আকস্মিক বন্যায় লালমনিরহাটের ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দী

ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে তিস্তা ও ধরলা নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় লালমনিরহাটের তিস্তা ও ধরলার অববাহিকার চরাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। আকস্মিক বন্যায় পানিবন্দী হয়ে পড়েছে চরাঞ্চলের প্রায় ১০ হাজার মানুষ।

সোমবার রাত ৯টায় তিস্তা ব্যারাজের দোয়ানী পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার, যা বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপরে ছিল। তবে মঙ্গলবার সকালে পানি কিছুটা কমে বিপদসীমার ৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

ভারত তাদের গজল ডোবা ব্যারেজের অধিকাংশ গেট খুলে দেওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা।

তারা বলছেন, প্রচণ্ড গতিতে পানি বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছে। আরো কত পরিমাণ পানি আসবে তা ধারণা করা যাচ্ছে না।

পানির গতি নিয়ন্ত্রণ করতে তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে হঠাৎ পানি বেড়ে যাওয়ায় তিস্তা পাড়ের লোকজনের মাঝে আতংক বিরাজ করছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, তিস্তার পানিতে জেলার পাটগ্রাম উপজেলার অধুনালুপ্ত ছিটমহল আঙ্গোরপোতা- দহগ্রাম, হাতীবান্ধার সানিয়াজান, গড্ডিমারী, সিঙ্গিমারী, সিন্দুনা, পাটিকাপাড়া ও ডাউয়াবাড়ী ইউনিয়ন, পার্শ্ববতী কালীগঞ্জ উপজেলার আমিনগঞ্জ, বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ও সদর উপজেলার রাজপুর ও খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের চর এলাকার ২৩টি গ্রামের প্রায় ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

হাতীবান্ধা উপজেলার ধুবনী গ্রামের অস্থায়ী বাঁধগুলোও হুমকির মুখে পড়েছে। এ বাঁধগুলো ভেঙে গেলে তিস্তার পানি হাতীবান্ধা শহরে ঢুকে পড়তে পারে। আদিতমারী উপজেলার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ সংস্কার না করায় হুমকির মধ্যে পড়েছে মহিষখোচা ও সদরের খুনিয়াগাছ বাগডোরা অংশও। ইতিমধ্যে চর এলাকাগুলোর যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে গেছে।

সদর উপজেলার চর রাজপুর এলাকার বাসিন্দারা বলেন, সোমবার বিকাল থেকে তারা পানিবন্দী। ক্রমে পানি বেড়ে চলেছে।

তিস্তা ব্যারাজ সেচ প্রকল্পের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল আলম চৌধুরী জানান, উজানের ঢল অব্যাহত থাকায় পানি আরো বাড়তে পারে।

আজকের বাজার/এমএইচ