এখনও জ্বলছে রোহিঙ্গা গ্রামগুলো: অ্যামনেস্টি

মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিম অধ্যুষিত গ্রামগুলো গতকাল শুক্রবারও আগুন দিয়ে পোড়ানো হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ভিডিও ও স্যাটেলাইট ছবির ভিত্তিতে জানিয়েছে, গ্রামের ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। উড়তে দেখা গেছে ধোঁয়ার কুণ্ডলী।

অং সান সু চি জাতির ভাষণে এবং মায়ানমারের ভাইস প্রেসিডেন্ট জাতিসংঘে দাবি করলেও রাখাইনে যে এখনও রোহিঙ্গাদের বাড়ি পোড়ানো হচ্ছে, তার প্রমাণ তুলে ধরেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশাল।

স্থানীয়ভাবে পাওয়া ভিডিও এবং উপগ্রহ চিত্র বিশ্লেষণ করে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থাটি বলেছে, রোহিঙ্গারা ফিরলে যে থাকবে, সেই উপায়ও রাখছে না মিয়ানমারের সেনাবাহিনী।

অ্যামনেস্টি শুক্রবার তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানায়, রাখাইনে এখনও যে বাড়ি-ঘরে আগুন দেওয়া হচ্ছে, তার অন্তত তিনটি ভিডিও পেয়েছেন তারা।

২২ সেপ্টেম্বরের উপগ্রহ চিত্রেও রোহিঙ্গা গ্রামে জ্বালিয়ে দেওয়া ঘর থেকে ওড়া ধোঁয়া চিহ্নিত করার কথাও জানায় মানবাধিকার সংস্থাটি।

অ্যামনেস্টির ক্রাইসিস রেসপন্স পরিচালক তিরানা হাসান বলেন, এই প্রমাণ অং সান সু চির বক্তব্যের অসারতা তুলে ধরেছে। তিন সপ্তাহ পরেও আমরা দেখছি, রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতার অবসান হয়নি। রোহিঙ্গাদের বাড়ি-ঘর, গ্রাম জ্বলছেই। মনে হচ্ছে, রোহিঙ্গাদের ফেরার কোনো উপায়ই রাখা হচ্ছে না।

তিরানা হাসান আরও বলেন, মায়ানমারের জাতিগত নির্মূলের নিয়ে আর সন্দেহের অবকাশ নেই। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে অবিলম্বে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।

রাখাইনে এই জাতিগত নির্মূল অভিযান বন্ধে মিয়ানমারকে চাপ বাড়াতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহবান জানিয়েছে অ্যামনেস্টি।

বৃহস্পতিবার রাখাইনের হাপর ওয়াট চুয়াং নামে গ্রামের কাছে ধারণ করা ভিডিও এসেছে অ্যামনেস্টির কাছে। তাতে দেখা গেছে, গ্রামের কৃষিজমি, ঘরবাড়ি ও গাছপালা আগুনে পুড়ছে। স্থানীয় এক বাসিন্দা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালকে জানান, মায়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) এবং নজরদারি দলের সদস্যরা গতকাল শুক্রবার বিকেলের দিকে বিভিন্ন জায়গায় অগ্নিসংযোগ করে। একইদিন কিছু সময় পরে আবার অগ্নিসংযোগ করা হয় গ্রামের বিভিন্ন এলাকায়।

আজকের বাজার: এলকে / এলকে ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