‘সমুদ্রে ৬৫ দিন মাছধরা বন্ধ থাকায় সকল মাছের সংরক্ষণ, উৎপাদন ও আহরণবৃদ্ধি পেয়েছে’

‘দেশের সামুদ্রিক জলসীমায় ৬৫দিন মৎস্য-আহরণ বন্ধ থাকার ফলাফল ও প্রভাব’ এবং ‘ইলিশের প্রধান প্রজননমৌসুমে মা-ইলিশ সংরক্ষণ অভিযান-২০১৯’ শীর্ষক যৌথ ২টি সেমিনার ও নাগরিকসভায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে, ‘ইলিশের প্রধান প্রজননমৌসুমে মা-ইলিশের নিধনরোধে আগামী ৯ থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত ২২দিন প্রতিবছরের ন্যায় যথারীতি সকল প্রকার মাছধরা বন্ধ থাকবে।

এসময় ইলিশের প্রজননক্ষেত্রের ৪টি পয়েন্টদ্বারা পরিবেষ্টিত ৭০০০ বর্গকিলোমিটার উপকূলীয় এলাকার সকল নদনদীতে এ নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। ৪টি পয়েন্ট হচ্ছে- মীরসরাই ও চট্টগ্রামের মায়ানি, তজুমুদ্দিন ও ভোলার পশ্চিম সৈয়দ আওলিয়া, কুতুবদিয়া ও কক্সবাজারের উত্তর কুতুবদিয়া এবং কলাপাড়া ও পটুয়াখালীর লতা চাপালী পয়েন্ট। আইনানুযায়ী সারাদেশে ইলিশমাশের আহরণ, পরিবহন, মজুদ, বাজারজাতকরণ এবং ক্রয়বিক্রয় নিষিদ্ধ থাকবে।

সভায় বলা হয়, প্রতিবছর আশ্বিনমাসের প্রথম উদিত চাদেঁর পূর্ণিমার আগের ৪দিন, পরের ১৭দিন এবং পূর্ণিমার দিনসহ মোট ২২দিনের এই নিষেধাজ্ঞা ২০১৭ সাল থেকে জারী রয়েছে। তবে ২০১১ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত ১১দিন এবং ২০১৫ সালে এই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ ছিল ১৫দিন। নিষেধাজ্ঞার আইন ভংগ করলে আইনভংগকারী কমপক্ষে  ১ বছর থেকে ২ বছর সশ্রম কারাদন্ড অথবা সর্বোচ্চ ৫,০০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয়  দন্ড দেয়া যাবে।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আশরাফ আলী খান খসরু এমপির সভাপতিত্বে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে মহেশখালী-কুতুবদিয়ার এমপি আশিকুল্যা রফিক, মন্ত্রণালয়ের সচিব রইছউল আলম মণ্ডল, অতিরিক্ত সচিব কাজী ওয়াসি উদ্দিন, মৎস্য উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান দিলদার আহমদ, মৎস্য অধিদফতরের ডিজি আবু সাইদ মোঃ রাশেদুল হক, মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের ডিজি ড ইয়াহিয়া মাহমুদসহ বিভিন্ন মমতস্যজীবী সংগঠন, ব্যবসায়ী, জেলে, মৎস্যগবেষক, এনজিও, কোস্টগার্ড, নৌপুলিশ, র‍্যাব, বনবিভাগের প্রতিনিধিবৃন্দ এতে বক্তৃতা করেন।

সভায় সামুদ্রিক মৎস্য দফতরের পরিচালক ড মোঃ আবু হাছানাত ‘সমুদ্রে ৬৫দিন মাছধরা বন্ধের ফলাফল ও প্রভাব’ এবং আসন্ন  মা-ইলিশ রক্ষা অভিযান-২০১৯’ বিষয়ে ইলশব্যবস্থাপনা শাখার সহকারী পরিচালক মাসুদ আরা মমি পৃথক-পৃথক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

 বক্তারা সমুদ্রে ৬৫ দিন মাছধরা বন্ধ থাকায় সকল মাছের সংরক্ষণ, উৎপাদন ও আহরণবৃদ্ধি পাবার কথা উল্লেখ করে এসময়ে জেলেদের সরকারি সাহায্যদানসহ তাদের বিভিন্ন সমস্যার চিত্রও তুলে ধরেন ।

প্রতিমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছানুযায়ী দেশের জনগণের পুষ্টিপূরণ, সমুদ্রসম্পদের যথাযথ সংরক্ষণসহ মৎস্য সম্পদবৃদ্ধি এবং মা-ইলশ ও জাটনানিধনের বিরুদ্ধে ব্যাপক গণসচেতনতা্সৃষ্টির আহবান জানান। তিনি কারেন্টজালসহ অবৈধভাবে মৎস্যনিধনকারীদের শাস্তির আওতায় আনার ওপরও জোর দেন।