এখনও উদ্ধার হয়নি রিজার্ভ চুরির ৬ কোটি ৬৩ লাখ ডলার

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে চুরি হওয়া ১০ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলারের মধ্যে ৩ কোটি ৪৬ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার উদ্ধার করা হয়েছে। চুরি যাওয়া আরও ৬ কোটি ৬৩ লাখ ৭০ হাজার মার্কিন ডলার এখনও উদ্ধার হয়নি।

সরকারি দলের সদস্য মো. আবদুল্লাহর এক প্রশ্নের জবাবে ২০ জুন মঙ্গলবার জাতীয় সংসদকে এই তথ্য জানান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক নিউইয়ক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির অর্থ থেকে ২ কোটি মার্কিন ডলার শ্রীলঙ্কায় পাঠানো হয়েছিল। সেই অর্থ উদ্ধারের পর আবারও ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক নিউইয়র্কে ফেরত দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ফিলিপাইনে পাঠানো ৮ কোটি ১০ লাখ ডলারের মধ্যে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৪৬ লাখ ৩০ মিলিয়ন ডলার ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক নিউইয়র্কের বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে জমা হয়েছে।

আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ফিলিপাইনে পাঠানো অর্থের বাকি অংশ উদ্ধারে একযোগে কাজ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ ফাইন্যন্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ), অর্থ মন্ত্রণালয়, অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

অর্থমন্ত্রী বলেন, চুরি হওয়া সব অর্থ আইনি প্রক্রিয়ায় উদ্ধারের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রয়োজনীয় দলিলাদি সরবরাহ সাপেক্ষে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষ হিসেবে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় থেকে ফিলিপাইনের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস বরাবরে ‘পালারমো কনভেনশন’র আওতায় ‘মিউচ্যুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স (এমএলএ) রিকোয়েস্ট পাঠানো হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ফিলিপাইনের ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিস বাংলাদেশকে সার্বিক সহযোগিতা দিচ্ছে।

তিনি বলেন, এই চুরির ঘটনায় ইতোমধ্যে ফিলিপাইনের বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওযা হয়েছে। চুরি হওয়া বাকি অর্থ উদ্ধারে বর্তমানে ফিলিপাইনে আইনি উদ্যোগ চলমান রয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার সরিয়ে নেয় সাইবার অপরাধীরা। এর মধ্যে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং কর্পোরেশনের (আরসিবিসি) মাধ্যমে ফিলিপাইনের কয়েকটি ক্যাসিনোতে চলে যায়। ফিলিপাইনের সিনেটে এই ঘটনার তদন্ত হয়। এখন পর্যন্ত দেড় কোটি ডলার ফেরত পেয়েছে বাংলাদেশ।

সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, দেশের অভ্যন্তরের কোনো একটি চক্রের সহায়তায় রিজার্ভের অর্থ পাচার করেছে হ্যাকার গ্রুপ। এই ঘটনায় গত বছরের ১৫ মার্চ মতিঝিল থানায় মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২ (সংশোধনী ২০১৫)–এর ৪-সহ তথ্য ও প্রযুক্তি আইন-২০০৬–এর ৫৪ ধারায় ও ৩৭৯ ধারায় এ মামলা করা হয়। এখন পর্যন্ত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ১৩ বার দিন ধার্য করা হলেও ওই প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করতে পারেনি সিআইডি।

আজকের বাজার:এলকে/এলকে/ ২০ জুন ২০১৭