প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে নায়ক জায়েদ খানের বিরুদ্ধে অভিযোগ

নায়ক জায়েদ খান ও ঢাকা চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক জহিরুল হক মনু ওরফে জায়েদ খানের বিরুদ্বে হিন্দু পরিবারের ক্লিনিকসহ বাড়ি দখলের অভিযোগ উঠেছে। জায়েদ খানসহ তার ভাই পুলিশ কর্মকর্তা শহিদুল হক মিন্টু ও ওবায়দুল হক পিন্টুর বিরুদ্ধে লিখিতভাবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এই অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগি পরিবারটি।

একই সাথে স্বরাষ্টমন্ত্রী, তথ্যমন্ত্রী ও আইজিপির বরাবর লিখিতভাবে চিঠির মাধ্যমে অভিযোগ করেছেন পিরোজপুর সরকারী সোহরাওয়ার্দী কলেজের সাবেক উপাধ্যাক্ষ অধ্যাপক গীতা রানী মজুমদার।

অভিযোগে গীতা রানী মজুমদার বলেন, আমি অধ্যাপক গীতা রানী মজুমদার পিরোজপুর সরকারি সোহরাওয়াদী কলেজের উপাধ্যাক্ষ হিসেবে কর্মরত ছিলাম। আমার স্বামী ডা: বিজয় কৃষ্ণ হালদার পিরোজপুর জেলা সদরের মাছিমপুর বাইপাস সড়কে সার্জিকেয়ার ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার নিজের সারা জীবনের উপার্জিত অর্থ ও পরিশ্রম দ্বারা ৪০ শয্যা বিশিষ্টউক্ত স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠা করে তা পরিচালনা করছেন।

কিন্তু ভুমি সন্ত্রাসী ও নারী নির্যাতনকারী ঠিকাদার ওবায়দুল হক পিন্টু , পিতা মো: আব্দুল হক, সাং মাছিমপুর, উপজেলা ও জেলা : পিরোজপুর যৌথ ব্যাবসায়ের ছদ্দবেশে উদ্দেশ্যমুলক ভাবে আমার স্বামী ডা. বিজয় কৃষ্ণ হালদারের সার্জিকেয়ার ক্লিনিক জবর দখলের উদ্দেশ্যে তার সঙ্গে ষড়যন্ত্রমুলকভাবে বন্ধুত্ব স্থাপন করে। বিভিন্ন ঔষধ প্রয়োগ করে আমার স্বামীকে মাদকাসক্ত করে এক পর্যায়ে তার হাত পা ভেঙ্গে ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ ইপজেলার রেল লাইনের পাশে ফেলে রাখে বিশ্বাসঘাতক ঠিকাদার ওবায়দুল হক পিন্টু।

বিগত ইং ২১/০৩/১৬ তারিখ রাত আনুমানিক ২ টার সময় আমাদের বাসায় ক্লিনিকের কর্মচারী শাহচাদ কলিংবেল বাজায় এবং অন্তরজ্বালা সিনেমার শুটিং এর লোক এসেছে বলে দরজা খুলতে বলে।

আমি সরল বিশ্বাসে দরজা খুলে দেয়ামাত্র দরজার আড়ালে থাকা ঠিকাদার ওবায়দুল হক পিন্টু, টিপু,রেজাউল চুন্নু, অসীম শেখর মজুমদারসহ ৩০/৪০জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী আমাদের মারপিট শুরু করে।
আমাদের পরিবারের সকলকে অস্ত্রের মুখে হাত-পা বেধে ফেলে ও মুখে টেপ দিয়া বাকরুদ্ধ করে ও বিভিন্ন কক্ষে আমাদের থাকা যাবতীয় অর্থ ও পরিসম্পদ লুটপাট করে নিয়ে যায়।

আমাদেরকে পরে ক্লিনিকের এম্বুলেন্সে করে গুম করার উদ্দেশ্যে ঝাটকাঠী গ্রামের এক পুরানো দালানে আটক রাখে এবং আমাদের সার্জিকেয়ার ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার জবরদখল করে।
পরবর্তীতে স্থানীয় জেলা প্রশাসন ,পুলিশ প্রশাসন, এবং মাননীয় সংসদসদস্যের হস্তক্ষেপে আমাদের হারানো ক্লিনিক ফেরত পাই ।

