তীব্র শীতে নেত্রকোনায় বোরো চাষ ব্যাহত

মাসব্যাপী বয়ে চলা তীব্র শীতে শ্রমিকেরা মাঠে নেমে কৃষিকাজ করতে পারছেন না বলে নেত্রকোনার দুর্গাপুরে এবার চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে বোরো চাষ।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এবারের অসহনীয় শীত, কনকনে বাতাস ও কুয়াশার মাঝে শ্রমিকরা কাদা মাটির কৃষি কাজে খুবই অনাগ্রহ দেখাচ্ছে। শীতের তীব্রতা না থাকলে কৃষি শ্রমিকরা ৩শ টাকা মজুরি নিয়ে সারাদিন জমিতে কাজ করতেন। এ বছর শীতের এ সময়ে ওই শ্রমিকরা ৫শ টাকা মজুরিতেও দিনব্যাপী কৃষি কাজে সহজে নামতে চাচ্ছেন না।
দুর্গাপুর উপজেলার বারোমারী, লক্ষীপুর, ফান্দা, গোপালপুর, নলুয়াপাড়া, দাহাপাড়া, ভবানীপুর, বিজয়পুর, রানীখং, আড়াপাড়া গ্রামগুলোতে পর্যাপ্ত কৃষি শ্রমিক থাকলেও তারা এখন কৃষিকাজ ছাড়া অন্য কাজে আগ্রহ দেখাচ্ছে বেশি।
সকাল ৮টার মধ্যে যারা কাজে যেতেন তারাই এখন সকাল ১০টায়ও কর্মমুখী হচ্ছেন না। প্রয়োজনের তাগিদে যদিও কেউ কেউ আসেন, বিকেল ৫টার মধ্যেই তারা কর্মস্থল ত্যাগ করেন। এবার পাহাড়ি এ এলাকায় শীতের প্রভাব বেশি থাকায় এবং কাদাযুক্ত জমিতে নেমে কাজ করলে অধিকতর বেশি ঠান্ডা লাগায় শ্রমিকদের মাঝে কৃষি কাজে অনাগ্রহ তৈরি হয়েছে। এ বিমুখতার ফলে বোরো আবাদ করা যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন কৃষকরা।
জাগিরপাড়া গ্রামের কৃষক সাইদুল ইসলাম বলেন, এভাবে যদি আরো ১৫দিন চলে তাহলে আমিসহ অনেকেরই এবার বোরো আবাদ করা হবে না। শ্রমিকের অভাবে এখানে অনেক কৃষক এখনো ধানের চারা রোপণ করতে পারেননি। নির্দিষ্ট সময়ের মাঝে ধানের চারা রোপণ না হলে ধান উৎপাদন পিছিয়ে পড়বে। এতে পাহাড়ি ঢলের কবলে পড়ে ফসল নষ্ট হবার শঙ্কা বাড়বে বলে অসংখ্য কৃষক এবার বোরো আবাদ থেকে সরে দাঁড়াবে।
এ বিষয়ে দর্গাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ওমর ফারুক বলেন, উপজেলায় এবার বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ১৫ হাজার হেক্টর। আবাদের এ মৌসুম প্রায় শেষ হতে চলছে। অথচ এখনো অর্ধেক জমিও চাষাবাদ হয়নি। এবারের তীব্র শীতের দাপটে শ্রমিকরা দীর্ঘদিন ধরে কৃষিতে নামতে পারছেন না বলে চাষাবাদ থেমে আছে। এভাবে আর সপ্তাহ দু’য়েক থেমে থাকলে লক্ষ্যমাত্রা অর্ধেকও পূরণ হবে না।
আজকের বাজার: এএল/সালি, ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