স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজির পদত্যাগ চেয়ে নোটিশ

করোনায় মানুষের স্বাস্থ্যগত বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণে ব্যর্থ হওয়াই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজির পদত্যাগ চেয়ে নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী।

বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল ) সকালে ই- মেইল যোগে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজি কাছে এ নোটিশ প্রেরণ করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোঃ জে. আর. খান (রবিন)।

তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে ডাক্তার, নার্স, পুলিশ, সাংবাদিক, প্রশাসনিক কর্মকর্তাসহ ৩৩২৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ইতিমধ্যে ১১০ জন মৃত্যু বরন করেছেন।

করোনা মোকাবেলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সহ সংলিষ্ট ব্যক্তিবর্গ যথাযথ প্রদক্ষেপ নিতে প্রতিনিয়ত ব্যর্থ হচ্ছেন। তাই সাধারন মানুষের পর সবচেয়ে বেশি সংখ্যক ডাক্তার আক্রান্ত হয়েছেন। এই ব্যর্থতার দায় নিয়ে অত্র নোটিশ পাওয়ার পর পরই যথা শীঘ্রই পদত্যাগ করার জন্য বলা হয়েছে।

নোটিশের অনুলিপি জন প্রশাসন মন্ত্রনালয়, সচিব, অর্থ মন্ত্রনালয়, সচিব, স্বাস্থ্য মন্ত্রালয়ের (স্বাস্থ্য সেবা) বরাবরেও প্রেরণ করা হয়।

রবিন বলেন, করোনা ভাইরাসের উৎপত্তি স্থল চীনের ওহান শহরে হলেও বর্তমানে গোটা বিশ্বে প্রায় এক লাখ ৮০ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আক্রান্ত ২৬ লাখের বেশি। এখন বাংলাদেশ সহ সারা বিশ্বজুড়ে এর বিস্তৃতি বেড়েই চলছে। এই ভাইরাসের কারণে মানুষ প্রতিনিয়ত মৃত্যুর মুখোমুখি হচ্ছে।

করোনা মোকাবেলায় বাংলাদেশ সরকার যাবতীয় প্রদক্ষেপ গ্রহন করেছেন। বিশেষ করে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী এ ভাইরাস মোকাবেলা করা সহ দেশের মানুষকে সুরক্ষিত রাখার লক্ষ্যে নানা রকম সুযোগ সুবিধা প্রদান সহ আন্তরিক ভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছেন।

আইনজীবী জানান, দেশের একাধিক জাতীয় দৈনিক প্রত্রিকা ও অনলাইন নিউজ প্রোর্টালে প্রকাশিত খবরের আলোকে জানতে পারি করোনা মোকাবেলায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সহ সংলিষ্ট ব্যক্তিবর্গ যথাযথ প্রদক্ষেপ নিতে প্রতিনিয়ত ব্যর্থ হচ্ছেন।

এ ব্যর্থতার কারনে ২২ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের ১৭০ জন ডাক্তার,১০০ জন পুলিশ,২৮ জন সাংবাদিক ৭ জন প্রশাসনিক কর্মকর্তা, নার্স সহ ৩৩২৮ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ইতিমধ্যে ১১০ জন মৃত্যুবরন করেছেন।

এ ভাইরাস ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি এবং এক জন গোষ্ঠী থেকে অন্য জনগোষ্ঠীতে সংক্রামিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও ডাক্তারদেরকে ইতি পূর্বে স্বয়ংসম্পূর্ন বা কার্যত ব্যক্তিগত নিরাপত্তা প্রোটেকশন ইকোইপমেন্ট সরঞ্জামাদি অর্থাৎ (পি পি ই) সরবরাহ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। তাছাড়া (আইনশৃঙ্খলা) ডিসিপ্লিনারী ফোর্স, সাংবাদিক ও করোনা মোকাবেলায় সংশ্লিষ্টদের জন্য যথাযথ ব্যক্তিগত নিরাপত্তার সরঞ্জামাদির ব্যবস্থা গ্রহন করতে ব্যর্থ হয়েছেন। যদিও দেশের সকল মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষার লক্ষ্যে যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহন করার ক্ষেত্রে তিনি ক্ষমতাবান ও দায়িত্বশীল বটে। এর দায় তিনি কোন ভাবে এড়াতে পারবেন না।

অন্যদিকে বাংলাদেশ সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৫(ক), ১৮(১) এবং ৩২ অনুচ্ছেদে স্বাস্থ্য সেবার ব্যাপারে উল্লেখ রয়েছে। তন্মধ্যে অনুচ্ছেদে ৩২ অনুযায়ী স্বাস্থ্য সেবা মানুষের মৌলিক অধিকার যা নিশ্চিত করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের।

আইনজীবী আরো বলেন সার্বিক বিবেচনায় প্রফেসর মোঃ আবুল কালাম আজাদ তার পদ থেকে এর পূর্বেই পদত্যাগ করা যুক্তিযুক্ত ছিল।কিন্তু তিনি তা করেন নাই, তাই অত্র নোটিশ প্রেরন করে নোটিশ প্রাপ্তির পর যথাশীঘ্রই সম্ভব পদত্যাগ করার জন্য অনুরোধ করা হয়। অন্যথায় তার বিরুদ্ধে দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে এবং তার অবিচক্ষন কার্যকালাপের জন্য সৃষ্ট সব ধরনের ক্ষতির জন্য তিনি দায়ী থাকিবেন।