বুধবার থেকে কক্সবাজারের ১০ ইউনিয়নে স্মার্ট কার্ড বিতরণ

আগামী ৩ জানুয়ারী বুধবার থেকে কক্সবাজার সদর উপজেলার ১০ ইউনিয়নে স্মার্ট কার্ড বিতরণ করা হবে। প্রথমে ইসলামপুরে দেয়া হবে স্মার্ট কার্ড। নাপিতখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ইসলামপুরের কার্ড বিতরণ চলবে ৩ দিন।

৮ মার্চ ইউনিয়ন পর্যায়ের স্মার্ট কার্ড বিতরণ কর্মসুচি শেষ হবে। টানা ৩ মাসেরও বেশি সময়ের এই কর্মসূচি সফল করতে নির্বাচন কমিশন ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। ইতোমধ্যে ইউনিয়নসমূহের স্মার্ট কার্ড জেলা নির্বাচন অফিসে পৌঁছেছে। কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাচন অফিস এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

১৯৯৯ সালের ১ জানুয়ারীর আগে যাদের জন্ম অথবা ২০১৬ সালের আগে যারা ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন, তারাই মূলতঃ ‘স্মার্ট কার্ড’-এর আওতায় পড়েছে। সে হিসেবে ১০ ইউনিয়নে ১ লাখ ৬৮ হাজার ৯৪১ ভোটার স্মার্ট কার্ড পাওয়ার উপযুক্ত। প্রতিদিন সকাল ৮ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত নির্ধারিত কেন্দ্রে স্মার্ট কার্ড বিতরণ করা হবে। নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী যারা কার্ড সংগ্রহ করতে পারবেনা, পরবর্তীতে তারা জেলা নির্বাচন অফিস থেকে কার্ড নিতে পারবে। তবে, সেজন্য ভোগান্তিতেও পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। নির্বাচন অফিসের শিডিউল নিন্মে তুলে ধরা হলো:
ইসলামপুর ইউপি
৩ জানুয়ারী ১, ২, ৪ নং ওয়ার্ড
৪ জানুয়ারী ৩, ৫, ৬ নং ওয়ার্ড
৬ জানুয়ারী ৬ এর আংশিক, ৭, ৮, ৯ নং ওয়ার্ড
ইসলামাবাদ ইউপি
৮ জানুয়ারী ১ ও ২ নং ওয়ার্ড
৯ জানুয়ারী ৩, ৪ ও ৫ নং ওয়ার্ডের আংশিক
১০ জানুয়ারী ৫ নং ওয়ার্ডের আংশিক, ৬, ৭ নং ওয়ার্ডের আংশিক
১১ জানুয়ারী ৭ নং ওয়ার্ডের আংশিক ও ৯ নং ওয়ার্ড
১৩ জানুয়ারী ৮ নং ওয়ার্ড
সম্ভাভ্য বিতরণকেন্দ্রঃ ইউনিয়ন পরিষদ।
ঈদগাঁও ইউপি
১৫ জানুয়ারী ১ ও ২ নং ওয়ার্ড
১৬ জানুয়ারী ৩ ও ৫ নং ওয়ার্ড
১৭ জানুয়ারী ৪ ও ৬ নং ওয়ার্ড
১৮ জানুয়ারী ৭ ও ৮ নং ওয়ার্ড (আংশিক)
২১ জানুয়ারী ৮ নং ওয়ার্ড (আংশিক) ও ৯ নং ওয়ার্ড
সম্ভাব্য বিতরণকেন্দ্র: ঈদগাঁও আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়।
জালালাবাদ ইউপি
২২ জানুয়ারী ১ ও ২ নং ওয়ার্ড
২৩ জানুয়ারী ৩, ৪, ৫ নং ওয়ার্ড
২৪ জানুয়ারী ৬, ৭, ৮, ৯ নং ওয়ার্ড
সম্ভাব্য বিতরণকেন্দ্র: ঈদগাঁও আদর্শ উচ্চবিদ্যালয়।
পোকখালী ইউপি
২৭ জানুয়ারী ১ ও ২ নং ওয়ার্ড
২৮ জানুয়ারী ৩ ও ৬ নং ওয়ার্ড
২৯ জানুয়ারী ৪ ও ৫ নং ওয়ার্ড
৩০ জানুয়ারী ৭, ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ড
সম্ভাব্য বিতরণকেন্দ্র: ইউনিয়ন পরিষদ
ভারুয়াখালী ইউপি
১ ফেব্রুয়ারি ১ ও ২ নং ওয়ার্ড
৩ ফেব্রুয়ারি ৩ ও ৪ নং ওয়ার্ড
৪ ফেব্রুয়ারি ৫, ৬, ৭ নং ওয়ার্ড
৫ ফেব্রুয়ারি ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ড
সম্ভাব্য বিতরণকেন্দ্র: ইউনিয়ন পরিষদ
চৌফলদন্ডি ইউপি
৭ ফেব্রুয়ারি ১ ও ২ নং ওয়ার্ড
৮ ফেব্রুয়ারি ৩ নং ওয়ার্ডের আংশিক ও ৪ নং ওয়ার্ডের আংশিক
১০ ফেব্রুয়ারি ৩ নং ওয়ার্ডের আংশিক ও ৪ নং ওয়ার্ডের আংশিক ও ৫ নং ওয়ার্ড
১১ ফেব্রুয়ারি ৬ ও ৭ নং ওয়ার্ড
১২ ফেব্রুয়ারি ৮ ও ৯ নং ওয়ার্ড
সম্ভাব্য বিতরণকেন্দ্র: ইউনিয়ন পরিষদ
খুরুশকুল ইউপি
১৪ ফেব্রুয়ারি ১ ও ২ নং ওয়ার্ড (আংশিক)
১৫ ফেব্রুয়ারি ২ নং ওয়ার্ড (অংশিক) ও ৩ নং ওয়ার্ড
১৭ ফেব্রুয়ারি ৪ ও ৫ নং ওয়ার্ড (অংশিক)
১৮ ফেব্রুয়ারি ৫ নং ওয়ার্ড (অংশিক) ও ৭ নং ওয়ার্ড
১৯ ফেব্রুয়ারি ৬ নং ওয়ার্ড
২০ ফেব্রুয়ারি ৮ নং ওয়ার্ড
২২ ফেব্রুয়ারি ৯ নং ওয়ার্ড
সম্ভাব্য বিতরণকেন্দ্র: ইউনিয়ন পরিষদ
পিএমখালী ইউপি
২৪ ফেব্রুয়ারি ১ ও ২ নং ওয়ার্ড
২৫ ফেব্রুয়ারি ৩ ও ৭ নং ওয়ার্ড
২৬ ফেব্রুয়ারি ৪ নং ওয়ার্ড
২৭ ফেব্রুয়ারি ৫ নং ওয়ার্ড
২৮ ফেব্রুয়ারি ৬ ও ৭ নং ওয়ার্ড
১ মার্চ ৯ নং ওয়ার্ড
সম্ভাব্য বিতরণকেন্দ্র: ইউনিয়ন পরিষদ
ঝিলংজা ইউপি
৩ মার্চ ১ নং ওয়ার্ড
৪ মার্চ ২ ও ৩ নং ওয়ার্ড (আংশিক)
৫ মার্চ ৩ ও ৪ নং ওয়ার্ড (আংশিক)
৬ মার্চ ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ড
৭ মার্চ ৭ ও ৯ নং ওয়ার্ড
৮ মার্চ ৮ নং ওয়ার্ড

