এক এগারোর কুশীলবরা এখনও সক্রিয়: তথ্যমন্ত্রী

বিরাজনীতিকরণের অংশ হিসাবে এক-এগারোর সৃষ্টি করা হয়েছিল মন্তব্য করে তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, আজকেও সেই প্রচেষ্টা সূক্ষ্মভাবে আছে। যারা বিরাজনীতিকরণ করতে চায় তারাই ওয়ান ইলিভেনের সুবিধাভোগী। এখনও একটি গোষ্ঠী আবারো রাজনীতিকদের চরিত্র হননের চেষ্টা করছে। কিছু কাগজপত্র (পত্রিকা) দেখলে আপনারা দেখতে পাবেন সেখানে প্রায়শই রাজনীতিকদের চরিত্র হনন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। বিরাজনীতিকরণের প্রচেষ্টায় যারা যুক্ত ছিলেন সেই কুশীলবরা এখনও সক্রিয়। মাঝে মাঝে একত্রিত হয়।

বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ডা: সৈয়দ মোদাচ্ছের আলীর লেখা ‘আমার দেখা ওয়ান ইলেভেন’ শীর্ষক বইয়ের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সিনিয়র সাংবাদিক সৈয়দ বোরহান কবিরের সভাপতিত্বে এবং বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের-বিএফইউজে(একাংশ) মহাসচিব শাবান মাহমুদের পরিচালনায় এতে গ্রন্থের লেখক প্রধানমন্ত্রীর সাবেক উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা: সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী, দৈনিক যুগান্তরের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক এবং জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক নঈম নিজাম, স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের মহাসচিব ডা: এম এ আজিজ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

বিএনপি’র লাগামহীন দুর্নীতি এবং সরকার পরিচালনায় অব্যবস্থাপনার কারণেই ওয়ান ইলেভেন সৃষ্টি হয়েছিল মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, তখন হাওয়া ভবন তৈরি করে সরকার পরিচালনা করা হয়। তাদের সন্ত্রাসী কর্মকান্ড, নৈরাজ্য, জঙ্গিবাদের উত্থানের কারণে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। রাজনীতিকদের জনসমক্ষে হেয় প্রতিপন্ন করা হয়। তখন বাবার অপরাধে মেয়েকেও গ্রেফতার করা হয়েছিল।

হাছান মাহমুদ বলেন, বঙ্গবন্ধুকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে না পেরে তাকে হত্যা করা হয়। এখনও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কৌশলের ও নেতৃত্বের গুনাবলীর কাছে হরে গিয়ে তারা চক্রান্ত করছে। বিএনপি এবং তাদের দোসররা শেখ হাসিনাকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়েছে। তারা এখন ওয়ান ইলেভেনের কুশিলবদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। তারা নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। যে কানো উপায়ে তারা আওয়ামী লীগকে বিতাড়িত করতে চায়।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিএনপি নেতারা মাঝে মাঝে বলেন, শেখ হাসিনার পরিণতি পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের মতো হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একমাত্র আল্লাহকে ছাড়া আর কাউকে ভয় পান না।

মন্ত্রী বলেন, ওয়ান ইলেভেনে শেখ হাসিনার মুক্তির পর গণতন্ত্রের মুক্তি হয়। শেখ হাসিনার হাত ধরে বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হয়েছে। বাংলাদেশ আজ মর্যাদাশীল রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনা এখন শুধু আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং দেশের প্রধানমন্ত্রীই নন, তিনি পৃথিবীর অনুকরনীয় প্রধানমন্ত্রী এবং সফল রাষ্ট্রনায়ক। তিনি বিশ্ব নেতা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছেন।

তিনি বলেন, যে রাজনীতিবিদ সাহসী নন তিনি এক সময় রাজনীতি থেকে হারিয়ে যান। বঙ্গবন্ধুর সাহসী নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ এবং বাঙালি জাতিকে প্রচন্ড ভালোবাসতেন। সূর্যসেনকে একজন ডাকাত হিসেবে ফাঁসি দেয়া হয়। কিন্তু ইতিহাসের পাতায় সূর্যসেন স্মরণীয় হয়ে আছেন।

আওয়ামী লীগ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ১৭৫৭ সালে নবাব সিরাজ-উদ-দৌলাকে গ্রেফতারের পরে প্রতিপক্ষ মিষ্টি বিতরণ করে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পরেও পরবর্তী সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় মিষ্টি বিতরণ করা হয়। ওয়ান ইলেভেনের সময় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাকেও গ্রেফতারের পরে মিষ্টি বিতরণ করা হয়।

অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলীকে ‘আমার দেখা ওয়ান ইলেভেন’ শিরোনামে বই লেখার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, সেদিন কি ঘটেছিল তা মানুষকে জানানোর জন্য এই ধরনের একটি বইয়ের প্রয়োজন ছিল।

আজকের বাজার/এমএইচ