অনলাইনে হয়রানির শিকার ৬৩% নারী

৬৩ শতাংশ নারী অনলাইনে হয়রানির শিকার হওয়ার পর আতঙ্কে ঘুমাতে পারেন না। প্রতি পাঁচজনে একজনের বেশি নারী অনলাইনে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। এমন তথ্যই উঠে এসেছে মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের এক জরিপে।

অ্যামনেস্টির ওয়েবসাইটের সূত্রে জানা যায়, ৮টি দেশের ১৮ থেকে ৫৫ বছর বয়সী নারীদের ওপর এ জরিপ চালানো হয়।৪ হাজার নারীর ওপর চালানো এ জরিপে দেখা যায়, বেশিরভাগ হয়রানিই ঘটে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে। এ বিষয়ে নির্দিষ্ট আইন ও নীতিমালার ঘাটতির বিষয়টিও গুরুত্ব পায় জরিপে। গবেষণায় উঠে আসে আক্রান্ত নারীদের নিরাপত্তা ও মানসিক অবস্থার দুর্দশার চিত্র।

এ বিষয়ে সংস্থাটির মানবাধিকার ও প্রযুক্তি বিষয়ক গবেষক আজমিনা ধরদিয়া বলেন, ইন্টারনেট নারীদের জন্য বিভীষিকাময় ও আতঙ্কের জায়গা হয়ে উঠতে পারে। এটা সবার জানা, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে নারীদের প্রতি বিদ্বেষ ও হামলার ঘটনা অহরহ ঘটছে। কিন্তু এই জরিপটির ফলে দেখা যাচ্ছে, অনলাইনে হয়রানি নারীদের জন্য কতটা ক্ষতিকর হতে পারে।

তিনি বলেন, চিন্তা করুন একটি অ্যাপ খুলতেই আপনি মৃত্যু বা ধর্ষণের হুমকি পাচ্ছেন। আপনার গোপন ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকির মধ্যে বাস করতে হচ্ছে। ইন্টারনেট কানেকশন বন্ধ করে দিলেই এগুলো শেষ হয়ে যায় না।

জরিপে ৪১ শতাংশ নারী জানান, হয়রানির শিকার হওয়ার পর থেকে তারা আগের থেকেও কম নিরাপদ অনুভব করে। প্রতি চারজনের একজন নারী তাদের পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেন। জরিপে অংশগ্রহণকারী ৫৭ শতাংশ নারী জানান তাদের যৌন আচরণ, বর্ণবাদী ও সমকামী-সংশ্লিষ্ট হামলার শিকার হয়েছেন।

এছাড়া ২৬ শতাংশ নারী তার ব্যক্তিগত তথ্য বা ছবি ছড়িয়ে দেয়ার ঘটনার শিকার হয়েছেন জানান। অংশগ্রহণকারীদের একটি বিশাল অংশ জানান, হয়রানির শিকার হওয়ার পর থেকে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে আতঙ্ক বোধ করেন। জরিপটিতে বলা হয়েছে, এ ধরণের পরিস্থিতির ফলে দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতির মুখেও পড়তে পারেন নারীরা। বাধাগ্রস্ত হতে পারে তাদের জীবন যাপনের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।

প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোকে অনলাইনে হয়রানি মোকাবিলায় আরো সচেতন হওয়া জরুরি বলে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে এ জরিপে।দেখা যাচ্ছে, বিশেষ করে ফেসবুক ও টুইটারের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন আক্রান্ত নারীরা।

এ বিষয়ে ধরদিয়া জানান, মানবাধিকার ও স্বাধীন মতপ্রকাশের অধিকারের প্রতি সম্মান দেখানোর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর দায়িত্ব। অতএব নারীরা যাতে শঙ্কা ও ভীতিহীনভাবে এটি ব্যবহার করতে পারে সেটি নিশ্চিত করতে হবে তাদের।

অ্যামনেস্টির এ জরিপে অংশ নেওয়া দেশগুলো হলো ডেনমার্ক, ইতালি, নিউজিল্যান্ড, পোল্যান্ড, স্পেন, সুইডেন, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র।

আজকের বাজার: আরআর/ ২১ নভেম্বর ২০১৭