আফগান প্রেসিডেন্টের সমাবেশে বোমা হামলা, নিহত ২৪

আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলে প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির সমর্থনে আয়োজিত সমাবেশে মোটরসাইকেল আরোহীর আত্মঘাতী বোমা হামলায় কমপক্ষে ২৪ জন নিহত এবং ৩১ জন আহত হয়েছেন। তবে, সমাবেশস্থলে উপস্থিত থাকলেও ঘানির কোনো ক্ষতি হয়নি বলে জানিয়েছেন তার সরকারের সামবেশ প্রধান।

এ ঘটনার ঘণ্টাখানেকের মধ্যে কাবুলের মার্কিন দূতাবাসের কাছে আরেকটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটলেও সে বিষয়ে তাৎক্ষণিক কিছু জানা যায়নি। আর কেউ হামলার দায়ও স্বীকার করেনি।

আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর আফগানিস্তানে হতে যাওয়া প্রেসিডেন্সি নির্বাচনের কয়েকদিন আগে হামলার ঘটনা ঘটলো। এর আগে, তালেবানরা নির্বাচন এলাকা ও নির্বাচনী সমাবেশগুলো টার্গেট করা হচ্ছে বলে হুশিয়ারি দিয়েছিল।

মঙ্গলবারের আত্মঘাতী হামলায় উত্তর পারওয়ান প্রদেশের চরাকার শহরের উপকণ্ঠে আয়োজিত ঘানির নির্বাচনী সমাবেশের প্রবেশমুখে হামলাকারী মোটরসাইকেলে নিয়ে আসা বিস্ফোরকসহ ধাক্কা দেয়।

স্থানীয় কর্মকর্তা ডা. কাসিম সানগিন বলেন, হতাহতদের মধ্যে অনেক মহিলা ও শিশু রয়েছে।

পারওয়ান সরকারের মুখপাত্র ওয়াহিদা শাহকার বলেন, সমাবেশ শুরু হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছিল।

কাবুল পুলিশ প্রধানের মুখপাত্র ফিরদৌস ফারামার্জ বলেন, কাবুলের কেন্দ্রস্থলে মাসউদ স্কয়ারে ঘটে যাওয়া বিস্ফোরণে হতাহতের বিষয়ে তাত্ক্ষণিক কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। ঘটনাস্থলের কাছাকাছি আফগান সরকারের বেশ কয়েকটি মন্ত্রণালয়সহ ন্যাটো এবং আমেরিকান অফিসগুলো অবস্থিত।

উপসাগরীয় আরব রাষ্ট্র কাতারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-তালেবানদের মধ্যে মাসব্যাপী আলোচনা শেষে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘোষণার পর গত সপ্তাহে আফগানিস্তানের নির্বাচনের প্রচারাভিযান শুরু হয়েছে।

আলোচনা ও চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার সময়গুলোতে বেশিরভাগ প্রেসিডেন্ট পদ প্রার্থী তাদের প্রচারণা স্থগিত রেখেছিলেন বলে জানিয়েছেন মার্কিন শান্তি দূত জালমে খলিলজাদ।

সেপ্টেম্বরের শুরুতে ট্রাম্পের টুইটগুলোতে এ চুক্তি ও আলোচনাকে ‘মৃত’ বলে ঘোষণা করে নির্বাচনী প্রচারণা চালু করতে বলা হয়।

খলিলজাদ ও তালেবানদের মধ্যে আলোচনার সময় পাশ কাটিয়ে যাওয়া ঘানি সঙ্গে সঙ্গে প্রচারাভিযান শুরু করেছিলেন এবং প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দাবিতে অবিচল থাকেন।

খলিলজাদ ও ঘানির কিছু প্রতিদ্বন্দ্বী শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নের সময় দেশ পরিচালনার জন্য একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রতিষ্ঠার কথা বলেছিলেন।

আলোচনা বাতিল হওয়ার পর, আফগানিস্তানে সহিংসতা বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করা হয়েছিল।

তালেবানরা নির্বাচনের বিরোধিতা করেছে এবং আলোচনার জন্য ঘানি সরকারের পাঠানো প্রতিনিধিদের সাথে দেখা করতেও অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তারা যুদ্ধবিরতিতে রাজি হতেও অস্বীকৃতি জানায়।

তবে সাম্প্রতিক সময়ে কাবুলে ঘটা দুটি হামলার কারণে ট্রাম্পের সাথে তালেবানদের সমঝোতার আলোচনা বন্ধ হয়ে যায়। এ হামলায় নিহত হওয়া দুই ন্যাটো সেনার মধ্যে একজন আমেরিকান ছিলেন। এছাড়াও সোমবার আফগানিস্তানে নিহত হয়েছেন আরও এক মার্কিন সেনা। তথ্য-ইউএনবি

আজকের বাজার/এমএইচ