সম্ভাব্য বিতরণকেন্দ্র: ইউনিয়ন পরিষদ
প্রথম দিন-৩ জানুয়ারী ইসলামপুর দিয়েই ইউনিয়ন পর্যায়ে আনুষ্ঠানিক কার্ড বিতরণ কার্যক্রম শুরু হবে। এ সময় সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নোমান হোসেন, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মেজাম্মেল হোসেনসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। স্মার্ট কার্ড বিতরণ কর্মসূচি সফল করতে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বার, গ্রাম পুলিশ, জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টদের সহযোগিতা চেয়েছেন সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসার শিমুল শর্মা।

১ ডিসেম্বর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কক্সবাজার পৌরসভায় ‘স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র’ তথা ‘স্মার্ট কার্ড’ বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়। পৌর এলাকায় শেষ হবে ২৯ ডিসেম্বর। বিভিন্ন ওয়ার্ডে বাদ পড়াদের স্মার্ট কার্ড দেয়া হবে ৩০ জানুয়ারী।

কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাচন অফিসের দেয়া তথ্য মতে, ২০১৭ সালে হালনাগাদ বাদে সদরের ইসলামপুরে ১১৩৫৪, ইসলামাবাদে ১৬০০৭, ঈদগাঁওতে ১৯৪৮৫, জালালাবাদে ৯৬৬৩, পোকখালীতে ১৩১৩০, ভারুয়াখালীতে ১৩৪৫৯, পিএমখালীতে ২০৫১৬, চৌফলদন্ডিতে ১৭৬১২, খুরুশকুলে ২৬৩৭৭ এবং ঝিলংজায় ২১৩৩৮ ভোটার রয়েছে। গত জানুয়ারীতে ‘রিভাইসিং অথরিটি’র মাধ্যমে নিবন্ধিত ভোটাররাও স্মার্ট কার্ডের অন্তর্ভুক্ত।

হালনাগাদ বাদে কক্সবাজার জেলায় বিদ্যমান ভোটার (হালনাগাদের পূর্বে) সংখ্যা ১৩ লাখ ২৬ হাজার ৪৩৯ জন। সেখানে সদরে ২ লাখ ৪৬ হাজার ৪৬৩, রামুতে ১ লাখ ৫১ হাজার ৩০৬, উখিয়ায় ১ লাখ ১৮ হাজার ৩২২, টেকনাফে ১ লাখ ৪৪ হাজার ১৫৭, চকরিয়ায় ২ লাখ ৭১ হাজার ৪৫৩, পেকুয়ায় ১ লাখ ৪ হাজার ২২৩, মহেশখালীতে ২ লাখ ৪ হাজার ৯৪৩ এবং কুতুবদিয়ায় ৮৫ হাজার ৫৭২ জন ভোটার।

