ইরাকে সরকার বিরোধী আন্দোলনে নিহত ২৫০ আহত ৪০০০

ইরাকের বাগদাদে তাহরির স্কোয়ার সহ অন্যান্য প্রদেশেও কয়েকশো প্রতিবাদকারীর স্লোগানে উত্তাল হয়ে আছে পরিস্থিতি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের এমন নিরাপত্তাহীন পরিস্থিতিতে সরকারের প্রয়োজন কিছু কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের।

নতুন করে এই মাসে সরকার বিরোধী আন্দোলনে ইরাকে এই পর্যন্ত ২৫০ জন নিহত হয়েছে এবং ৪০০০ এর ও বেশী মানুষ আহত হয়েছে। শিক্ষক ও আইনজীবীদের সমিতি, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের কর্মচারীরা ও এই আন্দোলনে যোগ দিচ্ছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন ইরাকের নেতারা বা আন্দোলনকারীরা কেউ জানে না এই আন্দোলন আসলে কোন দিকে ধাবিত হচ্ছে। আন্দোলনের নেতৃত্বে কেউ নেই, নেই কোন কাঠামো এবং নেই কোনো সমন্বয়। তবে এই আন্দোলনে অংশ নেয়া বেকার, বুদ্ধিজীবী, দরিদ্র শিয়া সম্প্রদায়ের মানুষ, তাদের সবার দাবী দুর্নীতি, বেকারত্ব, বিদ্যুতের অভাব, এই সবকিছুর শেষ হোক। ফরাসী সংবাদ মাধ্যমকে এক আন্দোলনকারী বলেন, আমরা এই সরকারের পতন ঘটাবো।

লন্ডনের চ্যাথাম হাউসের রেনাড মানসুর মনে করেন এই আন্দোলন সহজে দমে যাবার নয়। রেনাড বলেন,কোন নির্দিষ্ট লক্ষ্য ছাড়া এই আন্দোলন টেকসই হবেনা। প্রশ্ন হচ্ছে সরকার কতটুকু সংস্কার করবে, দেখতে হবে সংস্কারের নামে কি ঐ একই পদক্ষেপ নিচ্ছে যেমন মন্ত্রিসভায় পরিবর্তন বা নির্বাচনী আইন পরিবর্তন, নাকি অবকাঠামোগত পরিবর্তন, কোনো নির্দিষ্ট নেতা বা প্রধানমন্ত্রীর অপসারণ বা নতুন করে নির্বাচন? সবচেয়ে ভয়ের বিষয় হচ্ছে যদি জঙ্গি গোষ্ঠীরা নিজেদের স্বার্থ অর্জনে এই আন্দোলনকে ব্যবহার করে, তাহলে এই আন্দোলন ভয়াবহ সহিংসতায় রুপ নিতে পারে।

বিশেষজ্ঞ ওমার আল নিদায়িই ইরাক সরকারের খুঁতগুলো তুলে ধরেন। সুশাসন প্রতিষ্ঠা, দুর্নীতি রোধ, এবং মেধা ভিত্তিতে সম অধিকার প্রতিষ্ঠা। তিনি বলেন, এই ব্যর্থতা ইরানের সঙ্গে উত্তেজনা বৃদ্ধির আরেকটি কারণ।

রেনাড মানসুর বলেন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা সাম্প্রদায়িকতার অজুহাত দেখাতে পারবেন না কারণ আন্দোলনকারীরা নেতাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে। তাদের দেশে ইরানের হস্তক্ষেপ বন্ধের দাবী জানাচ্ছে তারা।

রেনাড বলেন,আন্দোলনকারীরা তাদের নেতাদের প্রত্যাখ্যান করছে। তাদের স্লোগানেই তারা বলছে যে ধর্মের কারণেই তারা আমাদের সমর্থন হারিয়েছে। ইরান বিরোধী মনোভাব লক্ষ্য করা যায়। তাদের কাছে ইরান একটি দখল বাহিনী। যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে তাদের যে ধরণের মনোভাব ছিল একই মনোভাব ইরানের বিরুদ্ধে। তারা স্বচক্ষে দেখতে পাচ্ছে ইরান ইরাকের সরকার ভাগ্য নির্ধারণ করে দিচ্ছে। আর সে জন্যই তারা স্লোগান দিচ্ছে ‘ইরান বের হও’।

বর্তমানের আন্দোলনে প্রচুর পরিমাণে অস্ত্র সহ নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে যা আগের আন্দোলনগুলোতে দেখা যায়নি। আন্দোলনে বেশ কিছু কর্মীদের হত্যার দায় থেকে মুক্ত করা তদন্ত আরও উত্তেজিত করে তুলেছে আন্দোলনকারীদের।
সূত্র:ভিওএ

আজকের বাজার/লুৎফর রহমান