দশ জন নিয়ে খেলেও সিটির জয়, পরাজয় থেকে বেরিয়ে এসেছে ইউনাইটেড

উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে শনিবার নটিংহ্যাম ফরেস্টকে ২-০ গোলে পরাজিত করেছে ম্যানচেস্টার সিটি। রড্রির লাল কার্ডে দ্বিতীয়ার্ধে সিটি ১০ জন নিয়ে খেলেও জয় ধরে রেখে প্রিমিয়ার লিগে পাঁচ পয়েন্টে এগিয়ে টেবিলের শীর্ষস্থান অক্ষুন্ন রেখেছে। এদিকে বার্নলির বিপক্ষে ১-০ গোলের কষ্টার্জিত জয়ের মাধ্যমে পরাজয়ের বৃত্ত থেকে অবশেষে বেরুতে পেরেছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড।

ইত্তিহাদ স্টেডিয়ামে ম্যাচ শুরুর ১৫ মিনিটের মধ্যে ফিল ফোডেন ও আর্লিং হালান্ডের গোলে সিটি ২-০ ব্যবধানে লিড নেয়। এই ব্যবধান আর ঘোঁচাতে পারেনি সফরকারী ফরেস্ট। এর ফলে ছয় ম্যাচে শতভাগ জয় নিশ্চিত করলো সিটিজেনরা।
পেপ গার্দিওলার দল এনিয়ে সব ধরনের প্রতিযোগিতায় টানা ২০ ম্যাচে জয়ের কৃতিত্ব দেখালো। কিন্তু রড্রির পাগলামির কারনে শেষ মুহূর্তে ফরেস্টের কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছিল সিটি। দ্বিতীয়ার্ধ শুরুর ৬০ সেকেন্ডেরও কম সময়ের মধ্যে স্প্যানিশ তারকা রড্রি প্রতিপক্ষ ইংলিশ মিডফিল্ডার মরগান গিবস-হোয়াইটের গলা চেপে ধরলে লাল কার্ড দেখে মাঠত্যাগে বাধ্য হন। এই ফাউলের শাস্তি হিসেবে হয়তোবা তাকে তিন ম্যাচ নিষেধাজ্ঞার খড়গে পড়তে হতে পারে। আগামী মাসে প্রিমিয়ার লিগে আর্সেনাল সফরে তাকে দেখা যাচ্ছেনা, এটা প্রায় নিশ্চিত।

ম্যাচ শেষে গার্দিওলা বলেছেন, ‘প্রথমার্ধে ম্যাচটি ছিল একেবারেই ব্যতিক্রম। দ্বিতীয়ার্ধেও আমরা দারুনভাবে প্রতিরোধ করেছি। কারন ৫২ মিনিট আমাদের ১১ জনের বিরুদ্ধে ১০ জন নিয়ে খেলতে হয়েছে। সে কারনে বিষয়টি মোটেই সহজ ছিলনা। আশা করছি রড্রি এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিবে। তাকে অবশ্যই আবেগকে নিয়ন্ত্রন করতে হবে।’
ম্যাচে প্রথম ভাগে সিটি কোনদিক থেকে কোন ছাড় দেয়নি। তারই ধারাবাহিকতায় ৭ মিনিটে কাইল ওয়াকারের ক্রস থেকে ফোডেনের ভলিতে এগিয়ে যায় স্বাগতিকরা। ইনজুরি সমস্যার কারনে উল্ফস থেকে দলে আসা ম্যাথুস নুনেসের কাল সিটির হয়ে লিগ ম্যাচে প্রথমবারের মত মূল একাদশে খেলার সুযোগ হয়েছিল। দ্বিতীয় গোলে সহযোগিতা করে তিনি গার্দিওলার আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন। ফোডেনের সাথে বল আদান প্রদান করে নুনেস হালান্ডের দিকে পাস করে দেন। মৌসুমের নবম গোল আদায় করে নিতে কোন ভুল করেননি হালান্ড।
রড্রির লাল কার্ডের আগে ইউরোপীয়ান চ্যাম্পিয়নরা আর কোন বিপদে পড়েনি। ইন-ফর্ম নাইজেরিয়ান স্ট্রাইকার টাইও আয়োনিয়ি ফরেস্টের হয়ে সেরা সুযোগটি হাতছাড়া করেন। চাপে থাকা এডারসনের মাথার উপর দিয়ে বল বাইরে পাঠিয়ে দেন এই নাইজেরিয়ান।

ইউনাইটেড এখনো সিটির তুলনায় নয় পয়েন্ট পিছিয়ে টেবিলের অষ্টম স্থানে আছে। কিন্তু টানা তিন পরাজয়ের পর কিছুটা হলেও কোচ এরিক টেন হাগকে তারা স্বস্তি দিতে পেরেছে। বিরতির ঠিক আগে জনি ইভান্সের পাস থেকে পর্তুগীজ তারকা ব্রুনো ফার্নান্দেসের দুর্দান্ত গোলে রেড ডেভিলসদের জয় নিশ্চিত হয়। এক গোলে এগিয়ে থেকেও টার্ফ মুরে ইউনাইটেডের বাকি সময়টা চাপের মধ্যেই থাকতে হয়েছে। জেকি আমডুনি প্রথমার্ধে একটি শট পোস্টে লাগান। প্রিমিয়ার লিগে ফিরে আসার পর থেকে ক্লারেটসরা এখনো জয়বিহীন রয়েছে।

ইউনাইটেড বস টেন হাগ বলেছেন, ‘আজকের ম্যাচে জয়টা জরুরী ছিল। তোমাকে লড়াই করে ফিরে আসার পথ খুঁজে বের করতে হবে। এই জয়ে ড্রেসিং রুমের চেহারা পাল্টে গেছে। সবাই আজ একসাথে লড়াই করেছে।’
ধুকতে থাকা এভারটন ব্রেন্টফোর্ডকে ৩-১ গোলে হারিয়ে এবারের মৌসুমে লিগে প্রথম জয় নিশ্চিত করেছে। একইসাথে তিন পয়েন্ট অর্জণ করে রেলিগেশন জোন থেকেও উপরে উঠে এসেছে।  ৬ মিনিটে আবদুলায়ে ডকুরের গোলে এগিয়ে যায় সিন ডায়চের দল। ২৮ মিনিটে ম্যাচের গতির বিরুদ্ধে গিয়ে মাথিয়াস জেনসেন ব্রেন্টফোর্ডকে সমতায় ফেরান। ৬৭ মিনিটে ডুইট ম্যাকনিলের কর্ণার থেকে জেমস টারকোসি আবারো এভারটনকে এগিয়ে দেন। চার মিনিট পর ঠান্ডা মাথার ফিনিশিংয়ে বদলী খেলোয়াড় ডোমিনিক কালভার্ট-লুইস এভারটনের বহুল প্রতিক্ষিত তিন পয়েন্ট নিশ্চিত করেন।
উল্ফসের সাথে ১-১ গোলে ড্র করে প্রিমিয়ার লিগে প্রথম পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে লুটন। তবে জয়ের সুবর্ন সুযোগ তারা হাতছাড়া বরেছে। সেলহার্স্ট পার্কে ক্রিস্টাল প্যালেস বনাম ফুলহ্যামের মধ্যকার ম্যাচটি গোলশুন্য ড্র হয়েছে। (বাসস/এএফপি)