শ্রীলংকায় ৪৩ বছর পর দুই জল্লাদ নিয়োগ

শ্রীলংকায় খুন, ধর্ষণ ও মাদককারবারিদের জন্য শাস্তি হলো মৃত্যুদণ্ড। কিন্তু শাস্তি ঘোষণা করা হলেও ১৯৭৬ সালের পর থেকে কোনো মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় না।

দীর্ঘ ৪৩ বছর পর দেশটিতে প্রথমবারের মতো মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার জন্য দুই জল্লাদকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। সামনে চারটি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতেই দেয়া হয়েছে এ নিয়োগ। খবর বিবিসির।

পাঁচ বছর আগে দেশটির সর্বশেষ জল্লাদ ফাঁসির বেদী দেখার পর পদত্যাগ করেছিলেন। গত বছরও একজনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল কিন্তু তিনি ভয়ে কাজেই আসেননি।

ফেব্রুয়ারি মাসে এই জল্লাদ পদের জন্য বিজ্ঞাপন দেয়া হলে ১০০টির বেশি আবেদন পড়েছিল। বিজ্ঞাপনে প্রার্থীদের ‘শক্তিশালী নৈতিক চরিত্র’ থাকতে হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছিল।

বিজ্ঞাপনে আরও বলা ছিল যোগ্য প্রার্থীকে ‘মানসিকভাবে শক্ত’ হতে হবে এবং ১৮-৪৫ বছর বয়সী শুধু শ্রীলংকান পুরুষরাই এ পদের জন্য আবেদন করতে পারবেন।

তার পরও দুই নারী ও দুই মার্কিন নাগরিক আবেদন করেছিলেন।

অবশেষে দুজনকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। যাদের দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রশিক্ষণ দেয়া শুরু হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির কারা কর্তৃপক্ষের এক মুখপাত্র।

দেশটিতে ১৯৭৬ সালের পর থেকে কোন অপরাধের শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার বিষয়টি স্থগিত রাখা হয়েছিল। কিন্তু এখন সেই স্থগিতাদেশ শেষ হচ্ছে চারটি মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার মাধ্যমে।

এই জল্লাদদের নিয়োগের পরই দেশটির প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা ঘোষণা দিয়েছেন যে মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ওই চারজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হবে।

মৃত্যুদণ্ড প্রথা আবার চালু করার সিদ্ধান্তের পর অবশ্য পশ্চিমা বিশ্বের সমালোচনার শিকার হচ্ছে শ্রীলংকা।

প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা বলছেন, দেশটিতে মাদককারবারিদের মোকাবেলা করতেই মৃত্যুদণ্ড প্রথা আবার চালু করা হচ্ছে।

এ বছরের শেষের দিকে দেশটিতে নির্বাচন রয়েছে। রাজনীতির বিশ্লেষকরা বলছেন, এর ফলে তার ভোট বেড়ে যেতে পারে।

প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা বলেছেন, আমি মৃত্যু পরোয়ানায় সই করেছি। তাদের এখনও জানানো হয়নি। আমরা এখনই তাদের নামও ঘোষণা করতে চাই না। কারণ তাতে কারাগারে অশান্তি সৃষ্টি হতে পারে।

তিনি বলছেন, শ্রীলংকায় দুই লাখের মতো মাদকাসক্ত ব্যক্তি রয়েছে এবং কারাগারে যারা সাজা ভোগ করছেন, তাদের ৬০ শতাংশই মাদকদ্রব্য সম্পর্কিত ঘটনার সঙ্গে জড়িত।