জাতিসংঘের শীর্ষ আদালতের আদেশ উপেক্ষা করেই রাফাতে ইসরাইলের হামলা অব্যাহত

জাতিসংঘের শীর্ষ আদালত গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফা শহরে সামরিক অভিযান বন্ধ করতে ইসরায়েলকে নির্দেশ দেয়া সত্ত্বেও দেশটি সেখানে অব্যাহত হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
বরং ইসরায়েল পুরো গাজা উপত্যকাজুড়ে হামলা আরো জোরদার করেছে।
শনিবার ইসরায়েলের স্থল ও বিমানবাহিনী রাফা শহরে ব্যাপক হামলা চালায়। তারা যুদ্ধবিমান থেকে বোমা ও কামান থেকে গোলা নিক্ষেপ করে।
রোববার সকালেও ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় হামলা চালিয়েছে এবং ইসরায়েলি সেনা ও হামাসের মধ্যে লড়াই আরো তীব্র হয়েছে।
আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) গত ১০ মে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে দক্ষিণ আফ্রিকার করা একটি আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে রাফায় হামলা বন্ধের এ নির্দেশনা দেয়া হয়। একই সঙ্গে গাজায় পর্যাপ্ত ত্রাণ প্রবেশ নিশ্চিত করতে রাফা ক্রসিং খুলে দিতেও ইসরায়েলকে নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
জাতিসংঘের সর্বোচ্চ এই আদালতের আদেশ মেনে চলার আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে সদস্যদেশগুলোর। তবে আদেশ প্রতিপালনে বাধ্য করার জন্য প্রয়োজনীয় জনবল নেই এই আদালতের।
এদিকে একই সময়ে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে যুদ্ধবিরতি আলোচনা পুনরায় শুরু করা নিয়েও প্রশ্ন রয়ে গেছে।
শনিবার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন ইসরায়েলি কর্মকর্তা বলেছেন, যুদ্ধবিরতির লক্ষ্যে আগামী দিনগুলোতে স্থবির আলোচনা পুনরায় শুরুর ইচ্ছে সরকারের রয়েছে।
তবে হামাসের সিনিয়র সদস্য ওসামা হামদান আল জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে বলেছেন, এ বিষয়ে মধ্যস্থতাকারীরা তাকে কিছু অবহিত করেনি।
তিনি আরো বলেছেন, এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে বাস্তবিক কিছুই নেই। ইসরায়েলের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কেবল আলোচনা আসছে।
এদিকে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকার জিম্মি মুুক্তি নিয়ে তীব্র আভ্যন্তরীণ চাপে রয়েছেন। শনিবারও তেলআবিবে জিম্মি মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।
ইসরায়েলি কর্মকর্তা চুক্তি নিয়ে  বিস্তারিত কিছু না বললেও দেশটির সংবাদ মাধ্যমে বলা হয়েছে, গোয়েন্দা প্রধান ডেভিড বার্নিয়া প্যারিসে যুক্তরাষ্ট্র ও কাতারের মধ্যস্থতাকারীদের সাথে আলোচনায় নতুন কাঠামোর বিষয়ে সম্মত হয়েছেন।
এছাড়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ওয়েস্ট পয়েন্টে মার্কিন সামরিক একাডেমিতে বলেছেন, তার প্রশাসন জিম্মিদের মুক্ত করতে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির জন্যে জরুরি কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
ফিলিস্তিনী সংগঠন হামাস গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে আকস্মিক বড়ো ধরনের হামলা চালায়। এ সময়ে তারা প্রায় এক হাজার ১৭০ ইসরায়েলীকে হত্যা এবং ২৫০ জনকে জিম্মি করে। এখনও হামাসের কাছে ১২১ জন জিম্মি হিসেবে আটক রয়েছে।
এদিকে ৭ অক্টোবর ইসরায়েল গাজায় প্রতিশোধমূলক পাল্টা হামলা শুরু করে যা এখনও চলছে। গাজায় ইসরায়েলের অব্যাহত এ হামলায় এ পর্যন্ত ৩৫ হাজার ৯০৩ ফিলিস্তিনী নিহত হয়েছে। এদের অধিকাংশ নারী ও শিশু। (বাসস ডেস্ক)