ভারত বন্যা : উদ্ধার অভিযান চালাতে ৩৮টি এনডিআরএফ টিম মোতায়েন

ভারী বর্ষণের ফলে বন্যা এবং ভূমিধ্বসে স্বাভাবিক জীবনযাপন ব্যাপকভাবে ব্যাহত হওয়ায় উত্তরাঞ্চলীয় বিভিন্ন রাজ্যে উদ্ধার অভিযান চালানোর জন্য মোট ৩৮টি ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্স (এনডিআরএফ) টিম মোতায়েন করা হয়েছে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৫ টি দল পাঞ্জাবে, ১২ টি উত্তরাখন্ড এবং ১১ টি হিমাচল প্রদেশে মোতায়েন করা হয়েছে। টানা তিন দিন ধরে বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় এই অঞ্চলটি হাঁটু পর্যন্ত পানিতে তলিয়ে যায় এবং এখন পর্যন্ত ২৮ জনেরও বেশি লোক প্রাণ হারিয়েছে। অবিরাম বর্ষণে নগর ও শহরের অনেক রাস্তা ও ভবন হাঁটু পানিতে তলিয়ে গেছে। ভারতের আবহাওয়া বিভাগ হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখন্ড, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, জম্মু ও কাশ্মীর, রাজস্থান, দিল্লি এবং এর আশেপাশের অঞ্চলগুলিতে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে আরও বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে।

এনডিটিভি আজ জানিয়েছে, হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখন্ড এবং দিল্লির লোকেরা অনলাইনে দুর্যোগের বিভিন্ন ভীতিকর ছবি শেয়ার করেছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে যে, বিভিন্ন যানবাহন কাগজের নৌকার মতো ভেসে যাচ্ছে, বন্যার পানি আবাসিক এলাকায় ঢুকে পড়ছে ও বহু জায়গায় নদী তীরের স্থাপনা তলিয়ে গেছে।
অবিরাম বৃষ্টির কারণে হিমাচল প্রদেশে, ভূমিধস এবং আকস্মিক বন্যায় ঘরবাড়ি ও অকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এখানে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিঘিœত হয়েছে। রাভি, বিয়াস, সাতলুজ, সোয়ান এবং চেনাবসহ সব প্রধান নদী প্লাবিত হওয়ায় মানালি, কুল্লু, কিন্নর এবং চাম্বাতে আকস্মিক বন্যায় কিছু দোকানপাট ও যানবাহনও ভেসে গেছে।
মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখু রাজ্যের সকল বাসিন্দাকে আগামী ২৪ ঘন্টা বাড়িতে থাকার অনুরোধ করেছেন, কারণ ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
হিমাচল প্রদেশের মন্ত্রী জগৎ সিং নেগি বলেন, রাজ্যের  প্রধান জাতীয় মহাসড়ক, জেলা এবং সংযোগ সড়কসহ ১ হাজার ৩০০টিরও বেশি  রাস্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
প্রতিবেশী উত্তরাখন্ড রাজ্যেও ভূমিধস এবং আকস্মিক বন্যা এবং নদী ও ¯্রােতের পানিরস্তর বিপদসীমা অতিক্রম করার খবর পাওয়া গেছে। ভারী বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হওয়ায় গুরগাঁও এবং দিল্লির সমস্ত স্কুল আজ বন্ধ রাখা হয়েছে।  ট্রাফিক জ্যাম এড়াতে গুরগাঁও প্রশাসন কর্পোরেট হাউসগুলিকে আজ বাড়িতে থেকে কাজ করার পরামর্শ দিয়েছে।

সূত্র জানিয়েছে, এছাড়াও, হরিয়ানা হস্তনিকুন্ড ব্যারেজ থেকে যমুনা নদীতে এক লাখ কিউসেক পানি ছাড়ার পরে দিল্লি সরকার বন্যাপ্রবণ অঞ্চলগুলি পর্যবেক্ষণ করার জন্য ১৬ টি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপন করেছে। রাজস্থান, পাঞ্জাব এবং হরিয়ানার বেশ কয়েকটি অংশে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে নিচু এলাকায় ব্যাপক জলাবদ্ধতা এবং বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করেছে।