‘মানুষের সেবা করার জন্যই আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন’

জাতীয় সংসদের সভাপতি এবং আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমি আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় করি না। আমাকে মেরে ফেলার জন্য আমার ওপর বারবার হামলা করা হয়েছে। আল্লাহ আমাকে বারবার বাঁচিয়েছেন। দেশের মানুষের সেবা করার জন্যই হয়তো আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। আমি চাই দেশের মানুষ সবাই ভালো থাক। দেশের একটি মানুষও যাতে না খেয়ে থাকে, সে লক্ষ্যে আমার সরকার দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে। দেশকে এগিয়ে নিতে আমরা সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।

রোববার (৪ নভেম্বর) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে কওমি মাদ্রাসার আলেমদের শোকরানা মাহফিলে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

‘আল-হাইয়াতুল উলিয়া লিল জামিআাতিল কওমিয়া বাংলাদেশ’ এ মাহফিলের আয়োজন করে। কওমি মাদ্রাসা শিক্ষার সর্বোচ্চ স্তর দাওরায়ে হাদিসকে সাধারণ শিক্ষার স্নাতকোত্তরের স্বীকৃতি দেওয়ায় এ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। এ মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা শাহ আহমদ শফী।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীকে ‘কওমি জননী’ উপাধি দেন কওমি মাদ্রাসাগুলোর সর্বোচ্চ সংস্থা ‘আল-হাইয়াতুল উলিয়া লিল জামিআাতিল কওমিয়া বাংলাদেশ’র সদস্য মাওলানা মুফতি রুহুল আমিন।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ধর্মীয় শিক্ষার মাধ্যমেই একটি দেশের শিক্ষাব্যবস্থা পূর্ণতা পায়। আমরা কওমি শিক্ষাকে স্বীকৃতি দিয়েছি। পাশাপাশি সংসদের মাধ্যমে আইন পাস করেছি। যাতে পরবর্তী সময় কেউ এ স্বীকৃতি খর্ব করতে না পারে।

কওমি মাদ্রাসার আলেমদের উদ্দ্যেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আপনারা অসহায় এতিমদের জায়গা দেন। তাদের থাকাখাওয়ার ব্যবস্থা করেন। যাদের কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই, আপনারা তাদের জন্য শেষ ঠিকানা। এত কিছুর পর আপনাদের স্বীকৃতি থাকবে না তা তো হয় না। আপনারা সকলে এমনভাবে কাজ করবেন, যাতে মাদ্রাসা থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি নিয়ে তারা যাতে দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করে যেতে পারে। আমি একটি আরবি ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয় করে দিতে চাই। এজন্য জায়গাও ঠিক করে রেখেছি।

তিনি বলেন, আমি মসজিদের ইমাম মুয়াজ্জিনদের জন্য কল্যাণ ট্রাস্ট গঠন করে দিয়েছি। যাতে তারা তাদের যে কোনো প্রয়োজনে এ টাকা ব্যবহার করতে পারে। ইসলামী সংস্কৃতির বিস্তারের জন্য দেশের প্রতিটি অঞ্চলে মসজিদ নির্মাণ করে দেওয়া হবে।

কওমি মাদ্রাসার আলেমদের সংবর্ধনা তার জন্য নয় বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সংবর্ধনা আমার জন্য না, এটা আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করা দরকার যে আমি কওমি সনদটা দিতে পেরেছি।

তিনি বলেন, যারা দীন ইসলামের খেদমত করছেন তাদের মধ্যে উপস্থিত হতে পারাটা সৌভাগ্যের বিষয়। আমাকে যখন আল্লামা শফী সাহেব বললেন যে এই বিল আমরা পার্লামেন্টে পাস করেছি, তিনি একটি সংবর্ধনার আয়োজন করবেন। তখন আমি বললাম, সংবর্ধনা আমার জন্য, বরং এটা হবে আল্লাহর কাছে শোকরিয়া আদায় করার।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কওমি মাদ্রাসার মধ্য দিয়ে মুসলমানরা শিক্ষাগ্রহণ শুরু করেছিলেন। মাদ্রাসা করেছিলেন কারা? ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন যারা।’ এসময় উপস্থিত হুজুররা ঠিক ঠিক বলে হাততালি দিয়ে ওঠেন।

যারা সত্যিকার ইসলাম ধর্মে বিশ্বাসী তারা কখনো জঙ্গিবাদে-সন্ত্রাসবাদে বিশ্বাসী হতে পারে না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ার অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হবেন না। দেশের শান্তি বিঘ্নিত হোক তা আমরা চাই না। শান্তি থাকলেই উন্নতি হবে। আল্লাহ আমাকে যতটুকু শক্তি দিয়েছেন তা দিয়ে জনগণের খেদমত করে যেতে চাই-এই দোয়াটাই সবসময় করি। আপনাদের দোয়া চাই সামনে নির্বাচন আছে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন চাইলে আবারও জনগণের খেদমত করতে পারবো। আর যদি না চান…আমি পুরোটাই আল্লার ওপরই ছেড়ে দিয়েছি।’

আজকের বাজার/এমএইচ