উৎপাদন দ্বিগুণ করতে চায় এসকোয়ার নিট কম্পোজিট

ময়মনসিংহের ভালুকায় নতুন প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বার্ষিক গড় উৎপাদন ক্ষমতা দ্বিগুণ হবে বলে মনে করছে এসকোয়ার নিট কম্পোজিট। বুকবিল্ডিং পদ্ধতিতে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে কোম্পানিটি পুঁজিবাজার থেকে ১৫০ কোটি টাকা তুলতে চায়।

কোম্পানি সূত্রে জানা গেছে, এই অর্থের ৯৬ ভাগ ব্যবহার করা হবে ব্যবসা সম্প্রসারণে। এ টাকায় কোম্পানিটি নতুন ভবন নির্মাণ, ডায়িং ও ওয়াশিং প্ল্যান্টের জন্য যন্ত্রপাতি কিনবে।

২৬ আগষ্ট শনিবার নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুরে কারখানা পরিদর্শনকালে কোম্পানির কর্তৃপক্ষ এসব তথ্য জানান।

এসময় কোম্পানির প্রধান অর্থ কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বর্তমানে কোম্পানির বার্ষিক টার্নওভার প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। নতুন প্রকল্পে পুরোদমে উৎপাদনে গেলে এর পরিমাণ ১২০০ কোটিতে পৌঁছবে। যদিও কোম্পানির উৎপাদন ক্ষমতার প্রায় ৭৪ শতাংশ ব্যবহার সম্ভব হচ্ছে।

ভালুকায় পরিবেশবান্ধব কারখানা তৈরি করতে এসকোয়ার নিট কম্পোজিটের ব্যয় হচ্ছে ৫৭৬ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। এরমধ্যে পুঁজিবাজার থেকে আসবে ১৫০ কোটি টাকা। আর বিশ্বব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশনসহ (আইএফসি) বিভিন্ন উৎস থেকে ৩৪৬ কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হবে। যা নতুন কারখানার যন্ত্রপাতি আমদানি ও চলতি মূলধনে ব্যয় হবে।

প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কামাল মুনাসিংহে বলেন, বাংলাদেশ ২০২১ সালের মধ্যে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ৫০ বিলিয়ন (৮% মার্কেট শেয়ার) ডলারের যে লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে; আমরা তাতে ভুমিকা রাখতে চাই।

তিনি বলেন, বর্তমানে বিশ্বে তৈরি পোশাকের বাজার ৪৫০ বিলিয়নের। যা ২০২১ সালে বেড়ে দাঁড়াবে ৬৫০ বিলিয়নে। এখন বিশ্বে তৈরি পোশাকের বাজার ৫ শতাংশ দখলে রয়েছে বাংলাদেশের। আগামীতে বাংলাদেশ মার্কেট শেয়ার দ্রুত বাড়বে এবং নতুন বাজার সৃষ্টি হবে বলে মনে করেন তিনি।

পুঁজিবাজার থেকে সংগৃহীত অর্থের মধ্যে ভবন নির্মাণে ব্যয় করা হবে ১০০ কোটি ৪২ লাখ টাকা। নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর এবং ময়মনসিংহের ভালুকায় এ ভবন নির্মিত হবে। কোম্পানিটির কাঁচপুর প্রকল্পের জন্য ডায়িং মেশিনারিজ কিনতে খরচ হবে ২১ কোটি ২৩ লাখ ১৯ হাজার টাকা। একইসঙ্গে কাঁচপুরে কেনা হবে ওয়াশিং প্লান মেশিনারিজ। যার জন্য ব্যয় হবে ২১ কোটি ৯০ লাখ ৭৬ হাজার টাকা। আর আইপিও বাবদ খরচ করা হবে ৬ কোটি ৪৩ লাখ ৮৮ হাজার টাকা।

এসকোয়ার নিট কম্পোজিটের প্রতিটি শেয়ারের অভিহিত মূল্য ১০ টাকা। ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কোম্পানির অনুমোদিত মূলধন ছিল ২০০ কোটি টাকা। আর পরিশোধিত মূলধন ছিল ১০০ কোটি টাকা।

২০১৬ সালের ১ জুলাই থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় তথা হিসাব বছরের প্রথম ৬ মাসে কোম্পানির শেয়ার প্রতি আয় বা ইপিএস হয়েছে ১ টাকা ৫৫ পয়সা। আলোচ্য বছরে কর পরবর্তী মুনাফা হয়েছে ১৫ কোটি ৫৪ লাখ ৬৩ হাজার টাকা। ৩১ ডিসেম্বর তারিখে পুনর্মূল্যায়ন পরবর্তী শেয়ার প্রতি সম্পদ মূল্য (এনএভি) ছিল ৪৪ টাকা ২৬ পয়সা। আর পুনর্মূল্যায়ন ব্যতিত এনএভি ২৪ টাকা ৪০ পয়সা।

এসকোয়ার নিট কম্পোজিট ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। কোম্পানিটিতে নিটিং, প্রিন্টিং, এমব্রয়ডায়রি, লন্ড্রি ও গার্মেন্টস ইউনিট রয়েছে।

এসময় কোম্পানি সচিব সাইদুর রহমান, আর্থিক উপদেষ্টা মিসবাহ উদ্দীনসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সাংবাদিকদের করা বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।

আজকের বাজার:এলকে/এলকে/ ২৬ আগষ্ট ২০১৭