অগ্ন্যুৎপাত যে কোনো সময়

ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপের মাউন্ট আগুং থেকে যেকোনো সময় অগ্ন্যুৎপাতের আশঙ্কায় এলাকাটিতে সর্বোচ্চ পর্যায়ের সতর্কতা জারি করেছে কর্তৃপক্ষ। বিপদজনক এলাকার পরিধি বাড়িয়ে এলাকাবাসীদের দ্বীপাঞ্চল পরিত্যক্ত করতেও ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

মাউন্ট আগুংয়ের জ্বালামুখ থেকে নির্গত ঘন কালো ধোঁয়ার উচ্চতা এখন ১১ হাজার ১৫০ফুট। ধোঁয়ার সঙ্গে ছাইয়ের গুঁড়া চারদিকে ছড়িয়ে গোটা এলাকা অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে। ঘন ধোঁয়ার কারণে বালির এনগুড়া রাই বিমানবন্দর আজ সোমবার থেকে আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে সবরকম বিমান চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে পার্শ্ববর্তী দ্বীপ লম্বোকের বিমানবন্দর আজ সোমবার সকাল থেকে খুলে দেওয়া হয়েছে। এতে হাজার হাজার পর্যটক বিমানবন্দরে আটকা পড়েছে।

ধোঁয়ার নির্গত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পর্বত থেকে লাহারস বা গলিত পাথরের ঠান্ডা লাভা নদী, মাঠে গড়িয়ে পড়েছে। স্থানীয়দের এ পাথর স্রোত থেকে দূরে থাকতে সতর্ক করেছে কর্তৃপক্ষ।

 ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বোর্ড স্থানীয় সময় সকাল ৬টায় অগ্ন্যুৎপাতের আশঙ্কায় চার নম্বর সতর্ক সংকেত জারি করেছে। গতকাল পর্যন্ত এ সংকেত রেড এলার্টে ছিল। কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, দুর্যোগের সম্ভাবনা ও ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ায় সর্বোচ্চ পর্যায়ের সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

প্রতিবেদনে জানা যায়, চলতি সপ্তাহে দ্বিতীয়বারের মতো ইন্দোনেশিয়ায় এ আগ্নেয়গিরির ধোঁয়া বের হওয়া শুরু হয়েছে। বর্তমানে আগ্নেয়গিরি থেকে ক্রমাগত ছাইয়ের ধোঁয়া উদগীরণ হতে দেখা গেছে। তবে রাতে এ আগ্নেয়গিরিতে ক্রমবর্ধমান আগুনের ঝলক দেখা গেছে। এতে বড় রকমের অগ্নুৎপাত হওয়া আসন্ন বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে দেশটির জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বোর্ড।

আগ্নেয়গিরি থেকে ১০ কি.মি পর্যন্ত বিপদজনক এলাকার পরিধি বাড়িয়েছে কর্তৃপক্ষ। সেসব এলাকা খালি করে দেওয়ার জন্য স্থানীয়দের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

চলতি বছরের সেপ্টেম্বরেই অগ্ন্যুৎপাতের আশঙ্কায় দেড় লাখ মানুষ দ্বীপ থেকে সরিয়ে নেয় কর্তৃপক্ষ। এ বছর অগ্ন্যুৎপাতের সম্ভাবনা বেড়ে যাওয়ায় সেখানে আতঙ্ক বিরাজ করছে। তবে গত মাসের শেষ দিকে এ আগ্নেয়গিরির সক্রিয়তা কিছুটা কমে গিয়েছিল। ওই সময় অনেক মানুষ আবার তাঁদের বাড়ি ফিরে গিয়েছিলেন। সতর্কতার মাত্রাও তখন কমিয়ে দেওয়া হয়।

ইন্দোনেশিয়ায় এখনো ১৩০টি জীবন্ত আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ রয়েছে। কর্তৃপক্ষের হিসাব অনুযায়ী, পর্যটন দ্বীপটি খালি হয়ে যাওয়ায় এতে পর্যটন খাতে অন্তত ১১ কোটি ডলারের ক্ষতি হয়েছে।

ইন্দোনেশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ‘আগুনের চক্রে’ অবস্থিত। যার কারণে টেক্টোনিক প্লেটগুলোর ধাক্কায় ঘনঘন ভূকম্পন ও অগ্ন্যুৎপাতের সম্ভাবনা থাকে। মাউন্ট আগুং আগ্নেয়গিরি থেকে সর্বশেষ ১৯৬৩ সালে অগ্ন্যুৎপাত হয়েছিল। তখন ১৬০০র বেশি লোকের প্রাণহানি ঘটেছিল। গত পাঁচ দশক ধরে আ্গ্নেয়গিরিটি শান্ত অবস্থায় ছিল। কিন্তু ৫৪ বছর পর আবার অশান্ত হতে শুরু করেছে এ আগ্নেয়গিরিটি।

আজকের বাজার:এলকে/এলকে ২৭ নভেম্বর ২০১৭