সুত্র জানায়, স্মার্টকার্ড নেওয়ার সময় নাগরিকদের পুরনো কার্ড জমা দেওয়ার পাশাপাশি ১০ আঙ্গুলের ছাপ ও চোখের মণির ছবি দিতে হবে। এক্ষেত্রে কারও কার্ড হারিয়ে গেলে প্রথমে পুরনো কার্ডটি তুলে তা জমা দিয়ে স্মার্ট কার্ড নিতে হবে। স্মার্টকার্ড নেওয়ার সময় ভোটারদের নতুন করে কোনও ছবি তুলতে হবে না বা কোনও তথ্য দিতে হবে না। নির্বাচন কমিশনে প্রত্যেক ভোটারের যে ছবি ও অন্যান্য তথ্য সংরক্ষিত রয়েছে, তারই ভিত্তিতে তৈরি হচ্ছে স্মার্ট কার্ড। অর্থাৎ ভোটারদের হাতে বর্তমানে যে লেমিনেটেড জাতীয় পরিচয়পত্র রয়েছে, তার ছবি ও অন্যান্য তথ্যযুক্ত থাকবে নতুন স্মার্ট কার্ডে। তবে, কোনও ভোটার স্মার্ট কার্ড তৈরি হওয়ার আগে ছবি পরিবর্তন বা অন্যান্য তথ্য সংশোধন করে থাকলে স্মার্ট কার্ডে নতুন ছবি পাবেন।

স্মার্ট কার্ড পাওয়ার পরও ভোটারদের ছবি বা অন্যান্য তথ্য সংশোধন/হালনাগাদের সুযোগ রয়েছে। এক্ষেত্রে নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি জমা দিয়ে তাদের নিজ নিজ নির্বাচন অফিসে আবেদন করতে হবে। সংশোধিত নতুন স্মার্টকার্ড তৈরি হলে ভোটারের মোবাইলে এসএমএস’র মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে। পরে তারা উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে তা সংগ্রহ করবেন। প্রত্যেক ভোটারকে স্মার্ট কার্ড নেওয়ার সময় তাদের কাছে থাকা কার্ডটি জমা দিতে হবে। পুরনো কার্ড না দিয়ে নতুন কার্ড পাওয়া যাবে না।

স্মার্টকার্ড এর বিস্তারিত:
জালিয়াতি রোধে জাতীয় পরিচয়পত্রকে আধুনিকভাবে তৈরি, যন্ত্রে পাঠযোগ্য জাতীয় পরিচয়পত্রকেই ‘স্মার্ট কার্ড’ বলে। একে ভোটার আইডি বলেও অভিহিত করা হয়। বর্তমানে যে পরিচয়পত্র বা কার্ড চালু রয়েছে তা সাধারণ পাতলা কাগজে প্রিন্ট করে লেমিনেটিং করা। যার প্রথম পৃষ্ঠায় নিজের নাম, পিতা-মাতার নাম, জন্ম তারিখ ও আইডি নম্বর এবং অপর পৃষ্ঠায় ঠিকানা দেওয়া। ফলে এই কার্ডটি সহজেই নকল করা সম্ভব। অসাধু ব্যক্তিরা এটি সহজেই নকল করে বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করছে।

নাগরিক ভোগান্তি ও হয়রানি রোধ করতেই স্মার্ট কার্ড তৈরির প্রকল্প হাতে নেয় ইসি। এটি যন্ত্রে পাঠযোগ্য। অসাধু ব্যক্তিরা সহজেই নকল করতে পারবে না। ভোটারের বা পরিচয়পত্রধারীর আইডি নম্বর ঠিকানাসহ যাবতীয় তথ্য এই আইডিতে সংরক্ষিত থাকবে। শুধুমাত্র যন্ত্রের সাহায্যে এসব তথ্য পাঠ করা যাবে। টেকসই ও সুন্দর অবয়বে এ কার্ড বহুমুখী ব্যবহারযোগ্য হওয়ায় তা সাধারণভাবে স্মার্টকার্ড হিসেবেই বিবেচিত হবে। স্মার্টকার্ডে প্রায় ২৫ ধরনের নাগরিক সেবা পাওয়া যাবে। এ ছাড়া ভবিষ্যতে ই-পাসপোর্ট এবং ইমিগ্রেশন সেবাসহ বহুবিধ কাজে এই কার্ড ব্যবহার করা যাবে।

স্মার্টকার্ড হবে মেশিন রিডেবল, যা কার্ড জালিয়াতির হাত থেকে বাড়তি নিরাপত্তা প্রদান করবে। পরপর দুবার হারালেই কার্ড সংগ্রহে ভোটারকে জরিমানা দিতে হবে দুই থেকে চার হাজার টাকা।