অবরোধে ধুঁকছে কাতারের পুঁজিবাজার

প্রতিবেশি সৌদি আরবসহ চার দেশের অবরোধে নাজুক হয়ে পড়েছে কাতারের পুঁজিবাজার। অবরোধের পর থেকে বুধবার পর্যন্ত কাতার স্টক এক্সচেঞ্জের মূল্যসূচক কিউএসআই সাড়ে ১১ শতাংশ কমে যায়।

এদিকে স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করেছে, তাদের বাজারকে অস্থির করে তুলতে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইনের কিছু প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী শেয়ার ডাম্প (Dump) করছে। খবর রয়টার্সের।

উল্লেখ, গত ৫ জুন মধ্যপ্রাচ্যে চরমপন্থীদের মদদের অভিযোগ তুলে কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন ও মিশর। একইসঙ্গে দেশ চারটি সৌদি আরবের উপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। আকষ্মিক এই অবরোধ কাতারের অর্থনীতিতে বেশ বড় ঝাঁকুনি দেয়। কাতারের মুদ্রার মান গত ৩০ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন অবস্থানে চলে আসে।

অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার প্রভাব পড়ে দেশটির পুঁজিবাজারেও। অবরোধ আরোপের দিন থেকেই দর পতন চলতে থাকে ওই বাজারে। অবরোধে সৃষ্ট কাতারের অর্থনৈতিক সংকট দীর্ঘায়িত হতে পারে এমন আশংকায় বিদেশি বিনিয়োগকারীরা হাত গুটিয়ে নেয়। নতুন বিনিয়োগের পরিবর্তে তারা বিনিয়োগ প্রত্যাহারের মিশনে নামে। গত বুধবার পর্যন্ত স্টক এক্সচেঞ্জটির বাজারমূলধন কমে প্রায় ১৩ বিলিয়ন ডলার।

বুধবার কাতার স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রশিদ আলী আল মনসুরী অভিযোগ করেন, তারা লক্ষ্য করেছেন, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইনের কয়েকটি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী বাজারে শেয়ার ডাম্পিং এর চেষ্টা করছে।

উল্লেখ, ডাম্পিং হচ্ছে কেনা দাম বা বাজারে প্রচলিত দামের চেয়ে কম দামে পণ্য বা শেয়ার বিক্রি করা।

মনসুরি বলেন, দর পতন ঘটিয়ে তাদের শেয়ারবাজারকে অস্থির করে তোলার অসাধু উদ্দেশ্য থেকে প্রতিষ্ঠানগুলো এই চেষ্টা চালাচ্ছে।

যদিও রয়টার্স আর্থিক বিশ্লেষকদের বরাত দিয়ে বলেছে, কাতার স্টক এক্সচেঞ্জের বক্তব্য সত্য হওয়ার সম্ভাবনা কম। কারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রাজনৈতিক স্বার্থের চেয়ে আর্থিক স্বার্থই বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তাই রাজনৈতিক কারণে নিজে আর্থিক ক্ষতি ডেকে আনবে এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা নয়।

এদিকে ব্লুমবার্গ হিসাব করে দেখেছে, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও বাহরাইনের প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে কাতারের বিভিন্ন কোম্পানির প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের শেয়ার রয়েছে। চার দেশের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে আগামী দিনে কাতারের কোম্পানিগুলোর মুনাফা কমে যেতে পারে। এমন অনিশ্চয়তার মুখে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা কিছু বিনিয়োগ প্রত্যাহার করে ঝুঁকি কমিয়ে আনার চেষ্টা করতে পারে।