বিগত ২৬/০৩/১৬ তারিখ উক্ত ঘটনার উল্লেখে পিরোজপুর সদর থানায় ২২/৭২ নং এজাহার করি। কিন্তু পুলিশ প্রশাসনকে ঠিকাদার ওবায়দুল হক পিন্টু ,তার ভাই পুলিশের ওসি শহিদুল হক মিন্টু, এবং চলচিত্রের অভিনেতা জায়েদ খান মনু অবৈধভাবে প্রভাবিত করে পিরোজপুর সদর থানার ২২/৭২ মামলাটিরয চুড়ান্ত রিপোর্ট দেয়।

এরপর তাদের বিরুদ্ধে পিরোজপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতে ফৌজদারী ডিভিশন কেস (নং ১/১৭) দায়ের করি, যা বর্তমানে বিচারাধীন আছে।

যার পরিপ্রেক্ষিতে ওবায়দুল হক পিন্টু ও তার ভাইরা আমার উপর ক্রোধান্বিত হয়ে আমাকে ও আমার কলেজ পড়ুয়া কন্যাকে পিস্তল দেখিয়ে ভারতে চলে যাওয়ার জন্য অহরহ হুমকি দিচ্ছে। ভারত না গেলে আমাদের খুন করা হবে বলে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করছে।
আমাদের কোন নিকট আত্মীয় স্বজন ও বন্ধু বান্ধবকে আসতে বাধা দিচ্ছে এবং আমাদের বিদ্যুৎ সংযোগ ও পানি সংযোগ লাইন কেটে দিচ্ছে যা অসহনীয় এবং অমানবিক আচরন করে আসছে।

এই চিঠির বিষয়ে জানতে চাইলে গীতা রানী মজুমদার আজকের বাজারকে বলেন, অংশীদারি ব্যবসার নামে প্রতারনা করে ওবায়দুল হক পিন্টু আমার সম্পত্তি দখল করছে। আমার স্বামীকে হাত পা ভেঙ্গে অসুস্থ করে সার্জিকেয়ার ক্লিনিকের ম্যানেজার অসীম শেখর মজুমদার এর সহযোগীতায় অন্তর জ্বালা চবির স্যুটিং এর নামে বাড়িসহ ক্লিনিক দখল করেছে।
পিন্টুসহ তার ভাইরা ভিবিন্ন সময় হুমকি দিচ্ছে,অস্রের ভয় দেখাচ্ছে। আমার স্বামীকে মেরে অসুস্থ অবস্থায় জোর করে সই নিয়ে নোটারি করে এবং বর্তমানে আমরা অসহায় আর আতংকের মাঝে দিন যাচ্ছে। আমরা প্রধান মন্ত্রীর কাছে সুবিচার চাই, তাই লিখিতভাবে অভিযোগ দিছি।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে নায়ক জায়েদ খান আজকের বাজারকে বলেন, এই বিষয়ের সাথে আমি জড়িত না, আমার ভাই সার্জিকেয়ার ক্লিনিক ২ কোটি টাকায় কিনেছে। তবে বিষয়টি নিয়ে আমাকে জড়ানোর চেষ্টা করছে কেউ কেউ। তিনি বলেন ব্যাস্থতার কারনে বিগত ১ বছর বাড়িতে যাওয়া হয়না। যার কারনে বিষয়টি আগে জানতেন না তিনি ।

নায়ক জায়েদ খানের ভাই ওবায়দুল হক পিন্টু আজকের বাজারকে বলেন, সার্জিকেয়ার ক্লিনিকের মালিক বিজয় বাবু কর্মচারীদের বেতন দিতে পারছিলনা এবং প্রতিষ্টানটি পরিচালনা করতে ব্যার্থ বলে আমার কাছে বিক্রি করে দিছে। আমি ৩ কোটি টাকা দিয়ে এটা কিনেছি। সকল কাগজপত্র তার নামে আছে বলেও তিনি দাবী করেন। হুমকির বিষয়ে অস্বীকার করেন তিনি।

জাকির/আজকের বাজার