আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই উন্নয়ন হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে বলেই দেশের উন্নয়ন হচ্ছে। দেশ আজ ডিজিটাল বাংলাদেশ। এখন অনেক কাজই অনলাইনে হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ঠাকুরগাঁওয়ে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় তিনি এসব কথা বলেন।

এর আগে বেলা ২টা ৪৫ মিনিটে তিনি জনসভাস্থলে আসেন। জনসভাস্থলে এসেই তিনি ৩৩টি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ৩৩টির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। পরে তিনি মোনাজাতে অংশ নেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি আন্দোলনের নামে মানুষ পুড়িয়েছে। জামায়াতকেব সাথে নিয়ে তারা সারাদেশে পাঁচশ মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। স্বাধীনতা বিরোদী শক্তি বলেই বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে দেশের কোনো উন্নয়ন হয়না।

ঠাকুরগাঁওয়ে শিক্ষার দিকে সরকারের নজর আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, শিক্ষার মানোন্নয়নে ঠাকুরগাঁওয়ে একটি বিশ্ববিদ্যালয় ও আইটি পাক করার ব্যবস্থা তৈরি করা হবে।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার বেলা দুইটার দিকে ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে (বড়মাঠ) এই জনসভা শুরু হয়। সভাপতিত্ব করছেন জেলা সভাপতি দবিরুল ইসলাম।

২০০১ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর ঠাকুরগাঁও গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর আর সেখানে যাওয়া হয়নি তার। ভোটের আগে এই সফরে জেলাবাসীর জন্য উপহারও নিয়ে গেছেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রীর জনসভা উপলক্ষে চাঙা হয়ে উঠেছে ঠাকুরগাঁও আওয়ামী লীগ। এই জনসভায় পাঁচ থেকে সাত লাখ মানুষের সমাগম করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতারা। এজন্য ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়েও জনসংযোগ, প্রচারণা ও মাইকিং করা হয়েছে। ইতোমধ্যে জনসভাস্থল লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠেছে।

এর আগে বেলা ১২টার দিকে প্রধানমন্ত্রী বিশেষ হেলিকপ্টারে ঠাকুরগাঁওয়ে পৌঁছান। প্রধানমন্ত্রী যেসব প্রকল্প উদ্বোধন করবেন সেগুলো হলো:

ঠাকুরগাঁও চৌরাস্তা হতে বালিয়াডাঙ্গী মোড় পর্যন্ত সড়ক চার লেনে উন্নীত করা; বালিয়াডাঙ্গীতে তিনটি সড়কে এবং রাণীশংকৈলে একটি সড়কে সেতু, সদর উপজেলা পরিষদ ও হরিপুর উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন, জেলা পিটিআই ভবন সম্প্রসারণ; সদর উপজেলায় পারপুগী-নেকমরদ সড়ক উন্নয়ন, রাণীশং কৈলেতীরনই নদীর উপর সমন্বিত পানি নিয়ন্ত্রণ কাঠামো নির্মাণ; পীরগঞ্জ উপজেলায় এক লক্ষ পাঁচ হাজার টন ধারণক্ষমতার সম্পন্ন নতুন গুদাম উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।

এছাড়া শিবগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ, আবুল হোসেন সরকার কলেজ, চন্দোরিয়া ডিগ্রি কলেজ, রাণীশংকৈল  ডিগ্রি কলেজ, হরিপুর মহিলা কলেজ, পীরগঞ্জে ডি এন ডিগ্রি কলেজ, আব্দুর রশিদ ডিগ্রি কলেজ, রুহিয়া ডিগ্রি কলেজ, সালনন্দর ডিগ্রি কলেজে চারতলা একাডেমিক ভবনের উদ্বোধন করা হবে।

ঠাকুরগাঁও সদরে  বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্প, সদর আধুনিক সদর হাসপাতাল ১০০ শয্যা থেকে ২৫০ শয্যায় উন্নীতকরণ; রাণীশংকৈল উপজেলা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন; হরিপুর উপজেলা ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন; রুহিয়া থানা ভবন; ঠাকুরগাঁও সদর পুলিশ ফাঁড়ি ভবন; ঠাকুরগাঁও ট্রাফিক পুলিশ ফাঁড়ি ভবনের উদ্বোধন হবে।

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলায় হলদিবাড়ীসহ দুটি গুচ্ছগ্রাম; রাণীশংকৈল উপজেলার রাউৎনগর (সম্প্রসারণ), রন্ধনদীঘি গুচ্ছগ্রাম, সদর উপজেলার ঢোলারহাট ইউনিয়নে বিদ্যুৎবিহীন গ্রামে সৌরবিদ্যুতের সাহায্যে আলোকিত গ্রামও উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।

এছাড়া সদর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ; পীরগঞ্জউপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন সম্প্রসারণ; বালিয়াডাঙ্গী কালমেঘ নেকমরদ হাট ভায়া বিশ্বাসপুর সড়কের কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হবে।

সদর উপজেলায় পাঁচটি সেতু, সদর উপজেলায় টাঙ্গন নদীর ডান তীর ও রাণীশংকৈল উপজেলার বাম তীরে সর্তকতামূলক প্রতিরক্ষা কাজ, সদর উপজেলার বুড়িবাঁধ সেচ প্রকল্পের ব্যারেজের ভাটিতে বাম উইং ওয়াল পুনঃনির্মাণ; পীরগঞ্জ টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, জেলা রেজিস্ট্রার অফিস ও সাব-রেজিস্ট্রার অফিস ভবন; ভূল্লী বাজার সাব-রেজিস্ট্রার অফিস ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হবে।

সদর উপজেলার পশ্চিম শুখানপুখুরী, ধর্মপুর ১-২ গুচ্ছগ্রাম; বালিয়াডাঙ্গী ও হরিপুর উপজেলায় দ্বিতল ডাকবাংলো; ঠাকুরগাঁও সদরের বানিয়াপাড়া থেকে মাতৃগাঁও পর্যন্ত পাকা রাস্তার কাজ, রুহিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় তলার ছাদ নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হবে।

এর বাইরে পাঁচটি সড়ক নির্মাণ, সদর উপজেলার ভূল্লী কলেজের পাঠাগার নির্মাণ, রুহিয়া বালিয়া উচ্চ বিদ্যালয় উন্নয়ন, রাণীশংকৈলে আলী আকবর মেমোরিয়াল প্রতিবন্ধী স্কুল ও পুনর্বাসন কেন্দ্রের কাজ সমাপ্তকরণ; সদর উপজেলায় সৌর সোলার সেচ পাম্প স্থাপন, বালিয়াডাঙ্গীর ধনতলায় অগ্রণী নারী উন্নয়ন সংস্থার ঘর নির্মাণ, ঠাকুরগাঁও পৌরসভায় শশ্মান কালী মাতা ও প্রতীমা বিসর্জন ঘাট নির্মাণ, শিবগঞ্জে ইকো পাঠশালায় কক্ষ নির্মাণ কাজেরও ভিত্তি স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী।

এমআর