্রথম প্রান্তিকে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ থেকে আইডিএলসির মুনাফা হয়েছিল ৯ কোটি ১০ লাখ টাকা। এ বছর তা ২৬৬ শতাংশ বেড়ে ৩৩ কোটি ৩০ লাখ টাকায় উন্নীত হয়েছে। অন্যদিকে গত বছর কমিশন ও অন্যান্য খাতে আয় ছিল ২৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা। এ বছর তা বেড়ে হয়েছে ৩৫ কোটি ৬০ লাখ টাকা। কমিশন আয়ে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৪৫ শতাংশ।

প্রান্তিক আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ পরবর্তী এক সংবাদ সম্মেলনে আইডিএলসি ফাইন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ আরিফ খান এ কথা বলেছেন।বুধবার,২৬এপ্রিল বিকালে পুরানা পল্টনে আইডিএলসির সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

উল্লেখ, আলোচিত প্রান্তিকে দুই সহযোগী প্রতিষ্ঠানের মুনাফাসহ আইডিএলসি ফাইন্যান্স সমন্বিতভাবে ৬০ কোটি ১০ লাখ টাকা নিট মুনাফা করেছে। গত বছর প্রথম প্রান্তিকে আইডিএলসির সমন্বিত মুনাফা ছিল ৩৬ কোটি ১০ লাখ টাকা।

তবে পুঁজিবাজারের এই উর্ধগতি না থাকলেও আইডিএলসির মুনাফার প্রবৃদ্ধি ব্যাহত হবে না বলে আশা প্রকাশ করেছেন মো: আরিফ খান। তিনি বলেন, কোনো বছর পুঁজিবাজার থেকে বেশি মুনাফা হবে, আবার কোনো বছর মূল ব্যবসা থেকে আসবে বেশি মুনাফা। উৎস যেটিই হোক, মুনাফার প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আমি আশাবাদী।

পুঁজিবাজারের সম্ভাবনা সম্পর্কে তিনি বলেন, নানা কারণে আগামী দিনেও পুঁজিবাজারে উর্ধগতি থাকবে বলে আশা করা যায়। আমাদের সামষ্টিক অর্থনীতি খুবই ভালো পারফর্ম করছে। অন্যদিকে আবাসন খাত ‌এবং ভোগ্য পণ্য ও স্বর্নের বাজারে চলছে মন্দা। এমন পরিস্থিতিতে পুঁজিবাজারই বিনিয়োগের সবচেয়ে ভালো বিকল্প হিসেবে বিবেচিত হয়।

কোনো কারণে পুঁজিবাজারের গতিশীলতা কমে গেলেও আইডিএলসির মুনাফা তেমন কমবে না বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। এ বিষয়ে তিনি বলেন, গত কয়েক বছর দেশের পুঁজিবাজারে মন্দা থাকলেও আইডিএলসি এই বাজার থেকে গড়ে প্রতিবছর ১৫ শতাংশের বেশি মুনাফা করতে সক্ষম হয়েছে। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, আইডিএলসির একটি শক্তিশালী গবেষণা সেল রয়েছে। তারা কোনো কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করার আগে ওই কোম্পানির ব্যবসার ও মুনাফার ট্র্যাক রেকর্ড দেখেন; কোম্পানিটির প্রধান নির্বাহী সম্পর্কে খোঁজখবর নেন; কোম্পানিতে করপোরেট কালচার কতটুকু আছে তা বুঝার চেষ্টা করেন। পাশাপাশি কোম্পানিটি যে খাতে ব্যবসা করে, সে খাতের ভবিষ্যত সম্ভাবনা কেমন তা-ও বিবেচনায় নেন।

আরিফ খান বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, কোনো কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করা মানে শুধুই ওই কোম্পানির শেয়ার কেনা নয়, বরং কোম্পানিটির অংশীদার হাওয়া।

আইডিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো: আরিফ খান বলেন, তাদের সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি আইডিএলসি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের কার্যক্রম পুরোপুরি শুরু হওয়ার পর মুনাফার প্রবৃদ্ধিতে নতুন মাত্রা যোগ হবে। তাদের প্রস্তাবিত বে-মেয়াদি মিউচুয়াল ফান্ড ‘আইডিএলসি ব্যালান্সড ফান্ড’ ইতোমধ্যে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি থেকে নিবন্ধন সনদ পেয়েছে। আগামী মাসের শেষ নাগাদ এটি চূড়ান্ত অনুমোদন পেতে পারে। শুরুতে এই ফান্ডের আকার হবে ৫০ কোটি টাকা।

আলোচিত প্রান্তিকে কোম্পানিটির ঋণ বিতরণে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ৯ শতাংশ। এ প্রান্তিক শেষে প্রতিষ্ঠানটির বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা। গত বছর প্রথম প্রান্তিক শেষে যার পরিমাণ ছিল ৬ হাজার ২২৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৪৪ শতাংশ বা ২ হাজার ৮৭৯ টাকা ঋণ গেছে এসএমই খাতে। আর ভোক্তা ঋণে গেছে ৩৪ শতাংশ, যার পরিমাণ ২ হাজার ২২৪ কোটি টাকা।

খাতগুলোর মধ্যে এসএমই খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১১ শতাংশ। আর করপোরেট ঋণে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১০ শতাংশ। আলোচিত সময়ে আমানতে ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। বার্ষিক হিসাবে সম্পদের বিপরীতে আইডিএলসির আয় হতে পারে ২.৯ শতাংশ। আর মূলধনের বিপরীতে আয় দাঁড়াতে পারে ২৪ দশমিক ২ শতাংশ।

অনুষ্ঠানে আরিফ খান বলেন, আইডিএলসি এ প্রান্তিকে যে মুনাফা করেছে, তা দেশের ২০ টি ব্যাংকের মুনাফার চেয়ে বেশি।

আজকের বাজার:এলকে/এলকে/২৭এপ্রিল,২০১৭