‘প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়েই পড়ে আছে খালেদার ফাইল’

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সংক্রান্ত ফাইল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দফতরে পড়ে আছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। আজ শনিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা বারবার বলছি খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের অবস্থা ক্রমেই অবনিত হচ্ছে। আমাদের দলের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল ২২ এপ্রিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন। তারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে খালেদার জিয়ার পছন্দের হাসপাতাল ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছেন। এরপর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আইজি প্রিজনকে ডেকে নিয়ে আসেন এবং খালেদা জিয়ার চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে বলেন। পরে কারাকর্তৃপক্ষ চিকিৎসদের সঙ্গে খালেদা জিয়ার চিকিৎসার বিষয় আলাপ করে একটি ফাইল তৈরি করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠিয়েছে বলে আমরা শুনেছি। ফাইলটি এখনো প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়েই পড়ে আছে।

তিনি বলেন, সরকারের মূল লক্ষ্য খালেদা জিয়াকে অসুস্থ রেখে তাকে নির্বাচন থেকে বাইরে রাখা। তার চিকিৎসা না করার পেছনে একটি নীলনকশা রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. ওয়াহিদুর রহমান বলেন, খালেদা জিয়ার হাড়ের ক্ষয় হয়ে নার্ভগুলো চাপা পড়ে গেছে। এতে বাম হাতের শক্তি কমে যাচ্ছে। তিনি বাম হাতে কিছুই ধরে রাখতে পারছেন না। প্রচণ্ড ব্যথা হচ্ছে। কোমরের হাড়ও ক্ষয়ে যাচ্ছে। স্পাইনাল কডেও সমস্যা আছে।

চক্ষু বিশেষজ্ঞ প্রফেসর ডা. কুদ্দুস বলেন, ২০১৫ ও ২০১৭ সালে তার চোখে অপারেশন করা হয়। তার চোখের পানি শুকিয়ে যাওয়ার রোগ আছে। আমরা শুনেছি খালেদা জিয়ার চোখ লাল হয়ে গেছে এবং প্রচণ্ড ব্যথা হচ্ছে। তার সুচিকিৎসা করানো না হয় চোখের কর্নিয়া নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তিনি অন্ধ হয়ে যেতে পারেন।

উল্লেখ, গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়াকে ৫ বছরের কারাদণ্ড ও আর্থিক জরিমানা করা হয়। একই সঙ্গে তার বড় ছেলে তারেক রহমানসহ পাঁচ আসামিকে ১০ বছরের কারাদণ্ড ও প্রত্যেকের ২ কোটি ১০ লাখ টাকা করে জারিমানা করে রায় ঘোষণা করেন আদালত।

রায় ঘোষণার পরপরই খালেদা জিয়াকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়। প্রথম শ্রেণীর কারাবন্দি হিসেবে বর্তমানে তিনি সেখানেই রয়েছেন। কারাবন্দির পর থেকেই খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবি জানিয়ে আসছেন বিএনপির নেতারা।

এস/